ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কেট শপিংমল আর বিপণিবিতানে উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২৩ জুন ২০১৬

মার্কেট শপিংমল আর বিপণিবিতানে উপচেপড়া ভিড়

রহিম শেখ ॥ পার হয়ে গেল রোজার অর্ধেক সময়। হাতেগোনা ক’দিন বাদেই ঈদ-উল-ফিতর। তাই ধনী-গরিব সবাই মিলে ছুটছেন ঈদ কেনাকাটায়। চলছে জমজমাট বেচাকেনা। ক্রেতারা পছন্দের পোশাকটি কিনতে ভিড় করছেন রাজধানীর বিপণিবিতান, ফ্যাশন হাউস, শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে। কেনাকাটায় সবচেয়ে এগিয়ে নারী ও ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা। পিছিয়ে নেই পুরুষ ও হাল ফ্যাশনের তরুণরা। শপিংয়ে বড়দের সঙ্গে শামিল হচ্ছেন ছোটরাও। এখন পাইকারিতে বেচাকেনা ধীরগতি হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি তুঙ্গে। বিক্রেতারা বলছেন, রমজানের শুরুতে বেচাকেনা জমে না উঠলেও এখন বেচাবিক্রি ভাল হচ্ছে। এদিকে ইদ বাজারে যানবাহনের বাড়তি চাপে দীর্ঘ জ্যামে প্রতিদিনই নাকাল হতে হচ্ছে ক্রেতাদের। তারপরও ভোগান্তির সীমারেখা পাড়ি দিয়ে সবাই চেষ্টা করেছেন সাধ আর সাধ্যের সবটুকু দিয়ে ঈদের কেনাকাটায় ভাল জিনিসটি নিয়ে ঘরে ফিরতে। আজ বৃহস্পতিবার রমজানের ১৭তম দিন। ইতোমধ্যে মাসব্যাপী রমজানের অর্ধেকের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। আর ক’দিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। আর এ উৎসবের সঙ্গে নতুন পোশাকের সংযোগ নিবিড়। রাজধানীর অভিজাত শপিংমল থেকে শুরু করে ফুটপাথেও এখন ক্রেতার উপচেপড়া ভিড়। সাধ আর সাধ্যের সবটুকু দিয়ে ধনী-গরিব সবাই এখন ঈদের কেনাকাটায় মহাব্যস্ত। প্রায় সব বিপণিবিতানে অনেক রাত পর্যন্ত চলেছে বিকিকিনি। তুলনামূলক সবচেয়ে বেশি ভিড় শাড়ি ও থ্রি পিসের দোকানে। ভারতীয় চলচ্চিত্র ও সিরিয়ালের নামে এবারও মেয়েদের পোশাক নিয়ে মাতামাতি চলছে ঈদ বাজারে। ক্রেতারাও খুঁজে ফিরছেন এসব ড্রেস। এছাড়া দেশী কাপড় ও ডিজাইনারদের তৈরি পোশাকের বুটিক হাউসগুলোতে ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, শার্ট ও জিন্স প্যান্টের দোকানেও বেশ ভিড়। পা ফেলার জায়গা নেই শিশুদের পোশাক ও খেলনা সামগ্রী, কসমেটিক্স ও গহনার দোকানেও। ভিড় বাড়ছে জুতোর দোকানেও। বাদ নেই ইলেকট্রনিক্স দোকানও। টেইলারিং শপগুলোর রাত-দিন এখন আলাদা করে দেখার উপায় নেই। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, চাঁদনি চক, রাপা প্লাজা, এআর প্লাজা, এলিফ্যান্ট রোডের দোকান, ফার্মগেটের সব মার্কেট, ফুটপাথ, গুলিস্তানের পুরো এলাকা, মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, শাহ আলী মার্কেট, খিলক্ষেতের রাজউক ট্রেড সেন্টার, উত্তরার নর্থ টাওয়ার, রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বিপণি বিতান ও মহল্লার বুটিকশপ ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। জানা গেছে, সারাদেশে ছোট-বড় মিলে দোকান রয়েছে প্রায় ২৫ লাখ। এর মধ্যে বড় দোকানের সংখ্যা ২০ লাখ। এর সঙ্গে ফুটপাথসহ ঈদ উপলক্ষে আরও প্রায় ৫ লাখের বেশি ছোট ছোট দোকান বসে এই ঈদ মৌসুমে। ঈদে অন্য সময়ের চেয়ে প্রায় দশগুণ বেশি লেনদেন হয় এসব দোকানে। বিশেষ করে ঈদের বাজারে সবচেয়ে বড় অংশজুড়েই রয়েছে বস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী। বস্ত্রের মধ্যে পায়জামা, পাঞ্জাবি, স্যালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, শাড়ি, লুঙ্গি ও টুপি প্রধান। এরপর রয়েছে জুতা, প্রসাধনী, স্বর্ণালঙ্কার। এসব অধিকাংশ দোকানে ১৫ রমজানের পর থেকে জমজমাট বেচাকেনা হচ্ছে। বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের ইনফিনিটির ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় ক্রেতা ও বিক্রির পরিমাণ দুটোই বেড়েছে। ছেলেদের পাঞ্জাবি ও প্যান্ট এবং মেয়েদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে ভালই। বসুন্ধরার নিচতলায় জিমি ফ্যাশনে ‘বাজিরাও মাস্তানি’ নামের একটি ড্রেস কিনেছেন ফার্মগেট এলাকার বাসিন্দা মৌসুমী ইসলাম। জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, গতবারের তুলনায় এবার মেয়েদের ড্রেসের দাম অনেক বেশি। মার্কেটের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সপ্তম তলায় ছেলেদের পাঞ্জাবি, ফতুয়া এবং প্যান্টের দোকানে ক্রেতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। দর্জিবাড়ির বিক্রয়কর্মী রেদোয়ান জানান, ছেলেরা বারবার মার্কেটে আসতে চান না। তাই একবারেই কেনাকাটা সারতে চান। ছুটির দিনগুলোতেই আসেন ছেলেরা।
×