ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিদায় রঘুরাম রাজন

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২০ জুন ২০১৬

বিদায় রঘুরাম  রাজন

অর্থনৈতিক রিপার্টার ॥ বেশ কিছুদিন ধরে দুটো বিষয় নিয়ে চর্চা চলছিল কূটনীতিক মহলে। এক. ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেন থাকবে কি না। দুই. প্রথম দফায় মেয়াদ শেষের পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গবর্নর পদে রঘুরাম গোবিন্দ রাজনের প্রত্যাবর্তন ঘটবে কি না। প্রথমটার জবাব পেতে হলে তাকিয়ে থাকতে হবে ২৩ জুনের গণভোটের দিকে। দ্বিতীয়টায় যবনিকা পড়ে গেল শনিবার। রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মীদের খোলা চিঠি দিয়ে রাজন জানিয়ে দিলেন, দ্বিতীয় দফায় গবর্নর পদের দায়িত্ব আর নিতে চান না তিনি। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফিরে যাবেন শিক্ষকতা ও গবেষণার জগতে। চিঠিতে রাজন জানিয়েছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। রাজনের চিঠির পর টুইটার ও ফেসবুকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি লেখেন, ‘রঘুরাম রাজন শিক্ষা জগতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকার তাঁর কাজকে সাধুবাদ এবং তাঁর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাচ্ছে। তাঁর উত্তরসূরির বিষয়ে খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত হবে।’ বিদায়ের ইচ্ছের কথা সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বকে আগেই জানিয়েছিলেন রাজন। এ ব্যাপারে তিনি বৈঠক করেন মোদীর সঙ্গেও। তখনই প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, মেয়াদ ফুরোনোর পর আর গবর্নর পদে থাকতে চান না। বৈঠকের পাশাপাশি চিঠি দিয়েও তিনি মোদীকে এই কথা জানিয়েছিলেন। ওই সময়ে রাজনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ চরমে তুলেছিলেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। প্রশ্ন ছিল, মোদী ও জেটলি কী সিদ্ধান্ত নেন। রাজনের অর্থনীতিকে মোদী যে অপছন্দ করেছিলেন, তা নয়। ব্যক্তিগত সম্পর্কও মধুর ছিল। শেষ বৈঠকেও মোদী রাজনকে বারবার অনুরোধ করেন, তিনি যেন হঠকারী সিদ্ধান্ত না নেন। রাজনকে তিনি চাইছেন না এমন কথাও বলেননি। জেটলি অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর মূলত সুদের হার নিয়ে তাঁর সঙ্গে রাজনের কিছুটা বিরোধ বেধেছিল। জেটলির যুক্তি ছিল, বাজারের দিকে তাকিয়ে, শিল্পমহলের কথা ভেবে রাজনীতিকদের সুদের হার কমানোর কথা ভাবতেই হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর মধ্যস্থতাতেই দু’জনের সম্পর্কটা পেশাদারিত্বের জায়গায় আসে। এর পর যখন জেটলির বিরোধী হিসেবে পরিচিত স্বামী রাজনকে সরানোর দাবি তোলেন, তখন দেখা যায়, গবর্নরের পক্ষেই দাঁড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
×