ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যৌতুক ॥ স্ত্রী ও শ্বশুর শাশুড়িকে ইয়াবা দিয়ে শ্রীঘরে

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২০ জুন ২০১৬

যৌতুক ॥ স্ত্রী ও শ্বশুর শাশুড়িকে ইয়াবা দিয়ে শ্রীঘরে

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ যৌতুকের জন্য বারবার নির্যাতন ও বহু বিবাহের জন্য স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে ইয়াবা দিয়ে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে সেলিম উল্লাহ আজাদ নামের এক মাদক কারবারি। অমানবিক ও ন্যক্কারজনক এ ঘটনা নিয়ে জেলা জুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। গত ২৮ মে স্ত্রী ছামিরা আক্তার, তার বৃদ্ধ ও অসুস্থ পিতা-মাতা এবং তাদের সঙ্গে থাকা ৪ মাসের দুগ্ধপোষ্য এক শিশু সন্তানকে বহনকারী সিএনজি গাড়িতে কৌশলে ইয়াবা দেয় নিষ্ঠুর স্বামী। রেজু খালের যৌথ চেক পোস্টে নিজে উপস্থিত থেকে বিজিবি’র কাছে ধরিয়ে দেয় তাদের। নিয়ম অনুসারে বিজিবি বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় জব্দ তালিকার ১নং সাক্ষীও হয় সেলিম উল্লাহ আজাদ। ঘটনার শিকার স্ত্রী ছামিরা আক্তার, শ্বশুর সদ্য বিদেশ ফেরত আব্দুর রহিম প্রকাশ সোনা মিয়া ও শাশুড়ি হামিদা বেগম টেকনাফ সদর কচুবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ৪ মাসের দুগ্ধ পোষ্য শিশুসহ তারা বর্তমানে জেলা কারাগারে রয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পুলিশ সুপার, ১৭ বিজিবির অধিনায়ক, জেলা আইনগত সহায়তা সংস্থা, সংবাদকর্মী ও মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত আবেদন করেছে। সূত্রে জানা যায়, চিহ্নিত অপরাধী ও মাদক কারবারি উত্তর বাহারছড়ার জনৈক নূরুল হকের পুত্র সেলিম উল্লাহ আজাদ একাধিক বিয়ের কথা গোপন রেখে গত ২০১৪ সালের ৬ জুন রেজিঃযুক্ত কাবিননামামূলে টেকনাফ সদর কচুবনিয়া গ্রামের আবদুর রহিম প্রকাশ সোনা মিয়ার কন্যা ছমিরা আক্তারকে বিয়ে করে। সেলিম আজাদ ও ছামিরা আক্তারের সংসারে সিয়াম নামের একটি পুত্র সন্তানেরও জন্ম হয়। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই সেলিম উল্লাহ আজাদ যৌতুকসহ বিভিন্ন অনৈতিক দাবিতে স্ত্রী ছামিরা আক্তারকে নির্মম নির্যাতন শুরু করে। ছামিরার দিনমজুর পিতা কর্মসংস্থানের আশায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে দালালের খপ্পরে পড়ে সমুদ্র পথে মালয়েশিয়ায় গিয়ে আটক পরবর্তী কারাবন্দী হয়ে পঙ্গু হয়ে যান। সম্প্রতি তিনি অসুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরেন। ঘটনার শিকার কারাবন্দী ছামিরার দিনমজুর ভাই নুরুল হক জানান, তার ছোট বোনের স্বামী সেলিম উল্লাহ আজাদ কৌশলে ইয়াবা দিয়ে তার বোন ও বৃদ্ধ অসুস্থ মা-বাবাকে ফাঁসানোর ফন্দি করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রামু থানার এসআই সঞ্জয় কুমার বলেন, নিজের স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ি কক্সবাজার আসাকালে চেকপোস্টে আগে থেকেই সেলিম উল্লাহ আজাদের উপস্থিতি ও তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় সাক্ষী হওয়া রহস্যের সৃষ্টি করে।
×