ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেট আলোচনায় বক্তারা

অগ্রযাত্রা থমকে দিতেই গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত

প্রকাশিত: ০৫:১১, ২০ জুন ২০১৬

অগ্রযাত্রা থমকে দিতেই গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা বলেছেন, দেশ ও জনগণের সঠিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে দেশের সব উন্নয়নই থমকে যাবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা থমকে দিতে, বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতেই পরিকল্পিতভাবে গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে। যারা বলে দেশে গণতন্ত্র নেই, নির্বাচন দিতে হবেÑ সেই পরাজিত বিএনপি-জামায়াত জোট গুপ্তহত্যা চালিয়ে বিশ্বের কাছে সেই বার্তাটি দিতে চাইছে। কিন্তু এসব ষড়যন্ত্র কোনদিনই সফল হবে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইলে বিএনপি-জামায়াতকে ২০১৯ সাল পর্যন্তই অপেক্ষা করতে হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে অধিকাংশ বক্তাই বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ করার দাবি জানান। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, সরকারী দলের সিমিন হোসেন রিমি, এ কে এম শাহজাহান কামাল, এটিএম আবদুল ওয়াহাহাব, একেএমএ আউয়াল সাইদুর রহমান, লুৎফুন্নেছা, নজরুল ইসলাম বাবু, নবী নেওয়াজ, ওয়ার্কার্স পার্টির টিপু সুলতান, মনোয়ারা বেগম, জাতীয় পার্টির বেগম নাসরিন জাহান রতœা, মোহাম্মদ নোমান ও মুহাম্মদ আলতাফ আলী। আলোচনা শেষে সংসদ অধিবেশন আজ সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াতের দীর্ঘ ৯২ দিনের আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, সে সময় তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সরকার তা কঠোর হস্তে দমন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা দেশকে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পরিবেশ থেকে বের করে এনে একটি সক্ষম দেশে উপনীত করেছি। তিনি বলেন, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ এদেশের জনগণ এটা প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশের মানুষ কোন সহিংসতা, হত্যা এবং ধ্বংসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। এটা প্রমাণের মাধ্যমেই আজকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে আমরা মনে করছি, প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় এগিয়ে যাচ্ছি। ওই সময়ে যে বর্বরতা লক্ষ্য করেছি, হরতাল-অবরোধের নামে সবকিছুই দেখেছি। তিনি বলেন, আমরা যদি দেশের নিরাপত্তা সঠিকভাবে দিতে না পারি তাহলে দেশের সব উন্নয়নই থমকে যাবে। আমরা যদি ব্যবসায়ীদের শিল্প-কারখানার নিরাপত্তা দিতে না পারি, হাইওয়ের নিরাপত্তা দিতে না পারি, জনগণ যদি শান্তিতে ঘুমাতে না পারেÑ তাহলে আমরা মনে করি, আমাদের সব উন্নয়ন ব্যাহত হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ বরাদ্দের কথা তুল ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অন্যতম বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহের চলমান ৪৬টি প্রকল্প যথাসময়ে সম্পন্ন করার জন্য বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের থানাও বাড়ছে। পাশাপাশি রাস্তাঘাটে পুলিশের দায়িত্বও বাড়ছে। কারণ সংসদ সদস্যরা প্রতিনিয়ত তাদের নির্বাচনী এলাকার থানাগুলোতে যানবাহন বৃদ্ধির কথা বলেন। সেই কারণে বাজেটে আমাদের জন্য বরাদ্দ আরও বেশি প্রয়োজন আছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে কোন আইএস নেই। আইএস মানেই ছাত্রশিবির। বিভিন্ন বাহিনী বিভিন্ন নাম দিয়ে হত্যাকা- চালাচ্ছে। আমার প্রশ্নÑ আজ যারা নির্বাচন চাচ্ছে তারাই কী এগুলো ঘটাচ্ছে? তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে অস্থির সময় যাচ্ছে। যারা এসব হত্যাকা- ঘটাচ্ছে তারা আমাদের উন্নয়নের অগ্রগতি থামিয়ে দিতে চায়। কথায় আছে সুখে থাকলে ভুতে কিলায়। বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কেউ কেউ বলছেন নির্বাচন দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে! যারা মানুষ মারছে তারা তো নির্বাচন চাচ্ছে না। তাহলে যারা চাচ্ছেন তারা কি পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্যই এসব গুপ্তহত্যা চালাচ্ছেন। আবার কেউ বলছেন সমস্যার সমাধানে জাতীয় সংলাপ করতে হবে। আমরা কার সঙ্গে বসব? মুফতি হান্নানের সঙ্গে? তিনি বলেন, আইএস মানে ইসলামী ছাত্রশিবির। এদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান সরকারের আছে। এদের কর্মকা- থামাবার জন্য শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে এক মাসের মধ্যে অপেক্ষমাণ ২৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে যে অবদান রাখছে তা অতীতে কেউ কখনও রাখেনি। নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, শান্ত বাংলাদেশকে অশান্ত করতে পরাজিত বিএনপি-জামায়াতের গোপন আঁতাতে গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে। দেশকে রক্তাক্ত করা হচ্ছে। গুপ্তঘাতকরা আর কেউ নয়, সেই খালেদা জিয়া ও তাঁর দোসর জামায়াত-শিবির। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নোমান তৃণমূলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লাগাম টেনে ধরার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের বিশাল অর্জন রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের কিছু অসাধু নেতার কারণে সবকিছু ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এখনই তাদের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে আগামীতে বড় ধরনের খেসারত দিতে হতে পারে। ইউপি নির্বাচনে হাজার কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে।
×