ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জামালপুরে টিআরের ৩শ’ টন চাল গায়েব

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২৪ জুন ২০১৬

জামালপুরে টিআরের ৩শ’ টন চাল গায়েব

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ২৩ জুন ॥ সরিষাবাড়ীতে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচী-২য় পর্যায় টিআর (বিশেষ) প্রকল্পের কাজ নামে আছে কামে নেই। এ প্রকল্পে ৩০০ টন খাদ্যশস্য (চাল) বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নামেমাত্র প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দকৃত প্রায় সমুদয় খাদ্যশস্য (চাল) আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, মামুনুর রশিদ জোয়ার্দ্দার এমপিকে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচী (২য় পর্যায়) টিআর (বিশেষ) প্রকল্পে ৩০০ টন খাদ্যশস্য (চাল) বরাদ্দ দেয়া হয়। মেষ্টা ও তিতপল্যা ইউনিয়নের জন্য ৬৯ টন, সরিষাবাড়ী উপজেলার ৫টি রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পে ৭২ টন ও সোলার বিতরণের জন্য ১৫৯ টন চাল রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ৫টি রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পে ৭২ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্পগুলোর মধ্যে পোগলদিঘা ইউনিয়নের চর পোগলদিঘা জলিলের খেয়া ঘাট হতে রেলক্রসিং পর্যন্ত রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২৫ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও এখন পর্যস্ত কোন কাজ হয়নি। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছুদিন আগে ২/৩ জন লোক এসে এ রাস্তাটি পরিমাপ করে এবং রাস্তা সংলগ্ন জমির মালিকদের কাছে থেকে স্বাক্ষর নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি। একই ইউনিয়নের দামোদপুর গ্রামের সমবায় বাজার হতে দক্ষিণে নজরুলের বাড়ি পর্যন্ত ৭ টন ও বটতলা হতে যমুনা উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণ কাজের প্রকল্পে ১৪ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এ প্রকল্প দুটির প্রথমটির মাঝে মধ্যে বালু ফেলে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। অন্য প্রকল্পটির প্রথম দিকে সামান্য বালু ফেলা হলেও রাস্তাটির মাঝ পর্যন্ত শুধু গর্ত ভরাট করে কাজ শেষ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রকল্প দুটিতে ৮/১০ জন শ্রমিক দিয়ে ৩/৪ দিন কাজ করানো হয়েছে। এ প্রকল্পে সভাপতি লিটন মিয়া জানান, ডিলার নগদ টাকা দিয়েছে তাই দিয়ে সে কাজ করছি। টিআর কি না-তা আমি জানি না। প্রায় ২ মাস আগে মাটি কাটা হয়েছে। তাই মাটি সরে গেছে। ভাটারা ইউনিয়নের জয়নগর মাদ্রাসা থেকে সাপলেঞ্জা পর্যন্ত রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৩ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। স্থানীয়রা জানায়, কিছু দিন আগে ভাটারার শাহীন ডিলার ৭/৮ শ্রমিক দিয়ে ৩ দিন কাজ করিয়েছে। এ প্রকল্পে নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে বরাদ্দের সিংহভাগ আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে শাহীন ডিলার জানান, রাজু ডিলার তাকে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের মতো এ প্রকল্পটির কাজও করতে দিয়েছে। ভাটারা ইউনিয়নের মাগুরিয়াপাড়া গ্রামে ঈদগাহ মাঠ হতে সামছুল হকের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৩ মে.টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এ প্রকল্পের চিত্র একই রকম। অপরদিকে সোলার বিতরণের জন্য ১৫৯ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও এ বিষয়ে সঠিক কোন জবাব দিতে পারেনি প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে রাজু ডিলার জানান, প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ হয়নি। সব বরাদ্দও উত্তোলন করা হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হামিদুল হক জানান, এমপির প্রকল্পগুলোর দেখাশোনা ও শ্রমিকদের বিলসহ অন্যান্য বিষয়ের কাজ রাজু ডিলার নিজে করে থাকে। প্রকল্পের কাজ শেষ। সকল বরাদ্দও উত্তোলন করা হয়েছে। তবে কিছু সোলার বিতরণ করা বাকি রয়েছে।
×