ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ হলো চিত্র প্রদর্শনী ‘আমরা সবাই রাজা’

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৩ জুন ২০১৬

শেষ হলো চিত্র প্রদর্শনী ‘আমরা সবাই রাজা’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরস্কার প্রদানের মধ্যদিয়ে শেষ হলো কাশফুল আর্ট স্কুলের বার্ষিক চিত্র প্রদর্শনী ‘আমরা সবাই রাজা’। শিশুদের মনন, চিন্তন ও সৃজনী সত্তার প্রকাশ ঘটানোর অভিপ্রায়ে কাশফুল আর্ট স্কুল স্বতঃস্ফূর্তভাবে অন্যান্য শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি চিত্রকলার উপরও শিক্ষা দান করে থাকে এবং প্রতিবছর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করে। তারই ধারাবাহিকতায় স্কুলের ৩৪ শিশুর আঁকা চিত্রকর্ম নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারি দুইয়ে সপ্তাহব্যাপী এক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। ১৭ জুন শুরু হওয়া ‘আমরা সবাই রাজা’ শীর্ষক এই চিত্র প্রদর্শনীর শেষ দিন ছিল বুধবার। চারুকলা অনুষদের খোলা প্রাঙ্গণে এদিন সকালে আয়োজন করা হয় সমাপনী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন চিত্রশিল্পী ড. কাজী মোজাম্মেল হোসেন। প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ৩৪ শিশুচিত্রশিল্পীর আঁকা ৪৫টি চিত্রকর্ম থেকে বাছাই করে দশজন খুদে চিত্রশিল্পীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। দশজনকে দেয়া হয় একই মানের সেরা দশটি পুরস্কার। পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন- এঞ্জেলিকা কস্তা, জুলিয়েট ডি ক্রুজ, উনাইস মোঃ ফাইয়াজ মিল্কি, অরিদ্র দত্ত, নাঈম আর রহমান খান, রুবাইয়া মমতাজ, মার্সেল জুপিটর গমেজ, নাহিয়ন উর রহমান, তৃজন ম্যাথিও রোজারিও, সাদেকুন আহছান নাহিন। পুরস্কার প্রদান শেষে প্রধান অতিথি অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, ছোট্ট শিশুরা যে এত সুন্দর ছবি আঁকতে পারে তা চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না। সত্যিই শিশুশিক্ষার্থীদের আঁকা এ সব ছবি আমাকে মুগ্ধ করেছে, আনন্দ দিয়েছে। এই প্রদর্শনীতে যে সব শিশু অংশ নিয়েছে তাদের প্রত্যেকের কাজ এত সুন্দর দেখলে নয়ন জুড়িয়ে যায়। প্রদর্শনীর সবার ছবিই খুব ভাল হয়েছে। যেহেতু এ আয়োজনে একটা প্রতিযোগিতা আছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি গান, ছবি আঁকা, নাচÑমোটকথা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কোন না কোনটার সঙ্গে জড়িত থেকে সেগুলো করার চেষ্টা করবে। মনে রাখবে, শুধু মাত্র লেখাপড়া শিখলেই পূর্ণাঙ্গ মানুষ হওয়া যায় না। নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতিও আগ্রহ থাকতে হবে এবং সেই সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে। প্রকৃতিকে চিনতে হবে, জানতে হবে এবং ভালবাসতে শিখতে হবে। বিশেষ অতিথি চিত্রশিল্পী কাজী মোজাম্মেল হোসেন বলেন, এ প্রদর্শনীতে আমরা চার পুরুষ একত্রিত হয়েছিÑএটা আনন্দের কথা। ছোট্ট শিল্পীদের হাসিমুখ আমাকে খুব আনন্দ দিয়েছে। তিনি শিশুদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা ছবি আঁকা চালিয়ে যাবে। একদিন বড় শিল্পী হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাশফুল আর্ট স্কুলের পরিচালক নিপা গোমেজ। মহানগরে বড় হওয়া এই শিশুদের অনবদ্য সব চিত্রকর্মতে উঠে এসেছে আবহমান বাংলার চিরসবুজ-সজীব রূপ। শহরে বড় হওয়া এই সব নাগরিক শিশুরা শহুরে জীবন না এঁকে ক্যানভাসে রঙ ছড়ানোর জন্য প্রধানত গ্রামীণ জীবনকেই বেছে নিয়েছে। তাদের কেউ এঁকেছে-বিলের মাঝে কিশোরীদের শাপলা তোলার দৃশ্য, কেউ এঁকেছে-ষাঁড়ের লড়াই, কেউ-নৌকাবাইচ, কেউ আবার-পালতোলা নৌকা। কারও কারও ছবিতে উঠে এসেছেÑমাথায় খাঁচা নিয়ে গ্রামের হাটে যাওয়া, ঢেঁকিতে ধান ভানা, মাঠে গরু নিয়ে রাখাল, গাছের ডালে পাখির ঝাঁক, পালকি, গরুর গাড়িসহ গ্রামীণ জীবনের নানা অনুষঙ্গ। অনুষ্ঠানে কাশফুল আর্ট স্কুল চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী এবং চিত্রশিল্পী কাজী মোজাম্মেল হোসেনকে সম্মানা জানায়। প্রসঙ্গত: ২০১২ সালে রাজধানীর ফার্মগেটর ১১৩-মনিপুরী পাড়ায় যাত্রা শুরু করে প্রদর্শনীর আয়োজক কাশফুল আর্ট স্কুল। প্রতিবছরই স্কুলটি তাদের শিশুদের আঁকা চিত্রকর্ম নিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণেই ছোট পরিসরে প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এবারই প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় অধীনস্থ দফতর ও সংস্থার মধ্যে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর ॥ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় অধীনস্থ ১৭টি দফতর ও সংস্থার মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ স্বাক্ষর হয় বুধবার। চুক্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সচিব আক্তারী মমতাজ ও সংস্থার পক্ষে এর প্রধানগণ স্বাক্ষর করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মশিউর রহমান ও মাহমুদা আখতার মীনা, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন, গণগ্রন্থাগার অধিদফতরের মহাপরিচালক আশীষ কুমার সরকার, নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ইকরাম আহমেদ, গ্রন্থাগার ও আর্কাইভস্ অধিদফতরের পরিচালক ওদুদুল বারী চৌধুরী, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক রবীন্দ্র গোপ, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মোঃ আক্তারুজ্জামান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরীসহ অন্যান্য দফতর ও সংস্থার প্রধানগণ। এ মন্ত্রণালয়ের দফতর/সংস্থাগুলো হলো-বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর, আর্কাইভস্ ও গ্রন্থাগার অধিদফতর, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউ-েশন, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, কপিরাইট অফিস, নজরুল ইনস্টিটিউট, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি), ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি, বিরিশিরি, নেত্রকোনা, রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি, রাজশাহী ও মণিপুরী ললিতকলা একাডেমি, মৌলভীবাজার। ইতোমধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে সচিব ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ স্বাক্ষর করেছেন। এর ধারাবাহিকতায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক এ মন্ত্রণালয় অধীনস্থ দফতর/সংস্থার সাথে এ চুক্তি স্বাক্ষর করল।
×