ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গুদাম কর্মকর্তাকে টাকা না দিলেই ধান চিটা, আর্দ্র

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৫ জুন ২০১৬

গুদাম কর্মকর্তাকে টাকা না দিলেই ধান চিটা, আর্দ্র

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ টাকা না দিলে ধানে চিটা, আর্দ্র, আরও কত কি সমস্যা। আর টনপ্রতি ধানে খাদ্য নিয়ন্ত্রককে ৫ হাজার টাকা দিলেই সব সমস্যার সমাধান! চিটাওয়ালা, আর্দ্র ধানও তখন সব ভাল হয়ে যায়। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন তৃণমূল পর্যায়ের চাষীরা। কৃষকদের কাছ থেকে সরকারের ধান ক্রয়ে এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সরকারী গোডাউনে ধান বিক্রি করতে আসা নসিমন, টমটম আর ভ্যান ভর্তি করে গোডাউনের রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কৃষকরা। তারা (কৃষক) অভিযোগ করেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাদাত হোসেন সকলের ধান পরীক্ষা করে জানিয়েছেন, ধানে আদ্রতা বেশি থাকায় কোন চাষীর ধান নেয়া যাবে না। তবুও হাল ছাড়েননি চাষীরা। চাষীদের মধ্য থেকে এগিয়ে গেলেন রতœপুর ইউনিয়নে সাবেক ইউপি সদস্য অজিত শিকারী। তিনি খাদ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলে বের করলেন গোডাউনে ধান বিক্রির বিশেষ উপায়। শুক্রবার সকালে অজিত শিকারী সাংবাদিকদের জানান, খাদ্য কর্মকর্তার দাবিকৃত টন প্রতি ৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালের ঘোষিত তিনিসহ রতœপুরের চাষী নাসির উদ্দিন, শাহজাহান, সুকদেব বাড়ৈ, বারপাইকা গ্রামের মাইনুল, ননী গোপালের মত অনেক চাষীদের খারাপ ধান মুহূর্তের মধ্যে ভাল ধান হিসেবে ওইদিন বিকেলে জমা হয়ে গেছে গোডাউনে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, যারা এ অভিযোগ করছেন তারা সিন্ডিকেট হিসেবে গোডাউনে ধান দিতে ব্যর্থ হয়েই এমন কথা বলছেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জায়গা না থাকার কারণে ধান ক্রয় বন্ধ রয়েছে। ঈদের পর আবার শুরু করার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬৫০ টন ধান ক্রয় করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সূত্রমতে, সরকারীভাবে ধান ক্রয়ের ঘোষণার পর গত ৫ মে’র পরিবর্তে ১৭ মে থেকে ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হয়। সরকারী নীতিমালায় প্রতিকেজি ধান ২৩ টাকা দরে প্রতি মণ ধান ৯২০ টাকায় ক্রয় করছে সরকার। উপজেলায় ১ হাজার ৬৫৮ টন ধান ক্রয় করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ধান ক্রয় কমিটির সভাপতি দেবী চন্দ। নওগাঁর অনিয়ম নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, পতœীতলা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পতœীতলার পাশাপাশি সম্প্রতি তিনি ধামইরহাট উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। ওই দুই উপজেলায় ধান-গম ক্রয় থেকে শুরু করে ব্যাপক অনিয়ম করে আসছেন তিনি। আর এসব করছেন তিনি নিজেকে স্থানীয় এমপি ও জাতীয সংসদের হুইপের নাম ভাঙ্গিয়ে এবং তাঁর খাস লোক দাবি করে। বিষয়টি ওই দুই উপজেলার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আরমান আলী নিজেকে স্থানীয় এমপি ও হুইপের খাস লোক পরিচয় দিয়ে চলতি বোরো সংগ্রহ অভিযানে জামায়াত-বিএনপিসহ কতিপয় বিতর্কিত প্রভাবশালী ব্যক্তির মাধ্যমে কৃষকদের ম্যানেজ করে গুদামে ধান ঢুকাতে সহায়তা করেন। কৃষকদের কাছ থেকে এক টন ধানের স্লিপ ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় কিনে ওই কর্মকর্তার সহায়তায় প্রভাবশালীরা তার অধীনস্থ দুই উপজেলার ৫টি সরকারী গুদামে সিন্ডিকেট করে ধান ঢুকাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সেসব ধান কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। ওই কর্মকর্তার মদদে এভাবেই সিন্ডিকেট সদস্যরা তাদের ধান অন্য জেলা থেকে ট্রাকে এনে গুদামের আশপাশে ট্রাক থেকে স্থানীয় পাওয়ার টিলারে করে ধানগুলো গুদামে নিচ্ছে। গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা ॥ স্বামী শাশুড়িসহ দুই ননদ আটক নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ২৪ জুন ॥ আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাপুর গ্রামে লাবণী আক্তার (২৬) নামে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ গৃহবধূর স্বামী, শাশুড়ি ও দুই ননদকে আটক করেছে। জানা যায় আক্কেলপুর উপজেলার আব্দুল্লাপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ১২ বছর আগে পর্শ্ববর্তী কানছপাড়া গ্রামের লাবণী আক্তারকে বিয়ে করে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে নানা বিষয়ে শাশুড়ি, ননদ ও স্বামীর সাথে লাবণীর গ-গোল হতে থাকে। এসব ঘটনায় লাবণীকে মারধরও করা হতো। শুক্রবার সকালে কতা কাটাকাটির জের ধরেই লাবণী আক্তারের স্বামী আব্দুল কালাম আজাদ (৩৫), শাশুড়ি হাসনাহেনা (৫২), ননদ নাজী (২৫) ও নাজমা (২২) তাকে বেধরক মারধর করে। এক পর্যায়ে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে লাবণী আক্তারের বাবার বাড়িতে খবর দেয়া হয় সে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং স্বামী, শাশুড়ি ও দুই ননদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
×