ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাবি উপাচার্যের বাসার গেইটে তালা, পদত্যাগ দাবি

প্রকাশিত: ০২:৫৫, ১ জুলাই ২০১৬

ঢাবি উপাচার্যের বাসার গেইটে তালা, পদত্যাগ দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তাঁরা ফটকের সামনে অবস্থান করছেন। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে দ্বিতীয় দফার বিক্ষোভে তাঁরা এ পদত্যাগের দাবি জানান। সন্ধ্যার দিকে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনে ঢোকার ফটকে তালা দিয়ে দেন। ছাত্রলীগের দাবি, আজ রাত আটটার মধ্যে উপাচার্য পদত্যাগ না করলে আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করবেন তাঁরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকায় জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করা নিয়ে এ বিক্ষোভের শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সকালে টিএসসিতে স্মরণিকাটি প্রকাশ্যে এলে প্রতিবাদের মুখে সেটি বাজেয়াপ্তের পাশাপাশি প্রকাশনার দায়িত্বে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুপুরে ওই ঘোষণা দেওয়ার পর উপাচার্য আরেফিনের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দুপুরের পর থেকে ভিসির বাংলোর সামনে চলে সমবেত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিকাল সাড়ে ৪টার পর ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভের মধ্যে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ভিসির বাংলো থেকে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ বের হওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বাইরের পরিস্থিতি দেখে বাংলোর কর্মচারীরা ফটকের ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। এর ১৫ মিনিট পরে ফটকের বাইরেও তালা লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। সার্বিক বিষযে প্রক্টর আমজাদ আলী বলেন, “বিক্ষোভকারী ছাত্রদের দাবি ছিল, রেজিস্ট্রারকে অপসারণ করতে হবে। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়, আমি তা বিক্ষোভকারীদের পড়ে শোনাই। “তারপরও কীভাবে কেন বিক্ষোভ হচ্ছে, ভিসির পদত্যাগ চাইছে, তা বুঝতে পারছি না।” বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় ‘স্মৃতি অম্লান’ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বর্ণনা দিতে গিয়ে জিয়াউর রহমান হলের ক্ষেত্রে জেনারেল জিয়াকে ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। ওই ক্রোড়পত্রের প্রকাশনার দায়িত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দ রেজাউর রহমান। সকালে টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আলোচনা সভায় স্মরণিকায় তথ্য বিকৃতির প্রতিবাদ উঠলে উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক তাৎক্ষণিকভাবে ওই স্মরণিকা বাজেয়াপ্ত করার ঘোষণা দেন। পরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ কর্মীরা বেলা ১২টা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে তার কার্যালয়ে তালাবন্ধ করে রাখে। পরে প্রক্টর গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতির পর বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “এটা বাইলাইন পাবলিকেশন ছিল। সেই প্রবন্ধের রচয়িতার ওপর দায় বর্তাবে। তাকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
×