ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেলজিক কোচ টমের মিশন শুরু মঙ্গলবার

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১০ জুলাই ২০১৬

বেলজিক কোচ টমের মিশন শুরু মঙ্গলবার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কথাবার্তা পাকা হয়ে গিয়েছিল আগেই। এবার দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করার পালা। সেটাই করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নতুন বেলজিয়ান কোচ টম সেইন্টফিয়েট। ৪৩ বছর বয়সী টম আগামী মঙ্গলবার বিমানযোগে আসছেন ঢাকায়। এসেই শুরু করবেন তার বহুল প্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জিং মিশন। উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করে নিজের দেশে চলে যান টম। তারপর সেখান থেকেই তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হতে নিজের সম্মতির কথা ব্যক্ত করেন। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর ও ১১ অক্টোবর ভুটানের বিপক্ষে হোম এ্যান্ড এ্যাওয়ে ভিত্তিতে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্লে-অফ খেলবে বাংলাদেশ। আপাতত শুধু এই দুই ম্যাচের জন্যই নিয়োগ দেয়া হয়েছে টমকে। বাংলাদেশ যদি জিতে কোয়ালিফাই করে পরের পর্বে যেতে পারে, তাহলে টমের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করার কথা রয়েছে বাফুফের। তবে বাফুফে পড়েছে আরেক ঝামেলায়। ঢাকায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই টমের কাছে জাতীয় দল বুঝিয়ে দিতে তৈরি বাফুফে। এছাড়া আগামী ১৫ ও ১৭ জুলাই নেপালের বিপক্ষে ঢাকায় দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলারও পরিকল্পনা আছে তাদের। তবে গোল পাকিয়েছে পেশাদার লীগের ক্লাবগুলো। তারা খেলোয়াড়দের ছাড়তে রাজি হচ্ছে না! বাফুফে অবশ্য সমস্যা সমাধানে ক্লাবগুলোর সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, আগামী ২৪ জুলাই থেকে চট্টগ্রামে শুরু হতে হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ। ক্লাবগুলো তাই খেলোয়াড়দের নিয়ে বাড়তি ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না। পলের আগমনের সঙ্গে ইতি ঘটবে ডাচ্ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ অধ্যায়ের। ২০১৩ সালের জুন থেকে একাধিক মেয়াদে তিনি ছিলেন মামুনুলদের কোচ। তবে গত মাসে এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্লে-অফ ম্যাচের প্রথম পর্বে তাজিকিস্তানের কাছে দুশানবেতে ৫-০ ও ঢাকায় ১-০ গোলে হারের পর তাকে নিয়ে ভিন্ন চিন্তা-ভাবনা করা শুরু করে বাফুফে। ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ মানি গেম শোতে যিনি প্রতিযোগী, তার জন্য একটি সংরক্ষিত ‘হট সিট’ থাকে। তেমনি যে কোন জাতীয় ফুটবল দলের কোচের জন্যও একটি অদৃশ্য ‘উষ্ণ কেদারা’ থাকে। এটা এমনই উষ্ণ যে, দলকে সাফল্য এনে না দিতে পারলে তাতে তিনি বসতে পারেন না। এমনই হট সিটে বসতে আগ্রহী বেলজিয়ামের টম সেইন্টফিয়েট। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে মামুনুলদের কোচ হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন গত জুনে। এ পর্যন্ত সাতটি জাতীয় দলের কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে টমের। এগুলো হলো : কাতার, নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ে, ইথিওপিয়া, ইয়েমেন, মালাউয়ি ও টোগো। এছাড়া নাইজেরিয়া দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবেও কাজ করেছেন এক বছর (২০১২)। এছাড়া বিভিন্ন দেশের ১৬টি ক্লাব দলের কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। তবে কোন দলের সঙ্গেই বেশিদিন কাজ করতে পারেননি স্বল্পমেয়াদে চুক্তির কারণে। এখানে লক্ষ্যণীয়Ñ তিনি কখনও ছাঁটাই হননি! ফুটবলার হিসেবে টম খেলেছেন ১৯৮৩-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত খেলেন ৫টি জুনিয়র ক্লাব দলে। এগুলো হলো : মোল স্পোর্ট (এট তার নিজ এলাকার ক্লাব), ওয়েজেল স্পোর্ট, এফসি লোমেলসে এসকে, এফসি ভারব্রোয়েড্রিং গিল ও ভিসি ওয়েস্টারলো। তারপর ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত খেলেন ৬টি সিনিয়র ক্লাবে। এগুলো হলো : স্টাডে লিউবেন, ওয়ার্টে ডুইভেলস্ ও-এইচ, কেএল ক্লাক্সভিক টু, টিভোরোইরার বোল্টফেলাগ ও বুম এফসি। সবগুলোই বেলজিয়ান ক্লাব। জাতীয় দলের হয়ে অবশ্য খেলা হয়নি তার। টমের একটি রেকর্ড আছে। বেলজিয়ামের ফুটবল ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে কম বয়সে (২৪) কোন ক্লাবের কোচ হন! কোচ হিসেবে তার সাফল্য হচ্ছে ২০০৫ সালে জার্মানির বিভি ক্লোপেনবার্গকে ম্যাকডোনাল্ডস কাপ জেতানো। এছাড়া ২০১২ সালে আফ্রিকান দল ইয়াং আফ্রিকানকে জেতান কাগামে ইন্টারক্লাব কাপের শিরোপা। বর্তমান টম টোগো জাতীয় ফুটবল দলের কোচ। চুক্তি আছে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অষ্টাদশ বিদেশী কোচ টম তার নতুন চ্যালেঞ্জিং মিশনে কতটা সফল হন।
×