ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর কোন দোকানের ইফতারিই নিরাপদ নয়!

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২১ জুন ২০১৬

রাজধানীর কোন দোকানের ইফতারিই নিরাপদ নয়!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর গড়পড়তা সব দোকানে কোন ইফতারই নিরাপদ নয়। হোক অভিজাত কিংবা ফুটপাথের ইফতার। ইফতারের প্রতিটি পদেই কোন না কোনভাবে ‘বিষাক্ত দ্রব্য’ রয়েছে। নিরাপদ ইফতারের জন্য একমাত্র বাসায় তৈরি খাবরের বিকল্প নেই। এমনই তথ্য উঠে এসেছে এক আলোচনা সভায়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সোমবার বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য নেটওয়ার্ক ‘রমজান মাসে রকমারি ইফতারি, নিরাপদ খাদ্যর আলোকে’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি জাহিদুর রহমান বলেন, ‘সমস্যার মূলে কী রয়েছে- তা বিবেচনা না করে শুধু মোবাইল কোর্ট চালিয়ে ভোক্তার ‘আইওয়াশ’ দেয়া হচ্ছে। আমাদের দেখার বিষয় খাদ্য নিরাপত্তা দিচ্ছেন কিনা, ইফতারি ফেলে দিলেই এর সমাধান হবে না। খাদ্য ভেজাল দেয়ার মাধ্যমে মানবতার অবক্ষয় হচ্ছে মন্তব্য করে কৃষি গবেষক ড. মোঃ আব্দুল মমিন ইফতারের বিভিন্ন পদে ক্ষতিকর উপাদান থাকার কথা বলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ইফতারে যে বেগুনি আমরা খাই, সে বেগুনে থাকে প্রচ- রকমের বিষ। রাসায়নিক মেশানো চাল দিয়ে মুড়ি, এ্যান্টিবায়োটিক মেশানো মুরগির মাংস, খেজুরেও রয়েছে নানা ধরনের কেমিক্যাল। এসব ইফতার আইটেমের বেশিরভাগই ক্যান্সার, কিডনি রোগসহ অন্যান্য রোগের জন্য দায়ী। তাই বাসায় তৈরি ইফতারি ছাড়া নিরাপদ ইফতার সম্ভব নয়। কনজ্যুমারর্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভুইয়া ইফতারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ফলে বিষ প্রয়োগের পাশাপাশি ‘ভাল হোটেলের পেছনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ’ থাকার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ইফতারে ব্যবহৃত নানা ধরনের ফল ও আনারসে সরাসরি বিষ প্রয়োগ করে বিক্রি করা হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন হোটেল ঘুরে দেখেছি, ভাল হোটেলগুলোতে সামনের অংশে ফিটফাট থাকলেও যেখানে ইফতারি তৈরি হচ্ছে তা ভয়াবহ অবস্থায় থাকে। নিরাপদ ইফতারি বলতে বাসায় তৈরি ইফতারি ছাড়া বাইরের ইফতারি নিরাপদ নয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ‘হালাল সার্টিফিকেশন’ ট্যাক্স অফিসার আবু সাদেক পাটোয়ারী বেশিরভাগ ইফতারিই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে মন্তব্য করে বলেন, ‘হালাল মানে ইসলামী কোন বিষয় নয়। এর আসল অর্থ হলো ‘হাইজেনিক’ বা স্বাস্থ্যকর। হালাল বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলে খাদ্য ভেজাল অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে। ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান ইফতারির বিষয়ে বিক্রেতাদের পাশাপাশি রোজাদারদেরও সচেতন হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকারের নজরদারি আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে নিরাপদ খাদ্য আইন, ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন এবং প্রতিযোগিতা আইনগুলো প্রয়োগে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। এসব আইন কার্যকরী করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য নেটওয়ার্কের সভাপতি ফরিদা আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ‘বি-সেফ’-এর ভাইস চেয়ারম্যান সহিদুল হক খান ও ড. এসএম সোবহান।
×