ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদে ঘরে ফেরা

টিকেটের জন্য রেলস্টেশন বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে এখনও ছোটাছুটি

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৭ জুন ২০১৬

টিকেটের জন্য রেলস্টেশন বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে এখনও ছোটাছুটি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখনও টিকেটের পেছনেই ছুটছেন রাজধানীবাসী। রেলস্টেশন থেকে লঞ্চঘাট আর বাসস্ট্যান্ড সবখানে টিকেটপ্রত্যাশী মানুষের ভিড় বেড়েছে। রবিবার রাজধানীর কমলাপুর, সদরঘাট, গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস। অর্থাৎ ঈদের ছয় থেকে সাত দিন আগে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা শুরু হবে। অন্যদিকে ফেরার জন্যও তিন দিন সময় পাওয়া যাবে। সঙ্গতকারণে এবার ঈদ যাত্রা নির্বিঘœ হওয়ার প্রত্যাশা করছেন সবাই। একদিন বিরতির পর রবিবার ফের শুরু হয় ট্রেনের আগাম ঈদের টিকেট বিক্রি। আগাম টিকেট বিক্রির চতুর্থ দিন রবিবার কমলাপুর থেকে দেয়া হয়েছে ৪ জুলাইয়ের টিকেট। আজ ২৭ জুন দেয়া হবে ৫ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকেট। আর ফিরতি যাত্রার অগ্রিম রেল টিকেট মিলবে ৪ জুলাই থেকে। শেষ সময়ের ঈদযাত্রার টিকেট পেতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে উপচেপড়া ভিড় ছিল। প্রচ- গরমে টিকেট নামের সোনার হরিণ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছেন। তবে দুপুরের পর স্বস্তির একপশলা বৃষ্টি প্রশান্তি এনে দেয় টিকেট প্রত্যাশীদের। কমলাপুরের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে সদরঘাট লঞ্চঘাটে আর প্রধান প্রধান বাস কোম্পানির ডিপোতে। তবে বাসের টিকেট অনলাইনে কাটার সুযোগ থাকায় রাজধানীর বিভিন্নপ্রাপ্ত থেকে টিকেট কেনা যাচ্ছে। স্টেশনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখতে রবিবার বেলা ১১টার দিকে আসেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। এ সময় তিনি বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা ও কালোবাজারি রোধে কমলাপুর, সদরঘাট এবং রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে র‌্যাবের নয়টি অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে। ঈদের আগেই মাওয়া ও আরিচায় দুটি করে র‌্যাবের চারটি ক্যাম্প স্থাপন করা হবে জানিয়ে বেনজীর বলেন, কেউ যদি যাত্রীদের হয়রানি করতে না পারে, আমরা সেদিকে নজর রাখছি। ঈদের ছুটিতে রাজধানীর নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে রবিবার কমলাপুর থেকে পাঁচ টিকেট কালোবাজারিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রবিবারের টিকেট পেতে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই অনেককে টিকেট কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। শনিবার ইফতারের আগে এসে রবিবার সাড়ে নয়টার দিকে টিকেট পান চট্টগ্রামের যাত্রী শামীম আহমেদ। তিনি জানান, শনিবার থেকে তিনি টিকেটের জন্য লাইনে এসে দাঁড়ান। রংপুরে যাওয়ার উদ্দেশে আকবর হোসেন নামের আরেক যাত্রীও জানান শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় এসে তিনি টিকিটের লাইনে দাঁড়ান। তিনিও রবিবার সকালে টিকেট নিয়ে বাসায় ফেরেন। তবে পুরুষের চেয়ে নারীদের লাইনে টিকেট প্রত্যাশীদের ভিড় ছিল লক্ষ্যণীয়। অন্যদিকে দেশের ৪১ নৌপথে ঈদে ঢাকা থেকে লঞ্চ যাতায়াতে যাত্রীদের সুবিধার্থে অগ্রিম কেবিন বুকিং দেয়ার সুযোগ দিয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। রবিবার লঞ্চের অগ্রিম কেবিন বুকিংয়ের বিষয়টি জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার দায়িত্বশীল একটি সূত্র। জানা গেছে, আগের ভাড়াতেই ঈদের অগ্রিম কেবিন বুকিং দিচ্ছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। যদিও শনিবার থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে। লঞ্চের ডেকের যাত্রীদের জন্য অগ্রিম টিকেটের কোন ব্যবস্থা নেই। শুধু কেবিন যাত্রীদের জন্য অগ্রিম বুকিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, দেশের ৪১টি নৌপথে ঢাকা থেকে লঞ্চ ছেড়ে যায়। এসব রুটে বর্তমানে প্রায় ১৮০টি লঞ্চ চলাচল করে। অন্যদিকে ঈদ উপলক্ষে আরও চার থেকে পাঁচটি নতুন লঞ্চ আসবে। আর এ নতুন লঞ্চগুলো ফিটনেস, টাইম ও রুট পারমিট পেলেই ঈদ যাত্রায় যুক্ত হবে। ঢাকা-বরিশাল রুটের প্রতিটি লঞ্চে ১৫০ থেকে ১৮০টি কেবিন রয়েছে। এছাড়া অন্য সব রুটের লঞ্চে ৮০ থেকে ১২০টি কেবিন থাকে। ঈদ উপলক্ষে বর্তমান ভাড়াতেই টিকেট পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে বিআইডব্লিউটিএ। অন্যদিকে দ্রুতগতির লঞ্চ গ্রীনলাইন ঈদের সময় তাদের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী চলাচল করবে। এ লঞ্চের যাত্রীদের জন্য পূর্বনির্ধারিত ভাড়া বহাল থাকছে। বর্তমানে গ্রীনলাইনের ভাড়া ৭০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা। গ্রীনলাইনের লঞ্চ সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে সকাল ৮টা এবং দুপুর ৩টায়।
×