ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পত্রিকায় রিপোর্ট না করার অনুরোধ

বেড়ায় ২০ লাখ টাকার গাছ লোপাট

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ২৩ জুন ২০১৬

বেড়ায় ২০ লাখ টাকার গাছ লোপাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ২২ জুন ॥ সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপটে বেড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরের ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির ৭২টি গাছ বিক্রি করা হয়েছে। গাছ বিক্রির এই টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না করে আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে উপজেলা চত্বরের জীবন্ত এসব গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় বিভিন্ন মহলের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বেড়া উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে মেহগনি, অর্জুন, বাবলা, আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির দুই সহস্রাধিক গাছের চারা রোপণ করা হয়। বর্তমানে প্রতিটি গাছের দাম ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামছুন্নাহার সুমি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের পরস্পরের যোগসাজশে দলীয় কিছু নেতার সহায়তায় গত মে মাস থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ২০ লাখ টাকার ৪০টি বাবলা ও ৩২টি মেহগনি গাছ বিক্রি করা হয়। গাছ বিক্রির টাকা উপজেলা পরিষদের রাজস্ব খাতে জমা দেয়া হয়নি। এমনকি গাছ বিক্রির ব্যাপারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোন অনুমতিও নেয়া হয়নি। গত রবিবার সরেজমিন বেড়া উপজেলা পরিষদ চত্বর ঘুরে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস ভবন লাগোয়া সামনের চারটি মেহগনি গাছের ডালপালা ছেঠে ফেলে গোড়া কাটা হচ্ছে। কাটা গাছ রিক্সাভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অনেক স্থানে কাটা গাছের মোথা ও শিকড় তুলে ফেলে মাটি দিয়ে গর্ত ভরাট করা হয়েছে। কর্মচারীরা বাধা দিতে পারেন এই আশঙ্কায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজে উপস্থিত থেকে কাটা গাছ ভ্যানে তুলে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত প্রায় এক মাস ধরে গাছ কেটে ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বড় গাছের সংখ্যাই বেশি। উপজেলা বন কর্মকর্তা আব্দুল কাদেরের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উপজেলায় উপড়েপড়া পুরনো শুধু ৮-৯টি বাবলা গাছের মূল্য নির্ধারণের চিঠি দেয়া হয়েছিল। সে মোতাবেক তারা মূল্য নির্ধারণ করেছে মাত্র। বেড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গাছ কাটার ব্যাপারে সে কিছুই জানে না এ বিষয়ে ইউএনও বলতে পারবেন বলে তিনি জানান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামছুন নাহার সুমির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গাছ কাটার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে গাছ কাটার ছবির কথা বলতে তিনি কিছু সময় চুপ থেকে পত্রিকায় রিপোর্ট না করা জন্য অনুরোধ করেন। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুন্সি মনিরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গাছ বিক্রির কোন সংবাদ জানেন না বলে জানান।
×