ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইব্রাহিম নোমান

এ্যানিমেশনে স্বপ্নীল দুনিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ২৪ জুন ২০১৬

এ্যানিমেশনে স্বপ্নীল দুনিয়া

এ্যানিমেশন শিল্পের ডিজিটাল মাধ্যম। শিল্পী রঙ-তুলির বদলে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে তার শৈল্পিক দক্ষতা ফুটিয়ে তোলেন। চিত্র পরিচালকদের ঝুঁকি, সময় ও কল্পিত দৃশ্যকে বিশ্বাসযোগ্য করে প্রদর্শনের দারুণ সুবিধা দেয় এ্যানিমেশন। আলাদিন, টারজান, থান্ডার ক্যাটস, টম এ্যান্ড জেরি, পাপাই, মিনা কার্টুন সবই এ্যানিমেশনের স্বপ্নীল ছোঁয়া। মূলত এ্যানিমেশনের মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের দাতা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের মোটিভ সারাবিশ্বে তুলে ধরছে। বিশ্বখ্যাত হলিউড সিনেমা জুরাসিক পার্ক, টারমিনেটর সিরিজ এ্যানিমেশনের কারণেই হয়েছে রোমাঞ্চকর। গেমসের বিভিন্ন চরিত্র আজ দেশে দেশে এত জনপ্রিয় শুধু এ্যানিমেশনের কারণেই। বিজ্ঞাপন, কার্টুন, লোগো কিংবা টয় স্টোরি থেকে শুরু করে হালের অস্কার বিজয়ী শ্রেষ্ঠ ছবিগুলো এ্যানিমেশনকে এনে দিয়েছে অসাধারণ জনপ্রিয়তা। জেমস ক্যামেরন কিংবা স্টিফেন স্পিলবার্গের প্রতিটি মুভিতে নিজেদের ভেঙ্গেছেন আবার গড়েছেন। জেমস ক্যামেরনের এ্যাভাটারে রয়েছে এ্যানিমেশনের কী জাদুকরী ব্যবহার! এ্যাভাটারের চরিত্রগুলোর আইডিয়া কিন্তু ক্যামেরনের মস্তিষ্কপ্রসূত। তার ইমাজিনেশনটাই মূলত এ্যানিমেটররা বাস্তবায়ন করেছেন। এ্যানিমেশন হচ্ছে বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে স্থিরচিত্র বা স্থির ছবির প্রদর্শন, যা প্রদর্শিত হলে মনে হবে এটা চলমান ছবি বা চলচ্চিত্র। প্রথমদিকে এ্যানিমেশনের ধারণা আসে আর্কিটেকচারাল ড্রয়িংকে বিভিন্ন পার্শ্ব থেকে দেখানোর মাধ্যমে। পরে এ্যানিমেশনের ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রেই শুরু হয়। প্রথাগত এ্যানিমেশন বিংশ শতাব্দীতে ফিল্মের জগতে প্রবেশ করে। প্রথাগত এ্যানিমেশনে একটি স্থিরচিত্রকে চলমান করার জন্য কাগজের ওপর বিভিন্ন পজিশনে অনেক ড্রয়িং করা হয়। ড্রয়িংগুলোতে ছবির পরিবর্তনটা এতই সামান্য যে, সাধারণত ছবিগুলো পরপর দেখলে একটি ছবির পরবর্তী ছবিটি খুব পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হবে না। বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে যখন ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতিটি ছবিকে ক্রমানুসারে ধারণ করা হয় এবং ক্যামেরা থেকে ধারণকৃত ফাইলটি চালানো হয়, তখন তাকে চলমান ছবি বলে মনে হয়। এ্যানিমেটেড ছবি, গেম কিংবা কার্টুনের জনপ্রিয়তা এক সময় ছোটদের কাছে থাকলেও এখন বিশ্বব্যাপী বড়দের কাছেও জনপ্রিয়। হলিউডের বেশকিছু সায়েন্স ফিকশন চলচ্চিত্র এবং ভারতীয় কিছু কিছু হিন্দি ছবিও এ্যানিমেশন ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এসব ছবি বিশ্ববাজারে অনেক মূল্যও পেয়েছে। তবে তরুণদের কাছে এ্যানিমেটেড ছবির জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। কারণ, তরুণরা সবসময়ই উচ্ছলিত প্রাণে বিজ্ঞানের ছোঁয়া লাগানো কাল্পনিক জগতকে ভালবাসে। আইটির বিভিন্ন সেক্টরের মধ্যে অন্যতম একটি জনপ্রিয় সেক্টর এ্যানিমেশন। এর জন্য প্রয়োজন নেই কোন বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিশাল কোন ডিগ্রী অথবা একঝাঁক সার্টিফিকেটের। প্রয়োজন সৃজনশীলতা-বুদ্ধিমত্তার সমন্বয় এবং চিন্তাশক্তি। বর্তমান সময়ে উচ্চ আয় আর সম্মান সেই সঙ্গে সৃজনশীলতার সমন্বয়ের কারণে দিন দিন বাড়ছে এ্যানিমেটরের সংখ্যা। এ্যানিমেশনের পথচলা ওয়াল্ট ডিজনির হাত ধরেই এ্যানিমেশন আজকের এই অবস্থান। শুধু তাই নয়, এ্যানিমেশন শিল্পের উদ্ভাবকও ওয়াল্ড ডিজনি। বিখ্যাত ‘মিকি মাউস’, ’পিনোকি’ ‘ডোনাল্ড ডাক’ এর মতো এ্যানিমেটেড কার্টুন দিয়েই এ্যানিমেশন কার্টুন ফিল্মের শুরু। ১৯২৯ সালে ‘মিকি মাউস’ কার্টুন চরিত্রের সৃষ্টি করেন ওয়াল্ট ডিজনি। তার দীর্ঘ সাধনাই মিকি মাউসকে জীবন্ত চরিত্র দান করে নির্মাণ করেন কার্টুন চলচ্চিত্র। আর এভাবেই এ্যানিমেশনের যাত্রা শুরু হয়। এ্যানিমেশন শব্দটি লাতিন শব্দ ‘এ্যানিমা’ থেকে এসেছে। এর বাংলা অর্থ হলোÑ আন্তা। ইংরেজীতে যাকে বলা হয় সোল। পর্দায় কোন একটি জড়বস্তু বা চরিত্রকে চলমান কোন চিত্রে জীবন বা রূপদান করাকে এ্যানিমেশন বলা হয়। আর এই জীবন দানের কাজটি যারা করে থাকে তাদের এ্যানিমেটর বলা হয়। এ্যানিমেশন বেশ কয়েক ধরনের হয়। টুডি সেল এ্যানিমেশন, থ্রিডি সিজিআই এ্যানিমেশন, থ্রিডি মোশন ক্যাপচার এ্যানিমেশন, ভিজ্যুয়াল এফেক্টস, ক্লে এ্যানিমেশন প্রভৃতি। টু-ডি সেল এ্যানিমেশন সবচেয়ে পুরনো ধরনের পদ্ধতির এ্যানিমেশন। ‘মিকি মাউস’ এই পদ্ধতিতে কাজে লাগিয়ে পরিচালিত হতো। থ্রিডি সিজিআই এ্যানিমেশন : এটি সফটওয়্যারনির্ভর এ্যানিমেশন পদ্ধতি। বিখ্যাত পিক্সার স্টুডিওর ‘আপ’ ও ‘টয় স্টোরি’Ñএর মতো হলিউডের বিখ্যাত এ্যানিমেশন ফিল্মগুলো এই পদ্ধতিতেই তৈরি করা হয়েছে। থ্রিডি মোশন ক্যাপচার এ্যানিমেশন : অনেক সময় ত্রিমাত্রিক বস্তু বা চরিত্র তৈরি করে তাকে এ্যানিমেট করতে এই পদ্ধতির সাহায্য নেয়া হয়। ‘জনপ্রিয় ছবি ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। হলিউডের জনপ্রিয় ছবি ‘আভাটার’তেও থ্রিডি এ্যানিমেশন ব্যবহার করা হয়েছে। ওয়েটা নামের একটি স্টুডিওতে খ্যাতিমান পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ টিনটিনকে নিয়ে ‘দ্য এ্যাডভেঞ্চারস অব টিনটিন’ নামে থ্রি ডাইমেনশন ফিল্ম তৈরি করছেন। ভিজ্যুয়াল এফেক্টস : এ্যানিমেশন এবং মাল্টিমিডিয়া স্পেশালিস্টরা আজকাল ভিজ্যুয়াল এফেক্টসকেও তাদের কাজে ব্যবহার করছেন। সাধারণত স্বল্পদৈর্ঘ্যরে কোন এ্যানিমেশন বা স্পেশাল এফেক্টস তৈরিতে এটি ব্যবহার করা হয়। বলিউডের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র রা’ওয়ান এবং হ্যারি পটার’ সিরিজের চলচ্চিত্রের বেশ অনেকগুলো স্পেশাল এফেক্ট এই পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে। ক্লে এ্যানিমেশন : ক্লে এ্যানিমেশন এমন একটি পদ্ধতি যাতে সিন্থেটিক ক্লে-র সাহায্যে চরিত্র তৈরি করে তার নড়াচড়ার পরপর অনেক ছবি তোলা হয়। এতে অনেক সময় এক সেকেন্ডের একটি নড়াচড়ার জন্য ২০ থেকে ২৫টি ফ্রেমে ছবি নিতে হয়। আর এই ছবিগুলোকেই পরপর সাজানোর পর হয়ে উঠে এক একটি ক্লে এ্যানিমেশন। ডিজনি থেকে পিক্সারের এ্যানিমেশন এ্যানিমেশনের দুনিয়ায় ডুব দেয়ার কোন বয়স নেই। ছেলে-বুড়ো সবাই এর প্রতি সমআগ্রহী। এ্যানিমেটেড ছবি তৈরিতে অলিখিতভাবেই প্রথম হয়ে আছে ‘পিক্সার এ্যানিমেশন স্টুডিও’, সোজাভাবে ‘পিক্সার’। টয় স্টোরির শেরিফ উডি, মনস্টার ইঙ্ক-এর বু, ফাইন্ডিং নিমোর ডোরি আর নিমো, ওয়াল-ইর পিচ্চি রোবট ওয়ালিকে কি এত সহজে ভোলা যায়? এ ছবিগুলোই তৈরি করেছে পিক্সার। পিক্সার শব্দটি নেয়া হয়েছে একটি কল্পিত স্প্যানিশ শব্দ থেকে, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘পিক্সেল বানানো’ বা ‘ছবি বানানো’। এর শুরুটা কিন্তু সহজ ছিল না। যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৯ সালে, ‘লুকাসফিল্ম’-এর কম্পিউটার ডিভিশনের গ্রাফিক্স গ্রুপ হিসেবে। পরে ১৯৮৬ সালে এ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস এর অধিকাংশ শেয়ার কিনে নেন। এরপর ২০০৬ সালে ‘ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি’ পিক্সার কিনে নেয়। পিক্সারের ঘাঁটি ক্যালিফোর্নিয়ার এ্যামেরিভিলে। স্টিভ জবস এ্যাপল ছাড়ার পর যখন পিক্সারের শেয়ার কেনেন তখন পিক্সারের ভরাডুবি অবস্থা। ব্যবসা বাঁচাতে স্টিভ তাঁর বিনিয়োগ বাড়াতে বাড়াতে একসময় পুরো পিক্সারেরই মালিক বনে যান। এ সময় পিক্সার বাইরের প্রতিষ্ঠানের জন্য এ্যানিমেটেড বিজ্ঞাপন নির্মাণ শুরু করে এবং সাফল্য পায়। ১৯৯৫ সালে বের হওয়া টয় স্টোরির সাফল্য সব হিসাব পাল্টে দেয়! টয় স্টোরি বিশ্বব্যাপী মোট আয় করে ৩৬১ মিলিয়ন ডলার। এতে রাতারাতি পিক্সারের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। পিক্সার স্টুডিওতে কাজ করা অনেকটাই স্বপ্নের ব্যাপার। পুরো পিক্সার স্টুডিও সাজানো হয়েছে একসঙ্গে মজা আর আনন্দের সঙ্গে কাজ করার উপযোগী করে। এ স্টুডিওতে প্রত্যেক কর্মীরই স্বাধীনতা আছে নিজের মতো করে তাঁর কাজের জায়গা সাজিয়ে নেয়ার! সেটা ওয়েস্টার্ন ছবির বার বা বাড়ির গ্যারেজের মতো হলেও আপত্তি নেই! আর তাই এখানকার কর্মীরাও অনেক সৃজনশীল, কাজপাগল আর পরিশ্রমী। আর এ কারণেই পিক্সারের ঝুলিতে আছে এ্যাকাডেমি এ্যাওয়ার্ড, গোল্ডেন গ্লোব এ্যাওয়ার্ড, গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ডসহ বহু পুরস্কার। বাংলাদেশী অস্কার জয়ী নাফিস প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে অস্কার বিজয়ী নাফিস বিন জাফর। অস্কারের একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস এ্যান্ড সায়েন্স বিভাগে ২০০৭ সালে অস্কার পুরস্কার পান নাফিস। হলিউড ব্লকবাস্টার মুভি ‘পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান : এ্যাট ওয়ার্ল্ডস এ্যান্ড’ ফ্লুইড ডাইনামিক্সে অসাধারণ কাজ করায় ‘সায়েন্টিফিক এ্যান্ড টেকনিক্যাল এ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পান তিনি। ২০১৪ সালে ‘হাউ টু ট্রেইন ইয়োর ড্রাগন টু’ সিনেমায় বিধ্বংসী ইফেক্টস তৈরির স্বীকৃতিস্বরূপ কারিগরি বিভাগে আরউইন কওম্যানস ও স্টিফেন মার্শালের সঙ্গে যৌথভাবে অস্কার জিতেছেন নাফিস। নাফিসের এটি দ্বিতীয় বার অস্কার অর্জন। এ্যানিমেশন শর্টফিল্মে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ স্পেনে অনুষ্ঠিত ডব অৎঃ ডধঃবৎ ঋরষস ঋবংঃরাধষ ২০১৫-১৬ প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ কোন এ্যানিমেশন শর্টফিল্ম চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বিশ্বের সেরা ৩০টি এ্যানিমেশন শর্টফিল্মের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশের এ্যানিমেশন ঐধঢ়ঢ়ু ডড়ৎষফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের টিম লিডার ছিলেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির, মাল্টিমিডিয়ার ও ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগের ছাত্র হাসান যোবায়ের। এছাড়া দলের অন্য সদস্যরা হলেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বাপ্পী রহমান, হায়াত মাহমুদ রাহাত ও হোসেন তারেক। এ্যানিমেশনের ভবিষ্যত এ্যানিমেশনের অগ্রযাত্রায় ‘সত্যিকার’ অভিনয়শিল্পীরা কি বেকার হয়ে যাবেন? তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অনেকেই সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করছেন। ভবিষ্যত সত্যিকার অভিনয়শিল্পীদের ভাগ্যে যাই থাক, একটি বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে, সামনের দিনগুলোতে অপার সম্ভাবনা অপেক্ষা করছে এ্যানিমেটরদের জন্য। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কম্পিউটার এ্যানিমেশনও হতে পারে অন্যতম প্রধান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট, সিজিআই (কম্পিউটার জেনারেটেড ইমেজারি) কিংবা এ্যানিমেশনের কাজ বাংলাদেশে অল্পবিস্তর হচ্ছে। আবার দেশের বাইরে নামী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট দলের বিশাল কর্মযজ্ঞের সঙ্গেও যুক্ত আছেন বাংলাদেশী তরুণরা। অন্যদিকে ব্যাটম্যান ভার্সাস সুপারম্যান : ডন অব জাস্টিস ছবির ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট দলের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছেন আরেক বাংলাদেশী তরুণ ওয়াহিদ ইবনে রেজা। তরুণদের জন্য এ্যানিমেশন ছবি এ্যানিমেশন ছবি তরুণদের কাছেও বেশ জনপ্রিয়। ডিসপোজাবল মি’সহ আরও বেশকিছু চলচ্চিত্র হলিউড টপ চার্টে শীর্ষ অবস্থান নিয়ে এ্যানিমেটেড ছবির যাত্রাকে বেগবান করেছে। এ প্রসঙ্গে রিও ছবির পরিচালক কার্লোস সালদানহা বলেন, এ্যানিমেটেডে বা কার্টুন ছবির জনপ্রিয়তার মূল কারণ হিসেবে আমি মনে করি এখন এমন কিছু দেখান সম্ভব হয় যা বাস্তবিক শূটিংয়ের মাধ্যমে সম্ভব হয় না। এ ছবিগুলোয় কল্পনার উপস্থাপন বাস্তবিক না হলেও পরিপূর্ণ। এ্যানিমেশন শিল্পের সম্ভাবনা বিশ্বব্যাপী দ্রুত বর্ধনশীল একটি খাত এ্যানিমেশন। এ্যানিমেশন শিল্পের বড় দুই বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। সেখানকার স্টুডিওগুলোর অধিকাংশই কিছু কাজ বিভিন্ন দেশ থেকে করিয়ে নিচ্ছে। এসব দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। আর এ সুযোগ কাজে লাগাতে ও স্থানীয় বাজারের কথা চিন্তা করে নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে এ্যানিমেশন কার্টুনের যাত্রা। একে একে গড়ে উঠতে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর ৭ শতাংশ হারে বাড়ছে এর পরিসর। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ এ্যান্ড মার্কেটসের হিসাবে, ২০১২ সালে এ্যানিমেশন শিল্পের বৈশ্বিক বাজার ছিল ১২২.২০ বিলিয়ন ডলার আর ২০১৬ এর জুনে তা এসে দাঁড়িয়েছে ২৪২.৯২ বিলিয়ন ডলারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কম্পিউটার এ্যানিমেশনের কাজ। এ্যানিমেশন বাংলাদেশে একটি সম্ভাবনার নাম। এর মাধ্যমে আগ্রহীদের কর্মসংস্থানও সম্ভব। এখন বাংলাদেশেও বেশ কয়েকটি এ্যানিমেশন স্টুডিও রয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অনেকেই এনিমেশনের কাজ করছে। এই খাত থেকে তারা প্রচুর আয়ও করছে। আমরা যদি নিজেদের দক্ষ করে তুলতে পারি, তাহলে আমরাও প্রচুর বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করতে পারবো। [email protected]
×