ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আর্জেন্টিনার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে আবারও শিরোপা চিলির

প্রকাশিত: ১৮:১৫, ২৭ জুন ২০১৬

আর্জেন্টিনার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে আবারও শিরোপা চিলির

অনলাইন ডেস্ক॥ লিওনেল মেসি ও আর্জেন্টিনার দুঃখের রাত কাটল না। এবার কোপা আমেরিকার ফাইনালে পেনাল্টি শুট আউটে মেসি বল মারলেন বাইরে। মূল্য দিতে হলো আর্জেন্টিনাকে। গত বছরের মতো এবারও আর্জেন্টিনাকে টাইব্রেকে হারিয়ে চিলি হলো চ্যাম্পিয়ন। ৪-২ গোলের জয়ে কোপা আমেরিকা শতাব্দী বরণ উৎসবের শিরোপা চিলির। খেলার নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় ছিল গোলশূন্য। নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে এটি ছিল আর্জেন্টিনার ২৩ বছরের কোপা জিততে না পারার দুঃখ ঘুচানোর দিন। সময় সোমবার বাংলাদেশের সকাল। ফেভারিটের মতোই ফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা। চিলিকে গ্রুপ পর্বেই হারিয়েছিল প্রথম ম্যাচে। কিন্তু গত কোপার রি-ম্যাচ যেন আদর্শই এক রি-ম্যাচ। গতবারও ১৪বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ফাইনালে টাইব্রেকে হেরেছিল। এবং প্রতিপক্ষ ছিল চিলি। এবারও একই ঘটনা। তিন বছরে টানা তিনটি বড় আসরের ফাইনালে হারল মেসির আর্জেন্টিনা। ২০১৪ বিশ্বকাপ, ২০১৫ কোপার পর আবার এবার। এবার মেসির পর দলের চতুর্থ শটটি মিস করেছেন বিগলিয়া। ক্লদিও ব্রাভো ওই শট ঠেকিয়ে দেওয়ার পরের শটে ফ্রান্সিসকো সিলভা গোল করলে শিরোপা উৎসবে মাতে চিলি। হতাশায় মুখ ঢাকেন মেসি। অথচ টাইব্রেকের শুরুটা ভিন্ন ইঙ্গিত দিয়েছিল। চিলির আরতুরো ভিদাল প্রথম শটটি নিলেন। আর্জেন্টিনার গোলকিপার সার্জিও রোমেরো শট ঠেকিয়ে দিলেন। রোমেরো হয়তো গত কোপার কষ্ট ভোলার চিত্র মনে মনে এঁকে ফেলেছিলেন। আর্জেন্টিনার প্রথম শট মেসির। নিজের ডান দিকে কোনাকুনি মারতে চাইলেন। গোলকিপার ব্রাভো বুঝতে পারেননি বলের নিশানা। মেসিরও হিসেবে ভুল হয়েছে। বাইরে দিয়ে চলে গেছে বল। মাথায় হাত দিয়ে ফিরলেন মেসি। এরপর পেনাল্টি শুট আউটের পুরোটা সময় নিদারুণ অস্বস্তিতে কাটালেন। আর চিলির উৎসব শুরু হলে কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মতো এসে বসে রইলেন ডাগআউটের বেঞ্চে। মাচেরানো, আগুয়েরো ঠিকই গোল করেছেন। আশা ছিল আর্জেন্টিনার। কিন্তু আর্জেন্টিনার শেষ সর্বনাশটা হলো বিগলিয়ার শট ব্রাভো রুখে দিলে। ফাইনালের প্রথমার্ধে দুই দলই ১০ জনের দলে পরিণত হয়। ৮২ হাজার দর্শকের সামনে দারুণ উত্তেজনার ম্যাচ সামলাতে রেফারিকে হিমশিম খেতে হয়েছে। ১৬ মিনিটে মেসিকে ফেলে দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন মার্সেলো দিয়াজ। ২১ মিনিটে আর্জেন্টিনার লিড নেওয়া উচিত ছিল। চিলির ডিফেন্সের ভুলে গঞ্জালো হিগুয়াইন বল পেলেন মোক্ষম জায়গায়। কিন্তু গোলকিপারের ওপর দিয়ে মারলেন। বিশ্বকাপ ও গত কোপায়ও এমন ম্যাচ জেতানোর সুযোগ মিস করেছেন হিগুয়াইন। সাত মিনিট পর দিয়াজ আবার মেসির ওপর চড়াও হলেন। রেফারি একটু সময় নিয়ে এই খেলোয়াড়কে মাঠ থেকে বের করে দিলেন। বিপদ চিলির। ৪০ মিনিটে মেসি প্রবল গতিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। চিলির বক্সে পড়লেন। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়রা রেফারির কাছে দাবি জানালেন। ডাইভিংয়ের জন্য কার্ড দেখে মেসির হাত পা বাঁধা পড়ে গেল! বিরতির দুই মিনিট আগে আরো বড় বিপদ আসে আর্জেন্টিনার। এবার ডিফেন্ডার কার্লোস রোহো লাল কার্ড দেখেন ভিদালকে ফাউল করে। দ্বিতীয়ার্ধেও রেফারি কার্ড দেখাতে কুণ্ঠিত হননি। হিগুয়াইনের জায়গায় আগুয়েরোকে নামানো হলে কিছুটা গতি বাড়ে আর্জেন্টিনার। কিন্তু ৮০ মিনিটে চিলির স্ট্রাইকার এদুয়ার্দো ভার্গাস গোলের সুযোগ পান। রোমেরো বাঁচিয়েছেন দলকে। ৮৪ মিনিটে আগুয়েরোর লক্ষ্য ঠিক থাকলে ভিন্ন ফল হতে পারত। শেষ সময়ের নাটকে রামিরো ফুনেস-মরি অসাধারণ ভাবে রুখেছেন আলেক্সিস সাঞ্চেজকে। অতিরিক্ত সময়ে যায় খেলা। ৯৮ মিনিটে চিলি একটি সুযোগ নষ্ট করে। এরপর আগুয়েরোর শট ঠেকান ব্রাভো। ঠিক গোলের সুযোগ আর পায়নি কোনো দল। খেলা গেছে পেনাল্টি শুট আউটে। যেখানে আবার চোখের জলে ভেসেছে আর্জেন্টিনা। শিরোপা ধরে রাখার উৎসবে মেতেছে চিলি।
×