ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চকবাজারে নানি ও নাতনিকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৫ জুলাই ২০১৬

চকবাজারে নানি ও নাতনিকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুপিয়ে মানুষ মারা যেন একটা ফ্যাশন হয়ে গেছে। জঙ্গীদের অনুকরণে এখন সাধারণ অপরাধীরাও কুপিয়ে খুন করার প্রতি আসক্ত। গুলশান হত্যাকা-ের পর রাজধানীর চকবাজার ইসলামবাগে বাসায় ঢুকে দিন-দুপুরে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক ব্যক্তি। সোমবার দুপুরে এ হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন বেগম (৪৬) ও বর্ণা আক্তার (২০)। তারা সম্পর্কে নানি-নাতনি। এ সময় আহত হয়েছেন বেগমের মেয়ে সীমা আক্তার (৩৫)। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত বর্ণার স্বামী সোহাগ জানান, দুপুর আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে ঘাতক জীবন ইসলামবাগের ছাতা মসজিদের গলির ভাড়া বাসায় ঢুকে ওই তিন নারীকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে বেগম এবং ঢামেক হাসপাতালে বর্ণা আক্তার মারা যান। সোহাগ জানান, এক বছর আগে বেগমের মেয়ে সুমি এক ছেলে সানি (১) ও মেয়ে জুঁইকে (৯) রেখে মারা যান। এর পর থেকে ছেলে মেয়ে নানির কাছে লালন পালন হচ্ছে। এ নিয়ে সুমির স্বামী জীবনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সোমবার দুপুরে জীবন ওই বাসায় হানা দিয়ে তার শাশুড়ি, শাশুড়ির মেয়ে ও নাতনিকে কুপিয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে। চকবাজার থানার পুলিশ জানায়, সুমি মারা যাবার পর তার নাবালক সন্তান ছেলে সানি ও মেয়ে জুঁইকে নিজের কাছে রেখে লালন পালন করতে চেয়েছিলেন পিতা জীবন। এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় শাশুড়ি ও জীবনের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত নির্দেশ প্রদান করেন, আঠার বছর না হওয়া পর্যন্ত সানি ও জুঁই নানি বেগমের হেফাজতেই থাকতে পারবে। জানা যায়, এরপর থেকেই দুই নাতিকে নিজের কাছে রেখে লালন পালন করছিলেন বেগম। এতে প্রচ- ক্ষুব্ধ হন জীবন। তিনি ছেলে মেয়ে ফেরত নেয়ার জন্য নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। এ অবস্থায় সোমবার দুপুরে বেগমের বাসায় গিয়ে হাজির হন জীবন। এ সময় সেখানে কোন পুরুষ মানুষ ছিলেন না। ছেলে মেয়েকে ফিরিয়ে নিতে চাইলে শাশুড়ি বেগম, দুই শ্যালিকা সীমা আক্তার ও বর্ণা আক্তারের সঙ্গে তর্ক বিরোধ দেখা দেয়। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে জীবন হাতের কাছেই থাকা বটি দা নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে তাদের। এতে তিনজনই মারাত্মক আহত হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান বেগম, হাসপাতালে মারা যান বর্ণা আক্তার। চিকিৎসাধীন রয়েছেন সীমা আক্তার। নিহতদের পারিবারিক সূত্র জানায়, জীবন মাদকাসক্ত। সে প্রায়ই বাসায় এসে এ ধরনের উৎপাত করত। সোমবারও একই কা- ঘটিয়ে চরমে নিয়ে যায়। সে জোর করেই নিজের ছেলে মেয়েকে ফেরত নিতে চাইলে শাশুড়ি ও শ্যালিকাদ্বয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হাতে বটি নিয়ে সবাইকে এলোপাতাড়ি কুপাতে শুরু করে। পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ ঘাতক জীবনকে ধরার জন্য চেষ্টা করছে।
×