ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও নিষেধাজ্ঞা মানছে না ফিলিং স্টেশন

অবাধে বিক্রি হচ্ছে গুচ্ছ সিলিন্ডারে গ্যাস

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১ জুলাই ২০১৬

অবাধে বিক্রি হচ্ছে গুচ্ছ সিলিন্ডারে গ্যাস

মাহমুদুল আলম নয়ন, বগুড়া ॥ সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে অবৈধভাবে রিফুয়েলিংয়ের জন্য সরবরাহ করা সিএনজি ভ্রাম্যমাণ বোমায় পরিণত হয়েছে। গভীর রাতে ট্রাক ও ভ্যানভর্তি গুচ্ছ সিলিন্ডারের মাধ্যমে সিএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। ভয়াবহ বিপজ্জনকভাবে অবৈধ গ্যাস সরবরাহের ফলে চরম ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। গুচ্ছ সিলিন্ডারে সিএনজি নেয়ার পর তা উপজেলা পর্যায় ছাড়াও বগুড়ার বাইরের জেলাগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে নিয়ে গিয়ে রিফুয়েলিংয়ের ব্যবসা চলছে। এতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি (পিজিসিএল) বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয় ইতোমধ্যে হাতেনাতে এ ধরনের কার্যক্রমের প্রমাণ পেয়েছে। জানমালের নিরাপত্তায় এ ধরনের গ্যাস সরবরাহ বন্ধের জন্য পিজিসিএল বগুড়া জেলা প্রশাসনের নিকট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার অনুরোধ ছাড়াও প্রত্যেক সিএনজি ফিলিং স্টেশন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে। সূত্র জানায়, বগুড়ায় পিজিসিএল’র আওতায় ১৮টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। বেশির ভাগ ফিলিং স্টেশন থকে অবৈধভাবে সিএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বগুড়ার কাহালু ও আদমদিঘী উপজেলা ছাড়াও জয়পুরহাট ও রংপুরে ঝুঁকিপূর্ণ রিফুয়েলিং ব্যবসা রয়েছে। এসব এলাকায় থ্রী হুইলার অটোরিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন এবং বিভিন্ন কারখানার জন্য বগুড়া থেকে ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে গ্যাস নেয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী যানবাহনে সংযুক্ত সিলিন্ডার ছাড়া অন্য বাহনে আনা সিলিন্ডার বা গুচ্ছ সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ অবৈধ। বিস্ফোরক পরিদফতর বিষয়টিকে জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে বলে পিজিসিএল জানায়। আর বগুড়ার সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গভীর রাতে এ ধরনের অবৈধ গ্যাস সরবরাহ চলছে অবাধে। এক একটি ভ্যান বা কাভার্ড ভ্যানে বিপজ্জনকভাবে শতাধিক সিলিন্ডার সাজিয়ে একটি চ্যানেলের মাধ্যমে সিএসজি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। বিপজ্জনকভাবে গ্যাস নেয়ার পর তা উপজেলা এবং পাশের জেলার যাবনবাহন এবং কানখানায় সরবরাহ ও সিলিন্ডারে রিফুয়েলিং করা হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। সূত্র জানায়, সিএনজি স্টেশনগুলো বিষয়টি অবৈধ জেনেও বাড়তি মুনাফার জন্য এ ধরনের কাজ করছে। চলতি সপ্তাহে পিজিসিএল বগুড়া আঞ্চালিক কার্যালয় থেকে মধ্য রাতে কয়েকটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে অভিযান চালান হয়। এ সময় টিএমএসএস ও দোয়েল ফিলিং সিএনজি স্টেশনে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে গুচ্ছ সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি ধরা পড়ে। এ সময় সেখানে একটি কাভার্ড ভ্যনের ভিতর একসঙ্গে ১২০টি গুচ্ছ সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করতে দখো গেছে। পিজিসিএল জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ফিলিং স্টেশন দু’টিকে সতর্ক করে দেয়ার পাশাপপাশি অঙ্গীকারনামা নেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্য সিএনজি স্টেশনগুলোকেও চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। পিজিসিএল সূত্র জানায়, বার বার সতর্ক দেয়ার পরেই সিএনজি সেস্টশনগুলো দুর্ঘটনা ও প্রালহানির ঝুঁকি নিয়ে গুচ্ছ সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করছে। এ ব্যাপারে টিএমএসএস ও দোয়েল সিএনজি পাম্পের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের নিষেধ ধাকলেও নজেলম্যানরা অর্থিক সুবিধার জন্য রাতে অবৈধভাবে গুচ্ছ সিলিন্ডারে গ্যাস দিচ্ছে। অপর দিকে পিজিসিএলের পক্ষ থেকে উর্র্ধতন কর্তপক্ষকে বিষয়টি অবগত এবং বগুড়া জেলা প্রশাসনের নিকট এ ব্যপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য অনুরোধ করে চলতি সপ্তাহে চিঠি দেয়া হয়েছে। পিজিসিএল বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী শৈলজা নন্দ বসাক জানিয়েছেন তারা এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
×