ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এক যে আছে নায়িকা

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ২৩ জুন ২০১৬

এক যে আছে নায়িকা

সঙ্কটেই ছিলেন তিনি। কিছুটা বিপর্যস্ত। ফিরেছেনও ঠিকঠাক। অনেকটা দাপিয়ে। টলিউড পর্দায় ‘ষড়রিপু’ এসেছে এই সতেরোতে, ২৭টি প্রেক্ষাগৃহে। গত ক’দিনেই তাই ওদের মুখে মুখেও রটে গেছে একটা নাম, সোহানা সাবা। বিস্তারিত লিখেছেন- মাহবুবুর রহমান সজীব সাবা তখন ‘বৃহন্নলা’য় চড়ে ভারতের একটি উৎসবে। অন্য অনেকের মতো পরিচালক অনিকেতও এসেছেন সেখানে। দেখেছেন ‘বৃহন্নলা’, মুরাদ পারভেজের নির্মাণ। অন্য অনেকেও দেখেছেন। কিন্তু হলো কী, পরিচালকের চোখ আটকে গেল নায়িকাতে। অভিনয়ও বেশ। কিছু তো একটা করা লাগে। ভাবলেন হয়ত এমন। জানালেন অন্য পরিচালক বন্ধুকে। তিনিও দেখলেন বেশকিছু কাজ। পছন্দ হয়ে গেল। প্রথমবারের মতো ডাক পেলেন সাবা, টলিউডে। পরিচালক, ওই যে বন্ধু, অয়ন চক্রবর্তী। ‘ষড়রিপু’র শুরুতেই দর্শক জেনে যায়, দু’ঘণ্টার মধ্যে শহরে ঘটে গেছে পাঁচ-পাঁচটা হত্যাকা-। মুহূর্তেই একটা থমথমে মেজাজ সৃষ্টি হয় সিনেমা হলের ভেতর। কী ঘটতে যাচ্ছে! কী ঘটবে! জোড়া চোখ টানটান, ঘামে জবুথবু। একনাগাড়ে দেখেই যেতে হবে বাকি গল্পটা। ‘কাম’, ‘ক্রোধ’, ‘লোভ’ তো আছেই; ‘ষড়রিপুর ছক থেকে খুন’, ‘কালিনানের ইতিহাস’, ‘যিশুর রেজারেকশন’- সবই আছে। ক্রাইম থ্রিলার বলে কথা! অথচ, স্ক্রিপ্ট মাত্র দু’ঘণ্টার! গুছিয়ে নিতে পেরেছেন ঠিকই অয়ন। মেধাবী তিনি। ছবির শরীরে কোথাও একটু মেদ জমতেও দেননি। আরেকটু গল্প অবশ্য বলে দেয়া যায়। শিল্পপতি যোশুয়া বেনের স্ত্রী রাকা চৌধুরী, ‘সুন্দরী’, ঠা-া মাথায় ছক কষতে থাকেন স্বামীকে খুনের। এদিকে, অন্য কেউ আঁকছে যে তার মৃত্যুছক, সেটা টেরও পান না। রাকার শখ হীরা সংগ্রহ করা। হীরাবিষয়ক জ্ঞানও তার প্রচুর। সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছে এমনটাই। যদিও সাবা নিজেকে ‘সুন্দরী’ না মেনেই, পরিচালক তাঁকে সুন্দর করে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন, বলেছেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন; তর্কসাপেক্ষে সেটা হয়ত মেনে নেয়া যেতেও পারে। কিন্তু, রাকা চৌধুরীর সৌন্দর্যের ব্যাপারে মতভেদ থাকার যুক্তি নেই। সেটা বুঝতে পেরেই কিনা ‘ষড়রিপু’ নিয়ে খুব উচ্ছ্বসিত সাবা। বলেছেনও, ‘এতে ঝলমলে, আবেদনময়ী ও রহস্যময়ী একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি’। একজন অভিনয়শিল্পী সবসময়ই চেষ্টা করেন, নতুন করে নিজেকে প্রকাশ করতে। সাবাও ঠিক তাই-ই করেন। রাকা চরিত্রটি তারই ধারাবাহিকতা। নতুবা, রজতাভ দত্তের মতো অভিজ্ঞ আর গুণী অভিনেতা যেখানে বিপরীতে, সেখানে পারফেক্টভাবে কাজটা বের করে আনা খুব কঠিনই হতো। চিরঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়, রুন্দ্রনীল ঘোষ, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, কনিকা ব্যানার্জি, সুদীপ্তা চক্রবর্তী প্রমুখও আছেন অভিনয়ে। এ সিনেমার গান লিখেছেন শ্রীজাত। সঙ্গীত পরিচালনায় দেব সেন। পর্দায় রাকা চরিত্রের গ্ল্যামার, আভিজাত্য, রহস্যময়তা ঠিকঠাক ফুটে উঠেছে। এমন আরও বিভিন্ন হিসেব কষে সিনেমা হলে ভিড়ও জমে দর্শকের। সাবাও খুব প্রিয়ই হয়ে উঠছেন তাদের কাছে। এটাকে উত্তম সাফল্যই বলা চলে। কলকাতার পত্রিকাগুলোও লিখছে খুব, বলছে ওখানকার দর্শকের ভাললাগার কথা। গত ১৭ জুন সন্ধ্যায় সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে কলকাতায়, প্রথমবারের মতো। সোহানাও ছিলেন সেখানে। ফিরেও এসেছেন এরই মধ্যে। সামনেই ঈদ। হাতে প্রচুর কাজ। ফেরার চাপ তো আছেই। দেবের বিপরীতে অভিনয় শুরুর কথাও রয়েছে অক্টোবরে। যৌথ প্রযোজনার ছবি এটি। রোমান্টিক ঘরানার। তবুও, ‘চোখের জল’ নাম শুনে কেউ কেউ প্রথমেই খুব করুণ একটা গল্প ভেবেই নেবেন হয়ত। হতেই পারে, করুণ কোন রোমান্টিক গল্প। কিংবা, নাও তো হতে পারে। ছবিটির কাজ সম্পূর্ণ হলে, মুক্তি পেলে, দর্শক তার ধারণা মিলিয়ে নেয়ার সুযোগ পাবে। সে যাই হোক, একের পর এক এমন ভাল প্রস্তাব, ‘ভাল লাগছে’ সমেত একটু হাসি ছিটিয়ে তো দিতেই পারেন সোহানা! ছবিটিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন কিছুদিন আগে। বলেছেন, ‘কমার্শিয়াল সিনেমা হলেও অভিনয়ের যথেষ্ট সুযোগ আছে।’ ‘ওরা যথেষ্ট খেটে-খুটে একজন অভিনেত্রী খুঁজে বার করেছে’ যুক্তিতে খুব সানন্দেই প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন তিনি।
×