ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আরেকটি বই বিতান পূর্ব পশ্চিমের যাত্রা শুরু

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২০ জুন ২০১৬

আরেকটি বই বিতান পূর্ব পশ্চিমের  যাত্রা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বইপ্রেমীদের জন্য সুসংবাদ। রাজধানীর মিরপুর সড়কের শুক্রাবাদে যাত্রা করল আরেকটি বই বিতান। গ্রন্থানুরাগীদের মানসচক্ষু উন্মোচনের লক্ষ্য নিয়ে চালু হওয়া প্রতিষ্ঠানটির নাম পূর্ব পশ্চিম। দেশের শীর্ষস্থানীয় চার প্রকাশনা সংস্থার যৌথ প্রয়াস এই গ্রন্থ বিতান। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ পৃথিবীর সকল প্রান্তের বাঙালী লেখকদের বইয়ের ঠাঁই এখানে। একইসঙ্গে মিলবে পাশ্চাত্যের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মও। এভাবেই প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যকে এক আঙ্গিনায় জড়ো করে গ্রন্থানুরাগীদের মাঝে আলো ছড়াবে পূর্ব পশ্চিম। অন্য প্রকাশ, আগামী প্রকাশনী, জার্নিম্যান বুকস ও পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স প্রতিষ্ঠিত বই বিতানটির দ্বারোদ্ঘাটন করা হয় রবিবার। এ উপলক্ষে সদ্য প্রতিষ্ঠিত গ্রন্থ বিতানটিতে আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়। প্রথম শাখাটির দ্বারোদ্ঘাটন করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অন্য প্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন পূর্ব পশ্চিমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল হাসান শায়ক, পর্ষদের সদস্য তারিক সুজাত ও সিরাজুল কবির চৌধুরী। শাখাটির উন্মোচন করে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, মাঝে মধ্যেই শুনি যে আজিজ সুপার মার্কেটে বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে কাপড়ে দোকান হয়েছে। এখানে দেখলাম উল্টোটা ঘটেছে। কাপড়ের দোকান রূপান্তরিত হয়েছে দোকানে। সারা পৃথিবীতেই বই সম্পর্কে এক ধরনের দোদুল্যমানতা বিরাজ করছে। মনে হচ্ছে যেন বইয়ের যুগ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ই-বুকও একটা নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছে। তবে এতকিছুর মাঝেও আমার মনে হয়, মুদ্রিত বইয়ের চাহিদা শেষ হয়নি। এই উদ্যোগটি আমার সেই আশাবাদকেই যেন উস্কে দিল। সারাদেশের এ ধরনের বইকেন্দ্র আরও বেশি হওয়া উচিত। আর এ ধরনের বই বিতানে শুধু বিক্রি নয়, বই নাড়াচাড়ারও সুযোগ থাকতে হবে। এভাবেই তৈরি হবে পাঠক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শৈশবের স্মৃতিচারণ করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ছোটবেলায় আমি লেখাপড়া থেকে দূরে থাকতাম। ঘরের পাশে একটি লাইব্রেরী থাকলেও সেখানে গিয়ে বই পড়তাম না বরং স্কুলে যাওয়ার সময় ওই লাইব্রেরীতে জুতোটি খুলে রেখে যেতাম। একইভাবে ঘরে ফেরার সময় আবার জুতোটি পরে তবে ঢুকতাম। পরবর্তীতে ওই লাইব্রেরীতে থাকা কিছু গল্পের বইয়ের প্রতি আমার আকর্ষণ জাগে। সেই থেকেই বই পড়ার প্রতি আগ্রহটা তৈরি হয়। প্রসঙ্গক্রমে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস কমে গেছে। অভিভাবকরাও এ ব্যাপারে উদাসীন। এটা ভয়ঙ্কর বিষয়। শিক্ষার্থীদের ঘরে বই পৌঁচ্ছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, অন্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় সরকারী গণগ্রন্থাগার বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শামসুজ্জামান খান বলেন, ছেলেবেলায় তিন-চার মাইল হেঁটে বই পড়তে যেতাম। একটি বই নিয়ে সারাদিনও পার করেছি। এখন আর সেই উদ্দীপনা দেখা যায় না। তবে এ ধরনের গ্রন্থকেন্দ্র হলে পাঠকরা আবারও বইয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। মাজহারুল ইসলাম বলেন, ২০০৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর এই জায়গাতে অন্যমেলার শো-রুম উদ্বোধন করেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। আজ এখানে গ্রন্থকেন্দ্র হলো, আমরা গভীর বেদনার সঙ্গে তাকে স্মরণ করছি। সে সঙ্গে স্মরণ করছি প্রয়াত সকল লেখক ও মৌলবাদীদের হামলায় নিহত প্রকাশককে। তিনি আরও বলেন, এই গ্রন্থকেন্দ্রটি রাজধানীর আরও ৬ থেকে ৭টি স্থানে সম্প্রসারিত হবে। পরবর্তীতে বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরেও এই বই বিতান চালু হবে। কলকাতার কলেজ স্ট্রিটেও শাখা চালু করা হবে। পাঁচ দিনব্যাপী বিসিকের বর্ষামেলা ॥ বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের আয়োজনে শুরু হলো পাঁচদিনব্যাপী বর্ষামেলা। রবিবার থেকে মতিঝিলের বিসিক ভবনে এ মেলার সূচনা হয়। সকালে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিসিক চেয়ারম্যান মোঃ হজরত আলী প্রধান। সভাপতিত্ব করেন বিসিকের নক্সা ও বিপণন বিভাগের পরিচালখ মোঃ মোস্তফা কামাল। মেলায় ৬০টি স্টলে বিভিন্ন ধরনের পোশাক, নকশিকাঁথা, তাঁতের শাড়ি, পাটের হস্তশিল্প, মধু, খাদ্যসামগ্রী প্রদর্শিত হচ্ছে। বর্ষামেলা চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। বিসিকের নক্সা কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর পরিচিতি এবং বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের সহায়তা করাই এ মেলার উদ্দেশ্য। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মেলাটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
×