ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যর্থ হলে রফতানি বাজার হারাবে দেশ

১ জুলাই থেকে রফতানি পণ্যের ওজনের সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২৪ জুন ২০১৬

১ জুলাই থেকে রফতানি পণ্যের ওজনের সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপার্টার ॥ সমুদ্রে নাবিকদের নিরাপত্তা এবং জাহাজে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য না নেয়ার জন্য আগামী ১ জুলাই থেকে রফতানি পণ্যবাহী কন্টেনারের ওজন ভেরিফাই সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করেছে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)। ফলে এদিন থেকে পণ্যবাহী কন্টেইনারের ওজন ভেরিফাই সার্টিফিকেট ছাড়া জাহাজের ক্যাপ্টেন বন্দর ছাড়তে পারবন না। আইএমও রুলস অনুযায়ী, শিপার (পণ্য জাহাজীকরণের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান) পণ্যসহ কন্টেনারে গ্রস ওজন ভেরিফাই সার্টিফিকেট দিলেও বাংলাদেশে ভেরিফাই সার্টিফিকেট দেবে দুটি সংস্থা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স এ্যাসোসিয়েশন এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিপারের দায়িত্ব পালনকারী সংস্থা ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপোস এ্যাসোসিয়েশন এই সার্টিফিকেট দেবে। নৌপরিবহন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে আইএমওর সেফটি অব লাইফ এ্যাট সি (সোলাস) কনভেনশন রেগুলেশন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাধ্যতামূলক করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে বাংলাদেশেও এ নির্দেশনা কার্যকরের ঘোষণা দেয়া হয়। মূলত ঘোষণার চেয়ে বেশি পণ্য জাহাজীকরণের ফলে বিভিন্ন সময় নৌপথে দুর্ঘটনা ঘটায় পণ্য পরিবহনে সোলাস কনভেনশন বাধ্যতামূলক করেছে আইএমও। আন্তর্জাতিক এ সংস্থার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করে বাংলাদেশের নৌ-অধিদফতর। বাংলাদেশের নিয়মানুযায়ী, পণ্য জাহাজীকরণে বিভিন্ন রফতানি পণ্যের ওজন একই সঙ্গে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু নতুন নিয়মে পণ্য জাহাজীকরণে আরও কয়েকটি কাজ যুক্ত হয়েছে। এসব কারণে ডব্লিউভিসি প্রদানে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দ্রুত সমস্যা সমাধানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসার পাশাপাশি পণ্য জাহাজীকরণে কাটঅফ টাইম (নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য জাহাজীকরণ ব্যবস্থা) নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে শিপার প্রতিষ্ঠানগুলো। নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর এম জাকিউর রহমান ভূঁইয়া বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে রফতানি কন্টেনারের গ্রস ওজন ভেরিফাই করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইএমও রুলস অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিপার ওজন যাচাই সনদ দেবে। তবে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে শিপারকে তা নির্ধারণ করতে হবে। কারণ রফতানি পণ্যবাহী কন্টেনার জাহাজীকরণে কয়েকটি পক্ষ কাজ করে। বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপোটস এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন শিকদার বলেন, আমরা বলছি ওজন যাচাই করার সক্ষমতা আছে। কিন্তু সুষ্ঠুভাবে কতটা করতে পারবো তা সঠিক বলতে পারছি না। নতুন পদ্ধতি কার্যকর করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে দিক নির্দেশনা নিয়ে সমস্যা আছে। তিনি বলেন, আমরা আগে যেভাবে ওজন যাচাই করতাম সেভাবে হলে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু এখন কার্গো অফডকে আসার পর স্টাফিং করে ওজন যাচাই করে ডিপোতে রাখতে হবে। তারপর জাহাজ আসলে কার্গো পাঠাতে হবে। এটা আমাদের জন্য খুব সহজ হবে না। বিষয়টি নিয়ে বেসরকারী ডিপোর মালিকরা উদ্বিগ্ন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছি। কি করা যায় তা নিয়ে আমরা সবাই আবার বৈঠকে বসবো। বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স এ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক (পোর্ট এ্যান্ড কাস্টমস) খায়রুল আলম সুজন বলেন, ওজন যাচাই সনদ পদ্ধতি চালু করতে কোন আপত্তি নেই।
×