ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুক্তরাষ্ট্রকে খেলা শিখিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ২৩ জুন ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্রকে খেলা শিখিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একবার নয়, দুইবার নয়, তিনবার। হ্যাঁ, টানা তিন তিনবার তিনটি বিশ্বসেরা টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠার রেকর্ড গড়েছে আর্জেন্টিনা। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ, ২০১৫ কোপা আমেকিার পর এবার শতবর্ষী বিশেষ কোপা আমেরিকারও ফাইনালে নাম লিখিয়েছে দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশ। বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের হাউস্টোনের এনআরজি স্টেডিয়ামে আসরের প্রথম সেমিফাইনালে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা। গোটা ম্যাচে একতরফা আধিপত্য বিস্তার করে খেলে জেরার্ডো মার্টিনোর দল। রীতিমতো জার্গেন ক্লিন্সম্যানের দলকে ফুটবল শেখান মেসি, হিগুয়াইনরা। দাপুটে জয়ে আর্জেন্টিনার হয়ে জোড়া গোল করেন তুখোড় ফর্মে থাকা গঞ্জালো হিগুয়াইন। একটি করে গোল করেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি ও এজিকুয়েল লাভেজ্জি। টানা তৃতীয় ফাইনাল নিশ্চিত করার পর আর্জেন্টিনার লক্ষ্য এখন একটাইÑ শিরোপা জয়। আগের দুইবারই ফাইনালে হারের বেদনায় পুড়তে হলেও এবার আশাবাদী দলটি। পুরো দলই ট্রফি জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন মেসি। ২৩ বছর পর আর্জেন্টিনা প্রথম শিরোপা জিততে পারে কিনা তা জানতে চোখ রাখতে হবে ফাইনালে। বাংলাদেশ সময় আগামী সোমবার সকালে বহুল কাক্সিক্ষত ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। এই লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ হতে পারে গত বছর ফাইনালের প্রতিপক্ষ চিলি। আজ সকালে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বলিভিয়ার বিরুদ্ধে যদি চিলি জিতে থাকে তাহলে ফাইনালের মঞ্চে আবারও দেখা হবে আর্জেন্টিনার সঙ্গে। সেক্ষেত্রে আলবেসেলিস্তাদের প্রতিশোধ নেয়ার উপলক্ষ্যটা আরও মধুর হবে। বরাবরের মতোই সেমিফাইনালেও মেসি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তিনি শুধু নিজে গোল করেই থেমে থাকেননি, আর্জেন্টিনার প্রথম গোলের মূল কারিগরও তিনি। ম্যাচ শুরুর তৃতীয় মিনিটে মেসির দুর্দান্ত এক পাসে ইজিকুয়েল লাভেজ্জি সহজেই গোল করেন। এরপর ৫০ মিনিটে হিগুয়াইনকে দিয়ে করিয়েছেন তৃতীয় গোল। ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে হিগুয়াইনের দ্বিতীয় গোলেও তার ভূমিকা ছিল। আর নিজে করেছেন ফ্রিকিক থেকে অবিশ্বাস্য গোল। সবমিলিয়ে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে সর্বকালের সেরা গোলদাতার রেকর্ড গড়ার রাতে মেসি ছিলেন স্বমহিমায় উজ্জ্বল। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায় ম্যাচের শুরুতেই। তিন মিনিটের মাথায় মেসির দারুণ এক পাস থেকে হেড করে বল জালে জড়ান লাভেজ্জি। ৩২ মিনিটে মেসি নিজেই আরেকটি গোল করেন ফ্রিকিক থেকে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র একবারও শট নিতে পারেনি আর্জেন্টিনার গোলপোস্ট লক্ষ্য করে। প্রথমার্ধের প্রায় পুরো সময়ই বলের দখল ছিল আর্জেন্টিনার কাছে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও আর্জেন্টিনা করে গোল দিয়ে। ৫০ মিনিটে ম্যাচের তৃতীয় গোল করেন হিগুয়াইন। স্বাগতিকদের রক্ষণভাগের ভুলে বল পেয়ে বেশ খানিকটা দৌড়ে এসে শট নেন তিনি। প্রথমে শটটা রুখে দেন যুক্তরাষ্ট্রের গোলরক্ষক ব্রাডলি গুজান। কিন্তু ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন হিগুয়াইন। ৮৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যেতে পারতেন মেসি। কিন্তু তার শট দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর অবশ্য মেসির পাস থেকে বল পেয়ে আর্জেন্টিনার পক্ষে চতুর্থ গোলটি করেন হিগুয়াইন। ম্যাচ শেষে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়তে পেরে সতীর্থদের ধন্যবাদ জানান মেসি। আর আর্জেন্টাইন কোচ জেরার্ডো মার্টিনো শিষ্যদের প্রশংসা করে বলেছেন, ছেলেরা সবাই নিজের প্রতি দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেছে। আমরা ফাইনালের যোগ্য দল। আশা করছি এবার আমরা ট্রফি নিয়েই দেশে ফিরতে পারব। যুক্তরাষ্ট্রের কোচ জার্গেন ক্লিন্সম্যান বলেছেন তার দল আর্জেন্টিনাকে যথাযথ সম্মান দেখিয়েছে বলেই হয়ত একটি শটও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে মারতে পারেনি। জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা বলেন, আমি খেলোয়াড়দের বলেছি এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমাদের এসব ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের অবশ্যই মাথা উঁচু করে মাঠ থেকে বের হওয়া উচিত। আর্জেন্টিনা আসরেই একটি বিশেষ দল। শিরোপা জয়ের যোগ্য দাবিদার তারা। এদিকে ফাইনালে খেলা হচ্ছে না আর্জেন্টিনার লাভেজ্জির। কনুইয়ের চোট কারণে ছিটকে পড়েছেন সেমিতে গোল করা এই ফরোয়ার্ড।
×