ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

‘মুক্ত বিশ্বে প্রকাশনা’- দুদিনের আন্তর্জাতিক সেমিনার শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২৪ জুন ২০১৬

‘মুক্ত বিশ্বে প্রকাশনা’- দুদিনের আন্তর্জাতিক সেমিনার শুরু আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্রমশই এগিয়ে যাচ্ছে দেশের প্রকাশনাশিল্প। মুক্তচিন্তা ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখছে সৃজনশীল প্রকাশনা। আর এমন পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ইতিহাসে এই প্রথম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে প্রকাশনা বিষয় আন্তর্জাতিক সেমিনার। ‘মুক্ত বিশ্বে প্রকাশনা’ শীর্ষক দু’দিনের আন্তর্জাতিক সেমিনার শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার। দেশের প্রকাশনাশিল্পের বিকাশে যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি। দুই দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক সেমিনারে ‘প্রকাশনার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা’, ‘দেশীয় প্রকাশনার আন্তর্জাতিকীকরণ’, ‘প্রকাশনায় নারী’ ও ‘প্রকাশনার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগতা’ শীর্ষক চারটি পৃথক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য প্রকাশক, লেখক ও নীতিনির্ধারকগণ অংশ নেবেন। প্রকাশনাকে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাধাহীন করার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা শেষে একটি কার্যকর ও সময়োপযোগী রূপরেখা নিতে চাইছে দেশের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সেমিনারের উদ্বোধন হবে। উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখবেন সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ। বিশেষ অতিথি থাকবেন আন্তর্জাতিক প্রকাশক সমিতির (আইপিএ) সভাপতি রিচার্ড চার্কিন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ও আইপিএর কর্মকর্তা বেন স্টুয়ার্ড। এ আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি সচিব আক্তারী মমতাজ, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মোঃ আখতারুজ্জামান, জ্ঞান সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ওসমান গসি, সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান শায়ক, মলিন কান্তি নাথ, মোস্তফা সেলিম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেমিনারে অংশ নেবেন আন্তর্জাতিক প্রকাশক সমিতির সভাপতি রিচার্ড চার্কিন, ভারতের মন্দিরা সেন ও ইমানুল হক, শ্রীলঙ্কার দীনেশ কুলাতাঙ্গা, নেপালের লিখাত পান্ডেসহ অন্য প্রতিনিধিবৃন্দ। এছাড়া উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানসহ চারটি পর্বে দেশের প্রখ্যাত লেখক, সাহিত্যিক ও প্রকাশকদের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, অধ্যাপক সৈয়দ মনজরুল ইসলাম, অধ্যাপক নিয়াজ জামান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ উল আলম লেনিন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ইউপিএলের প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও দুদিনের এ সেমিনারে অংশ নেবেন জনপ্রশাসন সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে আক্তারী মমতাজ বলেন, লেখকের ভাবনাকে পাঠকের কাছে দেন প্রকাশক। এভাবেই সমাজে মুক্তচিন্তার বিস্তার ঘটাতে ভূমিকা রাখেন প্রকাশকরা। আর জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে সৃজনশীল প্রকাশনাশিল্পের গুরুত্ব অসীম। এই সেমিনারের মাধ্যমে একসঙ্গে উঠে আসবে দেশের সৃজনশীল প্রকাশনাশিল্পের অগ্রগতি ও প্রকাশনার প্রতিবন্ধকতাসমূহ। সাত শিল্পীর ছাপচিত্র প্রদর্শনীর সমাপ্তি ॥ রাজধানীর গুলশান দুই নম্বরের নর্থ এভিনিউয়ে যাত্রা করেছে এজ নামের নতুন এক প্রদর্শনালয়। সাত বিশিষ্ট শিল্পীর ছাপচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে সূচনা হয় এজ গ্যালারির। ইমপ্রিন্ট শীর্ষক এ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন আমাদের আধুনিক চারুশিল্পের চার প্রজন্মের ৭ শিল্পী। বিভিন্ন প্রজন্মের এই শিল্পীরা হলেন মুর্তজা বশীর, রফিকুন নবী, মনিরুল ইসলাম, শহিদ কবির, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, রোকেয়া সুলতানা ও আনিসুজ্জামান। প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে সাত শিল্পীর ৩১টি ছাপচিত্র । ৪ জুন থেকে শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। মুর্তজা বশীরের পাঁচটি কাজের মধ্যে দুটির শিরোনাম হলো ‘এপিটাফ’ ও ‘বাসসহ বালিকা’। শিল্পীগুলো ছবিগুলো সৃজন করেছেন ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সময়ে। সবগুলোই এচিং এ্যাকুয়াটিন্ট মাধ্যমের ছাপাই ছবি। তার কাজগুলো ফর্মকেন্দ্রিক। প্রদর্শনীতে ঠাঁইপ্রাপ্ত রফিকুন নবীর একমাত্র ছবিটি সৃজিত হয়েছে উডকাট মাধ্যমে। মনিরুল ইসলামের ছাপচিত্রে জলরঙের মৃদু প্রলেপ সৃষ্টি করেছে ভিন্নরকম সৌন্দর্য। তার কাজের শিরোনাম হচ্ছে ‘গৌরবের পথে’ ‘আশা আসে এবং ছেড়ে যায়’, ‘প্যাপিরাস’ ও ‘দুই সময়ের খন্দক’। এচিং মাধ্যমে সৃজিত শহিদ কবিরের ছবিগুলোর শিরোনাম হলো ‘দুটি ফুলসহ ফুলদানি’, ‘মহাসড়ক’, ‘মেক্সিকান লিলি’ ও ‘পথ সার্কাস’ ইত্যাদি। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর জন্মদিন উদ্্যাপন ॥ দেশের অন্যতম বুদ্ধিজীবী। বয়স আশি ছুঁলেন তিনি। আশিতে পৌঁছেও বদলে যাননি। শরীরে বয়সের ছাপ কিন্তু মনে যেন এখনও তারুণ্যের প্রাণোচ্ছলতা। তিনি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর ৮০তম জন্মদিন। আশিতে দাঁড়িয়েও ‘আসি’ বলে চলে যেতে চাইছেন না বরং পিছনে ফিরে জীবনের অভিজ্ঞতাকে দেখে সামনে এগুনোর কথা বলছেন। ধানম-ির বাসায় সারাদিন ধরেই মানুষের আনাগোনা। ফুলেল শুভেচ্ছায় স্বাগত জানাচ্ছেন সকলে। সিরাজুল ইসলাম স্যারের তৃতীয় তলায় সব অতিথিরা এসে ভিড় জমিয়েছেন। কিছুক্ষণ পরই কেক কাটার আনুষ্ঠানিকতা। বললেন, সারাজীবনে যা কাজ করেছি তার গুণগত মান আরও বাড়ানো যেত। আবার এটাও ঠিক যে, আজ যেটাকে মানসম্পন্ন বলে মনে হচ্ছে না, সেটা আজকের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোয় দাঁড়িয়ে মনে করছি। যখন করেছি তখনকার অভিজ্ঞতায় সেটাই ঠিক। এটা ব্যক্তিগত বিষয়। তবে যে স্বপ্ন দেখেছি সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়নি। যার জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করলাম তা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। বিকেলে ইফতারের আগে সবাই মিলে ফুল দিয়ে বরণ করলেন তাঁকে। কেক কেটে মুখে তুলে দিলেন বড় মেয়ে রওনক আরা চৌধুরী খুকু। ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন হায়দার আকবর খান রনো, কামাল লোহানী, মোশরেফা মিশু, আবু সাঈদ খান, সোহরাব হাসান, মুনির সিরাজ, রফিকুল আনোয়ার প্রমুখ। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় শ্রদ্ধেয় সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে।
×