ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঈদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনে র‌্যাব আনসার মোতায়েন

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৪ জুন ২০১৬

ঈদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনে র‌্যাব আনসার মোতায়েন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আসন্ন ঈদে রাজধানীসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি প্রয়োজনে র‌্যাব, আনসার ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে। থাকবে গোয়েন্দা নজরদারিও। পাশাপাশি ঈদের আগে সময় মতো পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য মালিকদের অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এছাড়া ঈদের আগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের একসঙ্গে না দিয়ে পর্যায়ক্রমে ছুটি দিতেও মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার ঈদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে এক বৈঠকে তিনি এই অনুরোধ জানান। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে গার্মেন্টস ও নন-গার্মেন্টস মিলে মোট ৫ হাজার ৭৩৮টি ফ্যাক্টরি রয়েছে। এ ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকদের যাতে পর্যায়ক্রমে বেতন-ভাতাদি দেয়া হয় সে বিষয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে আমরা অনুরোধ করেছি সময়মতো যাতে তারা (মালিকরা) বেতন ভাতা দিয়ে দেন। শ্রমিকদের উৎসব ভাতা যাতে সময়মতো দিয়ে দেয়া হয়, যেটা বিজিএমইএ, বিকেএমইএ মালিকরা নির্ধারণ করেছেন। তারা (মালিকরা) একটা সময় নির্ধারণ করে নিয়েছেন সে অনুযায়ী তারা দিয়ে দেবেন। পোশাক শ্রমিকরা কবে নাগাদ বেতন-বোনাস পাবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তারা এগুলোর ব্যবস্থা নেবেন, ঈদের আগেই পরিশোধ করবেন। গত ২২ মে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কোর কমিটির সভায়, ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে পোশাক শ্রমিকদের বোনাস ২১ রমজানের মধ্যে ও জুন মাসের বেতন ঈদের আগে পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভা শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। এবার ঈদে দেশ ৯ দিনের ছুটির ফাঁদ পড়ে যাচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এজন্য গার্মেন্টস বা মিল-মালিক, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের হয়ত অসুবিধা হয়ে যাবে। সেজন্য বিজিএমইএ-বিকেএমইএর অনুরোধ অনুযায়ী ২, ৩ ও ৪ জুলাই এ তিন দিন শিল্প এলাকা বা মার্কেট চালু আছে এমন এলাকায় ব্যাংক খোলা রাখার অনুরোধ রাখব, এজন্য আমরা ব্যবস্থা নেব। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রেলস্টেশন, ব্রিজ ও অন্যান্য স্পর্শকাতর স্থানে ১৫ হাজারেরও বেশি আনসার মোতায়েন থাকবে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, লম্বা ছুটি হচ্ছে, শিল্প-কলকারখানাগুলোতে আমরা এ অনুরোধও করেছিÑ এ সময়ে তাদের নিজস্ব সিকিউরিটিও যেন থাকে। এ ছুটিতে যাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে। তারপর যেখানে যা দরকার সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত থাকবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে যে পরিস্থিতি ছিল আজকে সেই পরিস্থিতি নেই, ক্রমান্বয়ে সব অডগুলো (বাধা-বিঘœ) মোকাবেলা করে আমরা একটা ভাল জায়গায় আসছি। আমাদের পুলিশ অফিসার, আমাদের নিরাপত্তায় যারা নিয়োজিত তারা অনেক অভিজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা মনে করছি আগামী ঈদ আমাদের জনগণ সুন্দরভাবে উপভোগ করবেন। শ্রমিক ভাইয়েরা নিরাপদে বাড়ি যাবেন এবং ফিরে আসবেন। ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ অজ্ঞান ও মলমপার্টির খপ্পরে পড়ার কথা জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, সেজন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত অজ্ঞান ও মলমপার্টির ২০০ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঈদের সময় যানজটমুক্ত রাখার জন্য ঢাকায় চারটি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। শুধু পুলিশ নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যার যেখানে প্রয়োজন র‌্যাব, আনসার, বিজিবি সেখানে থাকবে। লঞ্চঘাটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে নৌ-পুলিশ, ডিএমপি, র‌্যাব নিয়োজিত থাকবে। শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার জন্য শিল্প পুলিশসহ গোয়েন্দা পুলিশ সবসময় অবস্থান করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মহাসড়কে যানজট নিরসনে দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। শিল্প এলাকায় অগ্নিনিরাপত্তা ও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্ধার সরঞ্জামাদি ডুবুরিসহ মোবাইল রেসপন্স টিমের ৫০টি এ্যাম্বুলেন্স থাকবে। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক, প্রতিনিধিসহ বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান, বিজিএমইএ, শ্রম মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
×