ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিবিএসের শেয়ারে কারসাজি না মূল্য সংবেদনশীল তথ্য

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২০ জুন ২০১৬

বিবিএসের শেয়ারে কারসাজি না মূল্য সংবেদনশীল তথ্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমের শেয়ার বড় ধরনের লেনদেনের ঘটনা ঘটছে। হঠাৎ করেই প্রকৌশল খাতের কোম্পানিটির প্রতি বিনিয়োগকারীদের অস্বাভাবিক চাহিদার পেছনে আসলেই কোন কারণ রয়েছে না একটি চক্র কারসাজি করছে সেটি নিয়ে বাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কিছুটা হলেও বিভ্রান্তি রয়েছে। কারণ এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির পক্ষ থেকে কোন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ গত কিছুদিন ধরেই কোম্পানিটির রাইট শেয়ার বাজারে ছেড়ে টাকা উত্তোলন করতে যাচ্ছে বলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। কোম্পানির পক্ষ থেকেও পরোক্ষভাবে রাইট শেয়ার ছেড়ে টাকা উত্তোলনের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে রাইট শেয়ার ছাড়ার ঘোষণা দেয়া হয়নি। এর মধ্যে বাজারে এই কোম্পানিকে ঘিরে এক ধরনের বিশেষ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বেশ কিছুদিন ধরেই কোম্পানির ধারাবাহিক দরপতন ঘটেছে। বিনিয়োগকারীরা অল্প দামে শেয়ার কিনে রাইট শেয়ারের গুঞ্জন ছড়িয়ে দর বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও আগামীতে দর বাড়তে পারে এমন আশাবাদে শেয়ারটি কিনছে। ফলে গত সাত কার্যদিবস ধরেই শেয়ারটির চাহিদা ও লেনদেন বেড়েছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রবিবারে কোম্পানিটির ৫৬ লাখ ১২ হাজার ৬৫৬টি শেয়ার মোট ২ হাজার ৬৬৫টি হাওলায় লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের দিনও কোম্পানিটির এমনই অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছিল। দিনটিতে কোম্পানিটির শেষ দর দাঁড়িয়েছে ৪২.৭০ টাকা। গত ৬ মাসে এটিই কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর। এর আগে গত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কোম্পানিটির দর ছিল ৩৭ টাকা। তবে মাঝখানে কোম্পানিটির দর আরও কমে গিয়েছিল। সর্বনিম্ন ৩২ টাকা থেকে কোম্পানিটির দর বাড়তে থাকে। জানা গেছে, কোম্পানিটি নতুন করে রাইট শেয়ার ছাড়ার উদ্যোগ নিলেও গত বছরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ওইবার রাইট আবেদন বাতিল করে দিয়েছিল। কারণ বিএসইসির নতুন আইন অনুযায়ী কোন কোম্পানির তালিকাভুক্তির অন্তত তিন বছর পর রাইট শেয়ার ছাড়তে পারবে। ফলে আর কোম্পানিটি রাইট শেয়ার ছাড়ার মাধ্যমে টাকা তুলতে পারেনি। এর আগে বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম কোম্পানিটি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। উত্তোলিত টাকার ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ ও ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আইপিওতে ব্যয় করা হবে বলে প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করা হয়। কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত টাকা দিয়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ঋণ পরিশোধ করেনি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে কোম্পানিটি যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করেছে তার চেয়ে বেশি নিয়েছে। এ বছরে কোম্পানিটি ৩ কোটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধ করে। আর দীর্ঘমেয়াদী ঋণের কারেন্ট পোরশন হিসেবে ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকার ঋণ গ্রহণ বাড়ে। এ হিসেবে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নিট ঋণ গ্রহণ বেড়েছে ৬০ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। অর্থাৎ কোম্পানিটি ঋণ পরিশোধের জন্য পুঁজিবাজারে আসলেও ঋণ গ্রহণ করছে। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো পার শেয়ার ছিল ০.০২ টাকা। আগের বছর ছিল ১.৫৭ টাকা। এ হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কোম্পানিটির নগদ লভ্যাংশ দেয়ার মতো কোন ক্ষমতা ছিল না।
×