ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা প্রথম ওয়ানডে

প্লাঙ্কেটের ছক্কায় নাটকীয় টাই

প্রকাশিত: ০৭:১৯, ২৩ জুন ২০১৬

প্লাঙ্কেটের ছক্কায় নাটকীয় টাই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা, নাটকীয়তার খেলা। নটিহংহামে পঞ্চাশ ওভারের এক ম্যাচে অনিশ্চয়তা আর নাটকীয়তা যেন ডালা নিয়ে হাজির হলো। যেখানে শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ানডে ইতিহাসের ৩৩তম ‘টাই’র জন্ম দিলেন লিয়াম প্লাঙ্কেট। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম দ্বৈরথে শ্রীলঙ্কার নিশ্চিত জয় থামিয়ে দিলেন ইংল্যান্ডের এই ডাকসাইটে তারকা। দশ নম্বর ব্যাটসম্যান প্ল্যাঙ্কেট যখন ক্রিজে আসেন জয়ের জন্য ২৬ বলে তার দলের প্রয়োজন ৫২, ‘ডেথ ওভারে’ দারুণ বল করতে থাকা লঙ্কান পেসার সুরাঙ্গা লাকমল আর নুয়ান প্রদীপের বিপক্ষে শেষ দুই ওভারে চাই ৩০। ৪৯তম ওভারে লাকমলকে দু-বার সীমানা ছাড়া করেন ক্রিস ওকস। আসে ১৬ রান, শেষ ওভারে চাই ১৪। প্রদীপের প্রথম ৫ ডেলিভারি থেকে এলো ৭, শেষ বলের ছক্কাই কেবল ইংলিশদের হার থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে। প্রদীপকে হওয়ায় ভাসিয়ে ঠিকই সীমানার বাইরে ছুড়ে দিলেন প্ল্যাঙ্কেটÑ হোয়াট এ ম্যাচ! হোয়াই এ ‘টাই’!! ১১ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২২ রান নিয়ে অপরাজিত ‘টাই নায়ক’ প্ল্যাঙ্কেট। তবে পরশু পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে নাটকীয়তা ছিল রন্ধ্রে রন্ধ্রে। দলীয় ৭২ রানে পঞ্চম এবং ৮২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারানোর পরও ২৮৬ রান করতে প্ল্যাঙ্কেটের সঙ্গে রোমাঞ্চের জন্ম দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ক্রিস ওকসের। ইংলিশ ক্রিকেটে ক্রমশ জ্বলে ওঠা এ অলরাউন্ডার ৮ নম্বরে নেমে ৯২ বলে ৪ চারের সাহায্যে খেলেছেন ৯৫ রানের দারুণ এক ক্ল্যাসিক্যাল ইনিংস। দুর্ভাগ্য অপরাজিত থেকেও দলকে জেতাতে পরেননি, তবে শ্রীলঙ্কার নিশ্চিত জয় যে থামিয়ে দিয়েছেন, সেটিই বা কম কিসে? ৯৯ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় জস বাটলারের ৯৩ রানের ইনিংটাই ইংল্যান্ডকে পথে ফেরায়। তাকে ভাল সঙ্গ দেন অধিনায়ক ইয়ন মরগান। ৪৯ বলে ৭ চারের সাহায্যে করেন ৪৩ রান। লঙ্কান পেসাররা এর আগে স্বাগতিক টপঅর্ডারকে একেবারে নাজেহাল করে ছাড়েন। লাকমল, এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, নুয়ান প্রদীপ প্রত্যেকে নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। দলীয় ৩০ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন জেসন রয় (৩), এ্যালেক্স হেলস (৪), জো রুট (২) ও জনি বেয়ারস্টো (৩)। ২০০৯ সালের পর এই প্রথম ইংল্যান্ডের টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক থেকে বঞ্চিত হলেন। এরপরই বাটলার-ওকস-প্ল্যাঙ্কেটদের ওই ব্যাটিং-গল্প গাথা। তার আগে ৫৬ রানে তৃতীয় ও ১৮৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কাকে চ্যালেঞ্জিং পুুঁজি এনে দেন ম্যাথুস ও সেক্কুগে প্রসন্ন। অধিনায়ক ম্যাথুস ১০৯ বলে ৫ চারের সাহায্যে করেন সর্বোচ্চ ৭৩ রান। ঝড় তোলেন সেক্কুগে, ২৮ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ৫৯ রান করে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোন লঙ্কান ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির ইনিংস এটি। এর আগে ২০১৪ সালে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন থিসারা পেরেরা। দীনেশ চান্দিমাল ৩৭, কুশল পেরেরা ২৪, পারভেজ মাহরুফ ৩১* ও দাশুন শানাকা করেন ২০ রান। ইংল্যান্ডের হয়ে তিন পেসার ওকস, ডেভিড উইলি ও প্ল্যাঙ্কেট প্রত্যেকে নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। চলতি ২০১৬ সালে প্রথম এবং ওয়ানডে ইতিহাসের এটি ৩৩তম ‘টাই’। এই ম্যাচের আগে অকল্যান্ডে সর্বশেষ ২০১৪Ñএর জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড-ভারত ম্যাচটি ‘টাই’ হয়েছিল। বামিংহামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে শুক্রবার। স্কোর শ্রীলঙ্কা ॥ ২৮৬/৯ (৫০ ওভার; ম্যাথুস ৭৩, সেক্কুগে ৫৯, চান্দিমাল ৩৭, মাহরুফ ৩১*, কুশল পেরেরা ২৪, শানাকা ২০, কুশল মেন্ডিজ ১৭; ওকস ২/৫৬, উইলি ২/৫৬, প্ল্যাঙ্কেট ২/৬৭, মঈন ১/৬৯) ইংল্যান্ড ॥ ২৮৬/৮ (৫০ ওভার; ওকস ৯৫*, বাটলার ৯৩, মরগান ৪৩, প্ল্যাঙ্কেট ২২*, মঈন ৭, উইলি ৭; ম্যাথুজ ২/২২, লাকমল ২/৬৫, প্রদীপ ২/৬৪, সেক্কুগে ১/৪৩, মাহরুফ ১/৫৯) ফল ॥ ‘টাই’ ম্যাচসেরা ॥ ওকস (ইংল্যান্ড) সিরিজ ॥ পাঁচ ওয়ানডের সিরিজ চলমান
×