ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মোস্তাফা জব্বার

একুশ শতক ॥ একাত্তরের শক্তিতেই জিতব

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১০ জুলাই ২০১৬

একুশ শতক ॥ একাত্তরের শক্তিতেই জিতব

গুলশান হামলার পর বাঙালী ঈদ করেছে। ঈদের দিনেও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বাঙালীকে ঘরে বসিয়ে রাখতে পারেনি। পারেনি ভয় দেখাতে। সারাদেশের মানুষ সকল ভয় আর শঙ্কাকে কাটিয়ে আনন্দে উৎসবে সময় কাটিয়েছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুরো জাতি। যেখানে মনে করা হয়েছিল যে, এই মর্মন্তুদ ঘটনার পর থিম পার্ক থেকে পর্যটন কেন্দ্র পর্যন্ত সব তালাবদ্ধ হয়েছিল সেখানে ভয়কে জয় করে কোলের শিশুদের নিয়েও বাঙালীরা দেশের প্রতি ধূলিকণা চষে বেড়িয়েছে। ১ জুলাই থেকে ৮ জুলাই অবধি পুরো দেশের সাধারণ মানুষকে দেখে দেখে মনে পড়েছে এই বাঙালী জাতি একাত্তরেরই উত্তরাধিকারী। পাকিস্তানী হায়েনাদের আক্রমণ যেমন করে আমাদেরকে পরাস্ত করতে পারেনি তেমনি তাদের কুলাঙ্গাররা বাঙালীর সাহসিকতাকে পরাস্ত করতে পারেনি। শুরুতে অবশ্য আমরা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। আমার নিজের পরিবারের কথাই বলি। গুলশানের রেস্তরাঁয় যখন জিম্মি আটকের ঘটনাটি ঘটে তখন ঈদ একেবারে দোরগোড়ায় ছিল। নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় এর আগে ছোট মেয়েটার জন্য কিছু কেনা হয়ে ওঠেনি। এক সময়ে ঈদে অনেক কেনাকাটা করতাম। ইদানীং হয়ে ওঠে না। তবে সব বাবারই ইচ্ছা থাকে ঈদে সন্তানকে কিছু উপহার দেয়ার। আমারও আছে। প্রতি বছরই আর কারও জন্য কিছু না কিনলেও ছোট মেয়ে তন্বীর জন্য তো কিছু না কিছু কিনি। ওর ইচ্ছা হলে অন্যদের জন্যও কেনা হয়। সেজন্য কেনাকাটায় ওকে সঙ্গে নিতে হয়। মূলত কেনাকাটা সে-ই করে। আমি কেবল টাকা গুনি। বড় মেয়ের জন্য ওকে নিয়ে কেনার সুযোগ থাকে না- কারণ সে বাইরে থাকে। ছেলেটারও একই দশা। সেও বাইরে থাকে। কেনাকাটার ভরসা তাই কেবল ছোট মেয়েটা। সেজন্য আগের রাতের জিম্মি ঘটনাকে পাশ কাটিয়ে শনিবার বিকেলে অফিসে থেকেই মেয়েটাকে ফোন করে কেনাকাটার জন্য রেডি হতে বললাম। ওর অফিস বন্ধ তাই সময় নিয়ে তার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ফোনের অন্যপ্রান্ত থেকে আমার মেয়ের প্রতিক্রিয়া শুনে আমি স্তম্ভিত হয়েছিলাম। ‘এটি কোন বাংলাদেশ বাবা। এই বাংলাদেশ তৈরি করতেই তোমরা যুদ্ধ করেছিলে?’ কিসের ঈদের কাপড়, ওর প্রশ্নের জবাব তো আমি দিতে পারিনি। সত্যিই তো পাকিস্তান নামক একটি ইসলামী রাষ্ট্রকে ভেঙ্গে বাংলাদেশ নামক বাঙালীদের একটি রাষ্ট্র তো ধর্মের নামে খুনের জন্য আমরা তৈরি করিনি। তবুও কেন ঘটছে এই ঘটনা? আমি সত্যিই জানি না গুলশান ঘটনার পর আমার মেয়ের মতো কত লাখ লাখ মেয়ে এবারের ঈদে কাপড় কিনেনি। অন্যদিকে আমি আমার বড় মেয়ের জিজ্ঞাসারও জবাব দিতে পারিনি। আমার বড় মেয়ে রিনকি (সাবরিনা) থাকে নাইজিরিয়ায়। পেশায় ডাক্তার। এমএসএফের সঙ্গে কাজ করে। এই সংস্থাটি দুনিয়ার তাবত বিপদসঙ্কুল এলাকায় কাজ করে। সেই সুবাদে আফগানিস্তানে ছিল সে। ছিল সিরিয়াতে। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, যুদ্ধবিগ্রহ কিছুই দেখতে বাকি নেই। বোমা আর গোলাগুলির মাঝেই স্বাস্থ্য সহায়তা নিয়ে তার রাত দিন কাটে। সন্ত্রাসী আর জঙ্গীদের সঙ্গে তার কখনও কখনও আলোচনাও করতে হয়। আফগানিস্তান থেকে বাংলাদেশ আসার পথে একবার খাইবার পাসে গোলাগুলিতে আটকে পড়েছিল। এখন থাকে নাইজিরিয়ায় জঙ্গীগোষ্ঠী বোকো হারামের দেশে। কদিন আগে দেশে এসেছিল। বলেছিল বোকো হারামের নির্মমতার কথা। ওরা নাকি স্কুলে পড়তে গেলে, হাসপাতালে টিকা নিলে বা চিকিৎসা গ্রহণ করলে গ্রামকে গ্রাম উজাড় করে মানুষ মেরে ফেলে। মেয়েরা টিকা নিতে আসতে পারে কেবল যদি স্বামীর অনুমতি পাওয়া যায়। তার ভাষায় সেই তুলনায় বাংলাদেশ স্বর্গরাজ্য। বিশেষত আমাদের দেশের মেয়েদের লেখাপড়া ও কর্মজীবন তাকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করতে দেয়। সেই মেয়েও ঢাকার জিম্মি ঘটনায় বিস্মিত হয়েছে। নাইজিরিয়া থেকে ফোন করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানতে চেয়েছিল, এমন কেন হলো আব্বু? কেন ২০/২৫ বছরের শিক্ষিত তরুণরা বিনা কারণে নিরীহ মানুষগুলোকে মেরে ফেলল? সেও মানতে পারছে না তার বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। নিজের দেশটা নিয়ে তার অনেক গর্ব ছিল। পাকিস্তানীদের মুখের ওপর বলত যে বাংলাদেশ শিক্ষিতদের দেশ-মূর্খদের নয়। সে সবাইকে বলত, আমরা মুসলমানপ্রধান দেশ বটে- তবে আফগানিস্তান বা পাকিস্তান নই। মেয়ের গলাটা ভিজে গেল, ‘আব্বু এখন আর সেই গর্বটা কি করতে পারব না।’ সেদিন মেয়েকে জবাব দিতে পারিনি। তবে এখন আমি আমার মেয়েকে বলতে পারি- তুমি বাংলাদেশটা দেখে যাও- আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি এবং সন্ত্রাসীরা জিততে পারেনি। বাঙালী ভীত নয়। ওরা একাত্তরের শক্তি নিয়েই রুখে দাঁড়িয়েছে। ভাবতে হচ্ছে ভীষণ বিপরীত স্রোতের কথা। গুলশানে যারা নিরীহ মানুষ মেরেছে একাত্তরে এই বয়সের তরুণরা স্বাধীন দেশ গড়ে তুলতে অস্ত্র হাতে নিয়েছিল। স্বাধীনতার সাড়ে চার দশক পর তার বিপরীত দৃষ্টান্ত কেন দেখছি আমরা? ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী এই জঙ্গীবাদের শেকড় খুঁজে বের করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। সেটি অবশ্যই করতে হবে। কিন্তু আমার মনে হয় কেবল জঙ্গীবাদের শেকড় সন্ধান করলেই হবে না, আমাদের জাতীয়তা ও রাষ্ট্রের ভিত যে শেকড়ে সেটিও সুস্পষ্ট করতে হবে। আমরা বরং এই কথাটি খুব স্পষ্ট করেই বলতে পারি যে জঙ্গীবাদের যেমন রাজনৈতিক শেকড় আছে তেমনি আছে ধর্মীয় ও শিক্ষার। কেবল প্রশাসনিকভাবে এই শেকড় উপড়ানো যাবে না। একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং শিক্ষাব্যবস্থার আমূল রূপান্তর ছাড়া জঙ্গীবাদের শেকড় উপড়ানো যাবে না এবং রাষ্ট্রের শেকড় মজবুত করা যাবে না। আমরা যদি বাংলাদেশকে ইসলামী রিপাবলিক বানাবার বিষয়টিকে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে প্রশ্রয় দিই তবেই দেশটি ততো বিপন্ন হবে। গুলশানের ঘটনার এক সপ্তাহের মাঝেই এই বিষয়টি নিশ্চিত করা গেছে যে বাংলাদেশের জঙ্গীবাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক থাকলেও আমাদের দেশের জঙ্গীরা স্থানীয়। সাধারণভাবে তার পরও প্রশ্ন দাঁড়াবে শেকড়টা কোথায় এবং তাকে সজীব করতে হবে কেমন করে? আমি নিজে মনে করি ১ জুলাই’১৬ রাতের দুর্ঘটনাটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত না হলেও এই মাত্রার জঙ্গীবাদের সঙ্গে এই দেশ সরাসরি পরিচিত নয়। দূরদেশের জিম্মি কর্মকা- মিডিয়াতে দেখে আমরা মতামত দিয়েছি। ভারতীয় হাইকমিশনে জিম্মি নাটক ও একটি প্ল্যান হাইজ্যাকের ঘটনা ছাড়া আর কোন হাইজ্যাক ঘটনাও আমার স্মৃতিতে নেই। তবে সেই জন্ম থেকেই সামরিক অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক হত্যা, গুম, খুন, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ দেখে আসছি। ইদানীং ব্লগার, পুরোহিত, যাজক মারার বাইরে মিতু-তনু হত্যার মতো ইত্যাদি ঘটনাও ঘটছে। শোলাকিয়ার হামলাচেষ্টা একেবারেই নতুন। এইসব হামলা-খুন-গুপ্তহত্যা চরম উদ্বেগের হলেও অন্যদেশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত মডারেট মুসলিম দেশের পরিচয়টা আমরা দিতে পারতাম। ধারণা করা হতো ১৬ কোটি মানুষের দেশে গুপ্তহত্যা ঠেকানো যথেষ্ট কষ্টকর। এরই মাঝে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের পরম সক্ষমতাও দেখিয়েছে। বিশেষত এই সরকারের আমলে বিডিআর বিদ্রোহ দমন, হেফাজত দমন ও অন্যান্য জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতার প্রশংসা করতেই হবে। শোলাকিয়ার ঘটনা মোকাবেলার জন্য আমরা গর্ব করতে পারি। আমাদের মতো জঙ্গী আক্রান্ত দেশে যতটা স্বাভাবিক জীবন যাপিত হচ্ছিল তাতে উদ্বেগ থাকলেও চরম ভয়ঙ্কর কিছু ছিল না। যদিও বারবার আমরা এদের হাতে আক্রান্ত হয়েছি-তথাপি একটি বিশেষ কারণ আমরা খুঁজে পেতাম যে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে গিয়ে আমরা একটু বাড়তি চাপে পড়েছি। এসবের পেছনে জামায়াত-বিএনপি এবং একাত্তরের পরাজিত অন্য দেশদ্রোহীরা যুক্ত আছে সেটি সবাই জানে। যাহোক, এবার আসা যাক জিম্মি ঘটনায়। এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ার কল্যাণে বিশ্ববাসী ঢাকার গুলশানের রেস্তরাঁ জিম্মিকাহিনী জেনে গেছে। বাংলাদেশের দুই কোটির ওপরে ফেসবুক ব্যবহারকারী থাকায় ছবি-ভিডিও এবং অন্যান্য খবর দিয়ে একেকজন একেকভাবে পুরো ঘটনাটিকে ব্যাখ্যা করে চলেছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা বিরামহীন নজর রেখেও আমি বুঝে উঠতে পারিনি কিভাবে পুরো বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করা যায়। কোটি কোটি মানুষের অন্তত লাখো লাখো প্রশ্ন। কেন এই সময়েই কূটনীতিক এলাকায় এমন একটি জিম্মি প্রসঙ্গ। যে জঙ্গীরা মারা গেছে তারা দেশেরই মানুষ এবং উচ্চবিত্তের উচ্চশিক্ষিত আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণ। এমন নয় যে ওরা দরিদ্র-তাই বিপ্লব করতে চায়। ওরা ১৭ জন বিদেশীকে এবং ৩ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। কিন্তু এই খুনের উদ্দেশ্য কি সেটি ওরা নিজেরাও জানে না। আমি মনে করি আমাদের শেকড়ের সন্ধান করতে হবে। এটি অনেকের কাছে হোঁচট খাবার মতো মনে হতে পারে যে, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর বাংলাদেশের বড় সঙ্কটটি তৈরি হয় তার জাতীয়তা ও রাষ্ট্রীয় পরিচয় নিয়ে। দেশের নতুন প্রজন্ম যারা শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ তারা ’৭৫-এর পর জন্ম নিয়েছে বলে বাংলাদেশের আত্মপরিচয় জানে না। কেন পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ তৈরি হয়েছে সেটিও দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। বাস্তবতা হচ্ছে আমরা স্বাধীনতার আগেও একটি মুসলিম প্রধান দেশ ছিলাম। কিন্তু তখন আমরা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। অথচ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন এখন সবচেয়ে দুর্বল। আওয়ামী লীগের রাজনীতির একটি বড় দুর্বলতা হচ্ছে ছাত্রলীগ বা যুবলীগকে বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসে তেমনভাবে জানতে দেয়া হচ্ছে না যা তাদের আত্মিক শক্তি হতে পারে। রাজনৈতিক অনুশীলন নেই বললেই চলে। স্বাধীনতার আগে দেশে বাম রাজনীতির প্রভাব প্রবল ছিল। এমনকি ছাত্রলীগ-যুবলীগে-শ্রমিক লীগে প্রগতিশীল রাজনীতির ব্যাপক প্রভাব ছিল। সেই রাজনীতির ধারাটি যেমনি আওয়ামী ঘরানাতে দুর্বল হয়েছে তেমনি স্বাধীনতার আগে যারা বাম রাজনীতি করতেন তারা এখন বিএনপি জামায়াতের দোসর হয়ে পড়েছেন। গুলশানের ঘটনায় এটিও স্পষ্ট হয়েছে যে, দেশের ক্যান্সার আক্রান্ত খাতটির নাম শিক্ষা। এক সময় মাদ্রাসাগুলোকে জঙ্গীবাদের আখড়া মনে করা হলেও হালে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জঙ্গী উৎপাদনের সেরা কারখানায় পরিণত হয়েছে। ইংরেজী মাধ্যম স্কুলগুলো কেবল যে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য পাঠ করায় না তাই নয়, তারা দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসও পড়ায় না। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই শিক্ষার্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশের মাটি আর মানুষের কোন সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে ডিজিটাল মিডিয়ার অপপ্রচারে তারা এক ধরনের রোমান্টিকতায় আক্রান্ত হয়ে জঙ্গীতে রূপান্তরিত হচ্ছে। গুলশানের ঘটনা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আমি মনে করি দেশটিকে সম্পূর্ণভাবে ’৭২-এর সংবিধানে প্রতিস্থাপিত করতে হবে এবং এদেশে যারাই রাজনীতি করবেন তাদেরকে সেই সংবিধানের সীমানাতেই রাজনীতি করতে হবে। আমি মনে করি সতেরো রকমের শিক্ষাকে একটি শিক্ষাধারায় পরিণত করতে হবে। সকলের শিক্ষার বিষয়বস্তু এক হবে তবে বিশেষায়িত বা ধর্মীয় শিক্ষা বাড়তি হিসেবে প্রচলিত থাকতে পারে। দেশের সকল শিক্ষার্থীকে মৌলিক পাঠক্রম, পাঠ্যপুস্তক ও একই পরীক্ষা পদ্ধতিতে অংশ নিতে হবে। শিক্ষার খিচুড়ি পাকানো বন্ধ করতে হবে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বা বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গীবাদের সামান্য লক্ষ্মণ দেখা দিলে সেটি বন্ধ করে দিতে হবে। অন্যদিকে বাঙালী সংস্কৃতির বেগবান ধারাকে প্রতিটি নাগরিকের কাছে পৌঁছানোর সামগ্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমি খুব দৃঢ়ভাবে মনে করি সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছাড়া জঙ্গীবাদ প্রতিহত করা যাবে না। যে জাতি তার নিজের শেকড় জানে না তাকে যে কেউ অন্য কিছু দিয়ে প্রভাবিত করতে পারে। আসুন আমাদের নিজের শেকড়টা চিনি। এদেশের প্রতিটি নাগরিককে, শিশু থেকে প্রবীণ সকলকেই; বাঙালী জাতীয়তাবাদ, বাংলা ভাষা থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মকথা এবং একাত্তরের লড়াইসহ মুজিবনগরের স্বাধীনতা ঘোষণাসহ ’৭২-এর সংবিধানকে জানতে হবে। আমি খুব নিশ্চিতভাবেই বলতে চাই যে, সন্ত্রাসী-জঙ্গীরা একাত্তরের পরাজিত শক্তি। আমরাও একাত্তরের শক্তিতেই তাদের বিরুদ্ধে জিতব। ঢাকা, ৮ জুলাই, ২০১৬ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক ॥ [email protected] w.bijoyekushe.net, ww w.bijoydigital.com
×