ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রেক্সিটে টালমাটাল বিশ্ব পুঁজিবাজার

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২৬ জুন ২০১৬

ব্রেক্সিটে টালমাটাল বিশ্ব পুঁজিবাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অবশেষে ব্রেক্সিট’-এর পক্ষেই রায় দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিদায় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ব্রিটেনের সিংহভাগ মানুষ। আর, তা নিয়েই শুক্রবারের মতো শনিবারও দিনভর বিশ্ব শেয়ার বাজার ধাক্কা খেল। শনিবার দালাল স্ট্রিটে সেনসেক্স পড়েছে ৬০৪ পয়েন্ট, নিফ্?টি ১৮১.৮৫ পয়েন্ট। ৩১ বছরের তলানি ছুঁয়েছে পাউন্ড, ডলারে টাকা এক ঝটকায় নেমেছে ৯৬ পয়সা। তবে কিছুটা অপ্রত্যাশিত প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে উঠে বাজারের ঘুরে দাঁড়াতে খুব দেরি হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, এ দিনই পরের দিকে ভারতের শেয়ার বাজার এবং টাকা তার হারানো জমি অনেকটাই পুনরুদ্ধার করে। সেনসেক্সের ১০৯০ পয়েন্টের পতন লেনদেন বন্ধের সময়ে কমে দাঁড়ায় ৬০৪.৫১ পয়েন্টে। যার ফলে বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স থিতু হয় ২৬,৩৯৭.৭১ অঙ্কে। অন্য দিকে নিফ্টি আগের দিনের থেকে ১৮১.৮৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৮০৮৮.৬০ অঙ্কে। ডলারে টাকাও কিছুটা প্রাণ ফিরে পায়। বাজারে ডলার ছেড়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপের পাশাপাশি শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে টাকার দাম কিছুটা বাড়ে। বাজার বন্ধের সময়ে টাকার পতন কমে দাঁড়ায় ৭১ পয়সা। এক ডলারের দাম ছিল ৬৭.৯৬ টাকা। তবে গত ৪ মাসের মধ্যে টাকা এতটা নিচে নামেনি। শুক্রবার বাজার খোলার শুরু থেকেই গণভোটের ফলাফল দেখে হতাশ লগ্নিকারীরা শেয়ার বেচতে শুরু করেন। দ্রুতগতিতে পড়তে থাকে শেয়ারের দাম। তার সঙ্গে তাল রেখে নেমে আসে সূচকের পারা। লন্ডনভিত্তিক এফটিএসই সূচক এক সময়ে পড়ে যায় ৯ শতাংশ। জাপানের নিক্কেই ৭.৯২ শতাংশ, হংকং-এর হ্যাং সেং প্রায় ২.৫৫ শতাংশ। খোলার পরে পড়তে থাকে মার্কিন বাজারও। বিদেশী মুদ্রার বাজারে পাউন্ড নেমে যায় ১.৩২ ডলারে, যা ১৯৮৫ সালের পরে এত নীচে নামেনি। দালাল স্টিটে দিনটিতে টাটা মটরস দর হারিয়েছে ৯.৫৩ শতাংশ, টাটা স্টিল ৭.৯৩ শতাংশ, আইসিআইসিআই ব্যাংক দর হারিয়েছে ৪.৯০ শতাংশ, লারসন এ্যান্ড ট্রার্বো ৪.৫০ শতাংশ ও এক্সিস ব্যাংক ৪.৩২ শতাংশ দর হারিয়েছে। ব্রেক্সিট পরবর্তী অধ্যায়ে বিশ্বের দেশগুলো যাতে নিজেদের মুদ্রার অবমূল্যায়নের জন্য প্রতিযোগিতায় না-নামে তার জন্য আর্জি জানিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গবর্নর রঘুরাম রাজন। পাশাপাশি তিনি বলেন, ভারতে ডলার ও টাকার যোগানে ভারসাম্য বজায় রাখতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা নেবে। ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্ব অর্থনীতি কতটা প্রভাবিত হবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেরই অবশ্য মত, এখনই কিছু বলা কঠিন। ভারতের বাজারে ব্রেক্সিট’-এর প্রতিক্রিয়া খুব খারাপভাবে পড়বে না বলেই মনে করছেন মূলধনী বাজার বিশেষজ্ঞরা। ইউটিআই মিউচুয়াল ফান্ডের গ্রুপ প্রেসিডেন্ট সূরজ কালে বলেন, ব্রিটেনের বিভিন্ন সমীা দেখে আমাদের আশা ছিল, ব্রিটেন ই ইউতে থাকার পইে রায় দেবে। কিন্তু যেটা হলো, সেটা অপ্রত্যাশিত। তাই তার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বাজারে ধস নেমেছে। তবে আমার ধারণা, বিশেষ করে ভারতের বাজার মাঝারি পাল্লায় বাজার দ্রুত ওঠানামা করলেও দীর্ঘ মেয়াদে সূচকের উত্থান হবে বলেই মনে করি। ব্রেক্সিট বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভারতের অনুকূলে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। যেমন স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান অরুন্ধতী ভট্টাচার্য মনে করেন, বে্িরক্সট-পরবর্তী পর্যায়ে ভারতের সামনে বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতার সুযোগ বাড়বে।
×