ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আবু সুফিয়ান কবির

রুহীর পথচলা

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ২৩ জুন ২০১৬

রুহীর পথচলা

রুহী আজ থেকে ১৫ বছর আগে র‌্যাম্প ও প্রিন্ট মিডিয়ায় মডেলিং শুরু করেন। তারপর এক সময় পেয়ে যান ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় মডেলিং করার সুযোগ। সম্ভবত এ বিষয়টি একজন মডেলকে অভিনয়ে আগ্রহী করে তুলে। আর সেটাই ঘটেছিল বর্তমান সময়ের আলোচিত চলচ্চিত অভিন শিল্পী রুহীর আসার ক্ষেত্রেও। সর্বদা হস্যময়ী এই মডেল এক সময় ডাক পেয়ে যান নাটকে। সেই নাটক থেকে আবার চলচ্চিত্রে। র‌্যাম্প থেকে ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় মডেলিং তারপর নাটকে অভিনয় এবং সবশেষে চলচ্চিত্রে অভিনয়। এভাবেই রুহী সফল হয়ে উঠছেন। তার সর্তকগতিতে ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় হাঁটি হাঁটি পায়ে বিচরণ করে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার কারণে। তার সঙ্গে আছে তার নিষ্টা, একাগ্রতা, সতর্কতা ও সততা। রুহী এখন একজন জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পীর নাম। সদ্য তিনি ধানমন্ডিতে গৃহসুখন বিউটি পার্লারের মেহেদী উৎসবের উদ্বোধন করেন। সেখানে তার সঙ্গে কথা হয় তার অভিনয় ও পারিবারিক জীবনের নানা বিষয় নিয়ে। ২০০৭ সালে অমিতাভ রেজার পরিচালনায় প্যারাসুটের কান্ট্রি ক্যাম্পেনের একটি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে মিডিয়াতে রুহীর ক্যারিয়ারের উত্থান। এছাড়া দেশের নাম করা বুটিক হাউস বাংলার মেলা, মায়াসির, রণজিৎ তাঁতি, কে-ক্র্যাফট, ড্রেসিডেল, মান্ত্রা এবং আডংয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের মডেল হয়ে কাজ করেন তিনি। এরপর তিনি প্রথম অভিনয় করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে আহমেদ সুস্ময় পরিচালিত অপরিচিতা নাটকে। এরপর অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিমের বৃত্তের ভিতরে একা, আহমেদ সুম্ময়ের স্বপ্নমুখ, রিপন নবীর অচেনা মানুষ নাটকে। মাত্র এক মাস আগে মডেল ও অভিনয় শিল্পী রুহী স্বামী মনসুর আলী ও নবজাতক রুহানকে নিয়ে ঢাকায় আসেন। ইচ্ছা ছিল ঈদের পর আবার লন্ডনে ফিরে যাবেন। কিন্তু ঢাকায় এসে পাঁচ মাস বয়সের রুহান ঢাকার আবহাওয়র সঙ্গে খাপ খাইয়ে উঠতে পারছিল না। তাই ঈদের আগেই আবার লন্ডনে ফিরে গেলেন গত ১৯ জুন। ঢাকায় ফিরবেন নবেম্বরের মাঝামাঝি। তখন কিছু কাজ করবেন বলে জানালেন রুহী। ছোট রুহানকে নিয়ে রুহীর ভবানা কী। এই পাঁচ মাসের শিশু বড় হয় কি মায়ের মতো ক্যামেরার সামনে অভিনয় করবে নাকি বাবার মতো পর্দার অন্তরালে থেকে পরিচালনার কাজ করবেন। এর জবাবে রুহী বলেন এখন সে খুব ছোট। তারপরও যখন আমি মোবাইল নিয়ে ওর সামনে যাই তখন সে ছবি তোলার জন্য নিত্যনতুন অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। বিষয়টি আমাকে অভিভূত করে। আমি বলতে চাই ও এখন ছোট, পড়ালেখা করুক তারপর দেখা যাবে সে কোন পদটা বেছে নিচ্ছে। এমনও তো হতে পারে সে আমাদের এই জগতে না এসে অন্যভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাকে প্রেসার দিয়ে কোন কিছু চাপিয়ে দেয়া যাবে না। বরং সে তার পছন্দমতো জীবন বেছে নেবে এই স্বাধীনতা আমরা ওকে দিতে চাই। চলচ্চিত্রে অভিনয় প্রসঙ্গে রুহী বলেন, ‘মনসুর আলীর পরিচালনায় ‘সংগ্রাম’ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে আমি অনুপম খেরের মতো বড়মাপের অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাই। বিষয়টি আমার অভিনয় জীবনে বিরাট পাওয়া। উনার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। সংগ্রাম ছবিটির কাহিনী আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপট ও মুক্তিযুদ্ধের নানা দিক নিয়ে তৈরি। এখানে দুই সম্প্রদায়ের দুই নারী পুরুষের প্রেমের বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হবে। তাছাড়া আরও কয়েকটি চলচিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হওয়ার কথা । ‘সংগ্রাম’ মুক্তি পাওয়ার পর বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয়ের অফার এসেছে। তবে আমি আগে স্ক্রিপটা দেখে পছন্দ হলেই তবে অভিনয়ে সম্মতি দিচ্ছি। আমি চাই এমন সব চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে, যার কাহিনী মার্জিত রুচির হবে। কলকাতায় মহুয়া চক্রবর্তী পরিচালিত ‘গ্ল্যামার’ চলচ্চিত্রে কাজ করার কথা ছিল রুহীর। সে প্রসঙ্গে এই অভিনয় শিল্পী বলেন, চলচ্চিত্রটির প্রযোজক পরিবর্তন হওয়ার কারণে তার কাজ থেমে যায়। শীঘ্রই আবার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এতে আমার সঙ্গে কাজ করবেন পরমব্রত ও অর্পিতা। এছাড়া কলকাতার ‘স্পর্শ’ নামের একটি ছবিতে কাজের ব্যাপারে চূড়ান্ত কথা হয়েছে। এতেও আমার নায়ক থাকছেন পরমব্রত। নতুন অভিনয় শিল্পীদের প্রসঙ্গে রুহী বলেন, যার ভেতরে প্রতিভা আছে, কাজের প্রতি দরদ আছে, মনের গভীরে ভালবাসার বসত আছে, ভালবাসা ও ন্যায়নিষ্ঠা আছেÑ তাকে কেউ কোনভাবে আটকে রাখতে পারবে না। যখন তার সুযোগ হবে তখন সে সফল হবে। হতে বাধ্য এটাই নিয়ম। এরই নাম পথচলা।
×