ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে কোপায় তৃতীয় কলম্বিয়া

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২৭ জুন ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে কোপায় তৃতীয় কলম্বিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বিশেষ টুর্নামেন্ট। ১৯১৬ সালে সাউথ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ নাম নিয়ে যাত্রা শুরু করা এই টুর্নামেন্টের নাম ১৯৭৫ সালে হয়ে যায় কোপা আমেরিকা। এ বছর শতবর্ষে পা রাখার কারণেই বিশেষ কোপা আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এই বিশেষ কোপায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে কলম্বিয়া। বাংলাদেশ সময় রবিবার ভোর ৬টায় (আমেরিকার সময় শনিবার রাত ৮টা) অনুষ্ঠিত তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে এবারের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় তারা। ম্যাচের ৩১ মিনিটের সময় জয়সূচক গোলটি করেন কার্লোস বাকা। চতুর্থবারের মতো কোপায় অংশ নেয়া যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয়বারের মতো চতুর্থ স্থান নিয়েই শেষ করল। ১৯৯৫ সালেও তারা চতুর্থ স্থান দখল করেছিল। আগে কখনও কোপা আমেরিকার ফুটবল আসরটি আয়োজন করেনি দেশটি। এবারই প্রথম আয়োজক হয়েছে তারা এবং সেটা বিশেষ কোপা আসর। স্বাগতিক হিসেবে শিরোপা জেতার ক্ষেত্রে অন্যতম হট ফেবারিট ছিল তারা। সেই ধারাবাহিকতা রেখে দ্বিতীয়বারের মতো কোপায় এবার সেমিফাইনালে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু শক্তিশালী আর্জেন্টিনার কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে। যদিও গোলরক্ষক ডেভিড অসপিনা দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। কিন্তু দল এমন বাজে খেলেছে যে তাকে গোলগুলো হজম করতেই হয়েছে। সেমি থেকে ছিটকে যাওয়ার কষ্ট ভোলার জন্য কলম্বিয়ার বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে তৃতীয় হওয়াটা খুব জরুরী ছিল স্বাগতিক দলের। তাছাড়া গ্রুপ পর্বে কলম্বিয়ার কাছে ২-০ গোলে হারের শোধ তোলারও দারুণ সুযোগ ছিল। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার পর সেসব দেখা যায়নি মার্কিনদের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের কোচ জারগেন ক্লিন্সম্যান আর্জেন্টিনার বিপক্ষে দলের খেলোয়াড়দের দারুণ ভর্ৎসনা করেন বেশি সুন্দর খেলা উপহার দেয়ার প্রচেষ্টার জন্য। ওই ম্যাচে মার্কিন ফুটবলাররা আর্জেন্টিনার গোলমুখে বলই নিয়ে যেতে পারেননি এবং শটও নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। কলম্বিয়ার বিপক্ষেও শুরু থেকে কোণ্ঠাসা দেখা গেল যুক্তরাষ্ট্রকে। ১২ মিনিটের সময়ই গোল পেয়ে যেত কলম্বিয়া। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা জেমস রড্রিগুয়েজের দুর্দান্ত এক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেন টিম হাওয়ার্ড। এভাবেই একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল কলম্বিয়ানরা। কিন্তু গোল পাচ্ছিল না। অবশেষে ৩১ মিনিটের সময় কাক্সিক্ষত সেই গোলের দেখা পেয়ে যায় তারা। সেটার কারিগর ছিলেন রড্রিগুয়েজই। দারুণ এক পাসে তিনি সান্তিয়াগো আরিয়াসকে বল দিলে হেডে সেটা বাড়িয়ে দেন কার্লোস বাকাকে। এসি মিলানের স্ট্রাইকার বাকা কোন ভুল করেননি। ৬ গজ দূর থেকে তিনি বল জালে জড়িয়ে দেন (১-০)। গোল হজমের পর অবশ্য কিছুটা তৎপর হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। জার্মেইন জোনস হয়তো গোল পেয়েই যেতেন যদি না তার নেয়া দুরন্ত শট আরিয়াসের গায়ে লেগে প্রতিহত না হতো। দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ক্লিন্ট ডেম্পসি দুর্দান্ত খেলেছেন কিন্তু গোলের দেখা পাননি। তবে ববি উডকে দিয়ে গোল করিয়েই ফেলেছিলেন। কিন্তু এ স্ট্রাইকার লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের ওই পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা। পরাজয়ের পর ক্লিন্সম্যান বলেন, ‘আসলে তারা অনেক বেশি সুযোগ সন্ধানী ছিল এবং একটিই সুযোগ পেয়ে কাজে লাগিয়েছে।’ কলম্বিয়া ২০০১ সালে নিজেদের সেরা সাফল্য পেয়েছিল কোপা আমেরিকা ফুটবলে। সেবার জিতেছিল শিরোপা। তারপর গত চার আসরের মধ্যে এটিই সেরা সাফল্য তাদের জন্য। ১৯৭৫ সালে রানার্সআপ এবং ১৯৮৭, ১৯৯৩ ও ১৯৯৫ সালে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল কলম্বিয়া।
×