ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নয়দিনের ছুটি শেষে অফিস, আদালত খুলছে আজ ॥ ফিরছে মানুষ

ফাঁকা রাজধানী আবার কর্মচঞ্চল হয়ে উঠছে

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১০ জুলাই ২০১৬

ফাঁকা রাজধানী আবার কর্মচঞ্চল হয়ে উঠছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঈদ শেষ; কিন্তু রাজধানী থেকে এখনও ঘরে ফিরছে মানুষ। সকাল থেকে রাত অবধি নৌ, সড়ক ও রেলপথে বাড়িফেরা মানুষের ভিড় লেগেই আছে। সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে রেলপথে। ছুটি শেষে আজ রবিবার প্রথম কার্যদিবস। খুলছে অফিস। তাই শনিবার দিনভর কর্মস্থলে ফিরেছেন অনেকে। সব মিলিয়ে ঢাকায় ফেরা ও ঘরে ফেরা মানুষের চাপ ছিল সমানতালে। যারা আছেন তাদের অনেকেই ভিড় জমাচ্ছেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। রাজধানীর সব বিনোদন কেন্দ্রে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজারও মানুষের উপস্থিতি। এদিকে গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনার পর রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তল্লাশি করে দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। টিকেট নেই সিনেমা হলগুলোতেও। যানজটমুক্ত রাজধানীতে রিক্সায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা। ঢাকায় ফিরতে সড়ক-মহাসড়কে যানজটের ভোগান্তি নেই। তবে বাড়তি ভাড়া ও টিকেট পেতে বিড়ম্বনার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। মোট ৯ দিনের টানা ছুটি শেষ হয়েছে শনিবার। আজ থেকেই শুরু হচ্ছে অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। তাই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। শনিবার সকাল থেকে মহাখালী, সায়েদাবাদ ও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে রাজধানীতে ফেরা মানুষের ভিড় দেখা গেছে। কমলাপুর রেলস্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ট্রেন সময়মতো স্টেশনে এসেছে। ছেড়েও গেছে সময়মতো। যাত্রীদের কোন ভোগান্তি না হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের একদিন পর থেকে যাত্রী চাপ বেড়েছে। এখন বাড়ি ফিরছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। রাস্তায় যানজট নেই। তাই নেত্রকোনা থেকে মাত্র তিন ঘণ্টারও কম সময়ে মহাখালী বাস টার্মিনালে এসে পৌঁছান সজীব। তিনি জানান, ভোর থেকে নেত্রকোনা শাহজালাল বাস কাউন্টারে মানুষের ভিড়। নারী-পুরুষ মিলিয়ে দুই লাইনে টিকেট বিক্রি হয়। ২৫০ টাকার টিকেট ৪০০ টাকায় বিক্রির অভিযোগ করে তিনি বলেন, ঈদের আগে রাজধানী থেকে নেত্রকোনায় যেতে যাত্রীদের কাছ থেকে এই পরিবহন কোম্পানি বাড়তি ভাড়া আদায় করেছে। বাড়তি ভিড়ের কারণে টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় বাসে আসতে পারেননি পারভেজসহ তার পরিবার। পারভেজ জানান, টাঙ্গাইল বাস টার্মিনালে সকাল থেকে শত-শত মানুষের ভিড়। সব যাত্রীর গন্তব্য ঢাকা। তাই নিরুপায় হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মাইক্রো ভাড়া করে আসতে হয়েছে। যারা বাসে এসেছেন তারাও বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ করেছেন। সুনামগঞ্জ থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী সুদীপ জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় সুনামগঞ্জ থেকে শ্যামলী পরিবহনের এসি বাসটি ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে। কাউন্টারে ছিল যাত্রীদের বাড়তি চাপ। ৮০০ টাকা ভাড়া নেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ বাসে ভাড়া ৫৫০ টাকা। এসি বাস সার্ভিসের কোন নিয়মনীতি না থাকায় যাত্রীদের পকেট কেটে ৮০০ টাকা করে নেয়া হয়েছে। এমনিতেই এ রুটে ৫৫০ টাকা ভাড়া বেশি বলেও অভিযোগ করেন যাত্রীরা। সিরাজগঞ্জ থেকে ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজে আসা যাত্রী দিদার জানালেন, টিকেটের চাহিদা বেশি থাকায় আড়াই শ’ টাকার ভাড়া ৪৫০ টাকা নিয়েছে। তিনি বলেন, নিরুপায় হয়ে যাত্রীরা বেশি ভাড়ায় আসতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই বাড়তি ভাড়া নেয়ার প্রতিবাদ করলেও কাজ হয়নি। কর্মস্থলে ফিরতে মহাসড়কে যানজটের কোন ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন না পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা। কারণ যানজট নিরসনে ঈদের আগের ৩ দিন ও পরের ৩ দিন সব মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। সদরঘাট দিয়ে দেশের ৪১ রুটের মানুষ শনিবার থেকেই ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। এদিন বিকেল পর্যন্ত সদরঘাটে ভিড়েছে প্রায় শতাধিক লঞ্চ; ছেড়ে যাওয়া লঞ্চের সংখ্যা ৩০টি। বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক দিনেশ কুমার সাহা বলেন, শনিবার রাত থেকে যাত্রীর চাপ বাড়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই সদরঘাটে যাত্রী নামিয়ে দিয়েই অনেক লঞ্চ যাত্রী নিয়ে চলে যাচ্ছে অপরপ্রান্ত থেকে যাত্রী আনতে। যাত্রীর চাপ কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেভাবে এখনও মানুষ আসতে শুরু করেনি; শনিবার রাত থেকে চাপ বাড়তে পারে।
×