ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দলের সাত গোলের মধ্যে হ্যাটট্রিকসহ চার গোল করেছেন ভারগাস, অবিশ্বাস্য পারফর্মেন্স অসুস্থ মাকে উৎসর্গ, ২২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর বাজে হারে ক্ষমাপ্রার্থনা মেক্সিকান কোচের, সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলির প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া;###;মেক্সিকো ০-৭ চিলি

মেক্সিকোকে গোলের মালা পরিয়ে শেষ চারে চিলি

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২০ জুন ২০১৬

মেক্সিকোকে গোলের মালা পরিয়ে শেষ  চারে চিলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শিরোপা স্বপ্ন নিয়েই কোপা আমেরিকার শতবর্ষী টুর্নামেন্টে এসেছিল মেক্সিকো। ‘সি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আলামতও রেখেছিল দলটি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে এসেই খেই হারিয়ে ফেলেছে তারা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলি তাদের গোলের মালা উপহার দিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিয়েছে। বাংলাদেশ সময় রবিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের সান্টা ক্লারার লেভিস স্টেডিয়ামে চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালে এডুয়ার্ডো ভারগাসের হ্যাটট্রিকসহ চার গোলে ভর করে চিলি ৭-০ গোলে পরাজিত করে মেক্সিকোকে। চ্যাম্পিয়নদের হয়ে জোড়া গোল করেন এডসন পুচ। অপর গোলটি করেন এ্যালেক্সিস সানচেজ। এই জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা চিলি শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে। আর্জেন্টিনার কাছে হার দিয়ে মিশন শুরু হলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দারুণ ছন্দে ফিরেছেন সানচেজ, ভিদাল, ভারগাসরা। ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে শেষ চারে চিলি খেলবে কলম্বিয়ার বিপক্ষে। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকালে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। টানা ২২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার তরতাজা স্মৃতি নিয়ে চিলির বিপক্ষে মাঠে নামে মেক্সিকো। লক্ষ্য ছিল একটাই, সেমিফাইনালের টিকেট কাটা। কিন্তু ২৩তম ম্যাচে এসে তারতাজা স্মৃতিটা হয়ে গেছে বিভীষিকাময়। একটা নয়, দুটো নয়, তিনটা নয়, গুনে গুনে সাত সাতটা গোল হজম করেছে মেক্সিকানরা। বড় কোন টুর্নামেন্টে এটাই মেক্সিকোর সবচেয়ে বাজে হার। এর আগে ১৯৭৮ সালের আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির কাছে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল মেক্সিকো। তবে ১৯৬১ সালে লন্ডনে ইংল্যান্ডের কাছে ৮-০ গোলে হার এখনও সবচেয়ে বড় পরাজয় হয়ে আছে মেক্সিকানদের কাছে। ম্যাচের শুরু থেকেই মেক্সিকানদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে চিলি। ১৬ মিনিটে চিলির গোল উৎসবের শুরুটা করেন এডসন পুচ। ৮৮ মিনিটে দলের সপ্তম ও শেষ গোলটিও করেন চিলির এই স্ট্রাইকার। মাঝে একাই চার গোল করন এডুয়ার্ডো ভারগাস। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে সানচেজের পাস থেকে বল পেয়ে নিজের প্রথম গোল করেন তিনি। ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করার পর অনেকেই ভেবেছিল দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াবে মেক্সিকো। কিন্তু না বরং বিরতির পর শুরু থেকে আরও এলেমেলো হয়ে যায় তারা। ভারগাস একাই মেক্সিকানদের রাতটি দুঃস্বপ্নের করে তোলেন। ৫২ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল তিনি করেন সানচেজের সহায়তায়। এর আগে ৪৯ মিনিটে সানচেজ লক্ষ্যভেদ করেন। ৫৭ মিনিটে আরেকটি গোল করে ভারগাস পূর্ণ করেন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক। ৭৪ মিনিটে তিনি গড়েন এক ম্যাচে চার গোল করার বিরল কীর্তি। ম্যাচে আরও কয়েকটি গোল করার সুযোগও ছিল চিলির। কিন্তু সেসব প্রচেষ্টা দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন মেক্সিকোর গোলরক্ষক গুইলের্মো ওচোয়া। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সঙ্গতকারণেই সব আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ভারগাস। অসাধারণ পারফর্মেন্স তিনি উৎসর্গ করেছেন তার অসুস্থ মাকে। ভারগাস বলেন, আমি এই পারফর্মেন্সে খুবই খুশি। এই ম্যাচটা আমি আমার মা ও পরিবারের সদস্যদের উৎসর্গ করছি। শুরুতে ভাল করতে না পারলেও ক্রমশ দলের উন্নতিতে খুশি এই ফরোয়ার্ড। বলেন, আসরের শুরুর দিকে আমরা ভাল খেলতে পারিনি। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, আমরা উন্নতি করছি। যত দিন গড়াচ্ছে, আমরা ততই শক্তিশালী হচ্ছি। অন্যদিকে বাজে হারে ছিটকে পড়ার পর সব দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন মেক্সিকো কোচ জুয়ান কার্লোস ওসোরিও। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, আমি দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি। মাঠে যা হয়েছে, তা রীতিমতো লজ্জার। তবে এটি ফুটবলের একটি দুর্ঘটনাই। এটা ঠিক যে এই পৃথিবীতে ফুটবলের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, তবে আমরা যা খেলেছি, তা সত্যিই ভুলে যাওয়ার মতো।
×