ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের বাজার

বাহারি পোশাক ও ক্রেতা দুই-ই জমজমাট

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৫ জুন ২০১৬

বাহারি পোশাক ও ক্রেতা দুই-ই জমজমাট

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে এখন দেশের প্রতিটি বাজারে ক্রেতাদের ভিড়। পক্ষান্তরে দোকানিরা ক্রেতাদের পছন্দের দিকে লক্ষ্য রেখে সাজিয়েছে পণ্যের সমাহার। স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর: চট্টগ্রাম ॥ ঈদের পোশাকে থাকতে হবে চুমকি, জরি, আর রঙের ঝলক। হিন্দী ছবির নায়ক-নায়িকাদের পোশাক ডিজাইনের উপর নির্ভর করে এদেশেই তৈরি হচ্ছে ঈদের পোশাক। তাই পোশাকেও নৈপুণ্য খুঁজে বেড়াচ্ছে টিনেজরা। টিনেজদের এসব কালেকশনের যোগান দিতে শুধু ভারত, থাইল্যান্ডই নয়, দেশের আনাচে কানাচে থাকা ঐতিহ্যবাহী নিপুণ ঘরগুলোর তৈরি পোশাক নিয়ে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। রমজান শেষে ঈদের আনন্দ অনেকটা পোশাক নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ফলে রমজানের প্রায় শেষের দিকে তৈরি পোশাক নির্ভরশীলরা মার্কেট, শপিং মল আর বুটিকস হাউসগুলোতে দৌড়াচ্ছে চোখ ধাঁধানো বাহারি কালেকশনের আশায়। টিনেজ থেকে শুরু করে শিশুদের মধ্যেও পোশাকের বাহার কাজ করছে প্রতিনিয়ত। তবে প্রবীণ সমাজ এক সময় সাদাসিধে পোশাক নির্ভরশীল থাকলেও ডিজিটাল এ যুগে এসে তৃতীয় প্রজন্মের দেখাদেখি রঙিন পোশাকে অনেকেই নিজেদের সাজাতে চায়। ফলে টিনেজদের সঙ্গে ছুটছে প্রবীণরাও। বিভিন্ন শপিং মলের ডিসপ্লেতে পছন্দসই পোশাক পাওয়া না গেলে ইন্ডিভিজুয়্যাল শো রুমগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে পছন্দের পোশাকের জন্য। এদিকে, মার্কেটের বাইরে শিশুদের নজর কাড়তে বিদেশী খেলনা নিয়ে পসরা বসিয়েছে ভাসমান ব্যবসায়ীরা। কটন, সিল্ক, হাফ সিল্ক, মসলিন কাপড়ে হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, মেশিন এমব্রয়ডারি ও ব্লক প্রিন্টের শাড়িতে গৃহিণীদের মাতোয়ারা করতে বিক্রেতাদের টার্গেট থাকবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে রঙের যেমন ছোঁয়া থাকতে হবে বর্তমান ফ্যাশনের আলোকে তেমনি ডিজাইন ও কাটিংয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ না হলে পোশাকের আগ্রহ কমে যায়। এমব্রয়ডারি, ব্লক, চুমকিসহ বিভিন্ন মোটিভে পোশাক তৈরির ছোঁয়া ধরে রাখতে কারিগররাও টিনেজদের টার্গেট করেই পোশাক তৈরিতে সারা বছর ব্যস্ত সময় কাটিয়ে তৈরি পোশাকের সমাহার তুলে ধরে ডিসপ্লের মাধ্যমে। পোশাকে কটন, সিল্ক, মসলিন, লিলেন কটন, এন্ডি সিল্ক ও এন্ডি কটন কাপড়ে এবারের তরুণীদের আকর্ষণ কাড়তে ডিজাইনাররা তৈরি করেছে হরেক রকমের ফ্যাশনেবল পোশাক। কাটিং ও ডিজাইনে এসেছে নতুনত্ব। কিন্তু বুটিকস হাউসগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠলেও ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে আগের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে গেছে বলে চট্টগ্রামে ক্রেতা সাধারণের অভিমত। রাজশাহী ॥ নগরীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। শুক্রবার ছুটির দিনে সাহেব বাজার, আরডিএ মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপণি বিতানগুলোয় সকাল থেকেইে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। মার্কেট ও বড় বড় বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাত কোথাও কম নেই ক্রেতা। ছুটির দিনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেককে দেখা গেছে এক দোকান থেকে আরেক দোকান ছুটে বেড়াচ্ছেন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকায় এবার ঈদের কেনাকাটা ভাল হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। রোজা শুরুর প্রথম থেকেই এবার কেনাকাটা শুরু হয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিনে নগরীর প্রতিটি মার্কেটে লক্ষ্য করা গেছে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বিক্রেতারা জানান, রমজানের শুরু থেকেই বিক্রি শুরু হলেও মধ্য রোজা পেরিয়ে ছুটির দিনে শুক্রবার থেকে বেচাবিক্রি বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে ঈদকে সামনে রেখে নগরীর আরডিএ ও নিউমার্কেটের প্রতিটি দোকান সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে আনা হয়েছে রকমারি ডিজাইনের পোশাক। আকর্ষণীয় ডিজাইনের পোশাক নজর কাড়ছে ক্রেতাদের। তাই প্রতিটি দোকানেই এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষণীয়। ফ্যাশন হাউসগুলো সেজেছে নতুন সাজে। শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের চেয়ে এবার বেড়েছে সব ধরনের পোশাকের দাম। শাড়ির দামও এবার বাড়তি। এবার ঈদকে সামনে রেখে বাজারে এসেছে কাতান, জামদানি, টাঙ্গাইল শাড়ির নতুন নতুন ডিজাইন। দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতারা ভারতীয় শাড়ির পাশাপাশি ঝুঁকছেন দেশী শাড়ির প্রতি। নাটোর ॥ ঈদ উপলক্ষে নাটোরের শপিংমলসহ সব ধরনের গার্মেন্টস দোকানে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদের নতুন পোশাক কিনতে বিপণি দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন সব বয়সী নারী পুরুষ। ভিড় ও চড়া দাম এড়াতে মধ্যবিত্তরা ঈদের অনেক আগেই সেরে ফেলছেন কেনাকাটা। তবে, ঈদ যতই এগিয়ে আসছে ততই বাড়ছে বেচাকেনা। এবার নাটোরের গার্মেন্টস দোকানগুলোতে বিদেশী কাপড়ের পাশাপাশি দেশী কাপড়েরও চাহিদা বেড়েছে অনেকগুন। সপিংমল কিংবা গার্মেন্টস দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় অনেকটাই আশ্বস্ত করছে ব্যবসায়ীদের। সকাল ৯টা থেকে ইফতারির আগ পর্যন্ত এবং ইফতারির পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গার্মেন্টস দোকানগুলোতে চলছে বেচাকেনা। ক্রেতারা শহরের বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে তাদের পছন্দের পোশাক কিনছেন। অন্যদিকে, ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতা মাথায় রেখে বিভিন্ন দামের দেশী-বিদেশী পোশাক আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা। ঈশ্বরদী ॥ ঈদকে ঘিরে ঈশ্বরদীর সকল মার্কেটে ক্রেতা সমাগম হচ্ছে। তবে উপজেলা রোডের বউ বাজারে বউ ও মেয়েদের ভিড় বেশি। এবার বিক্রিও হচ্ছে বেশি। মান ও দাম দুটোতেই বউ বাজারের ক্রেতারা সাশ্রয়ী হচ্ছে বলে বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। মনির প্লাজা, জাকের মার্কেট, বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেট, গোপাল মার্কেট ও সেকেনহ্যান্ড মার্কেটসহ সকল মার্কেটে প্রতিদিন ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলছে। শুধু ইফতারির সময় বেচাকেনা বন্ধ থাকে।
×