ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্রেক্সিটে যত লাভ-ক্ষতি

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২৬ জুন ২০১৬

ব্রেক্সিটে যত লাভ-ক্ষতি

বৃহস্পতিবারের গণভোটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার জন্য একটি আবেদন জমা দিতে পারে যুক্তরাজ্য। এরপর অন্তত দুই বছর বিচ্ছেদ সংক্রান্ত আলোচনায় ঠিক হবে, যুক্তরাজ্য কোন প্রক্রিয়ায় ইইউ ছাড়বে। ইইউ গঠনের পর যুক্তরাজ্যই প্রথম দেশ, যারা ২৮ জাতির এই জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের এই বেরিয়ে যাওয়াকে সংক্ষেপে বলা হচ্ছে ‘ ব্রেক্সিট’। বলা হচ্ছে, এর ফলে কেবল যুক্তরাজ্যের ভাগ্যই বদলাবে না, বদলে যাবে ইউরোপ এবং আগামী প্রজন্মের রাজনীতি। প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়েই। যুক্তরাজ্যের ইইউ ত্যাগের পর উভয় পক্ষের ভবিষ্যত কি হতে পারে তা নিচে তুলে ধরা হল। অর্থনীতি ॥ ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে যুক্তরাজ্যকে আর সংস্থাটির বাজেট আইন মেনে চলতে হবে না। ইইউর বাজেট আইন অনুযায়ী, কোন সরকার জিডিপির ৩ শতাংশের বেশি ঘাটতি বাজেট দিতে পারবে না। এছাড়া, সরকারী ঋণ জিডিপির ৬০ শতাংশের বেশি হবে না। এতে করে ব্রিটেনের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে এবং তা পূরণ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। অর্থব্যবস্থা ॥ যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে দেশটির ব্যাংক থেকে শুরু করে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইইউ পাসপোর্ট-বাণিজ্য সুবিধা হারাবে। যে পদ্ধতিতে তারা কম খরচে ইইউ এর ২৮ টি দেশে সেবা বিক্রি করতে পারত। এই পাসপোর্ট পদ্ধতির সুবিধার কারণেই লন্ডন বিশ্ব অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। এদিক দিয়ে ক্ষতি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং ইউরোপের বাইরের অনেক দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের ইউরোপীয় প্রধান কার্যালয় লন্ডনে অবস্থিত। ব্রেক্সিটের পর তারা ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশে সেগুলো সরিয়ে নেয়ার কথা বিবেচনা করবে। ফলে এটিও হবে একটি বড় ক্ষতি। বাণিজ্য ॥ ইউ থেকে ব্রিটেন বের হয়ে গেলে দেশটির অর্থনীতিকে প্রায় ১০ হাজার কোটি ইউরোর ধাক্কা সামলাতে হবে। ব্রিটেনের সঙ্গে ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোর পণ্য বাণিজ্য উদ্বৃত্ত প্রায় ১০ হাজার কোটি ইউরো (১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য আমদানির তুলনায় ২০ মিলিয়ন ইউরো সমমূল্যের সেবা বেশি রফতানি করে, যেগুলো মূলত অর্থনৈতিক সেবা। প্রতিযোগিতা ॥ খন থেকে রুগ্ন কোম্পানি ও কারখানাকে স্বাধীনভাবে সহায়তা করতে পারবে যুক্তরাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে ইইউর চোখ রাঙ্গানির পরোয়া করতে হবে না। তবে এখন থেকে ইইউ সদস্যভুক্ত দেশগুলোর অন্যান্য কোম্পানিকে ইইউ ভর্তুকি দিতে চাইলে যুক্তরাজ্য আর আপত্তি করতে পারবে না। জ্বালানি খাত ॥ ইইউ ত্যাগের ফলে যুক্তরাজ্যের জ্বালানি পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ আরও ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে নতুন প্রকল্পগুলোর কাজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে পিছিয়ে পড়বে। জলবায়ু ॥ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ইইউর পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানে একজোট হয়ে কাজ করার যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল সেটাও ব্রেক্সিটের কারণে বাধাগ্রস্ত হবে। -ওয়েবসাইট
×