ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

১৪ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি

ঈদ পূজায় যে কলেজের শিক্ষকরা পরিবারের কাছে হাস্যকর

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ২০ জুন ২০১৬

ঈদ পূজায় যে কলেজের শিক্ষকরা পরিবারের কাছে হাস্যকর

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ঈদ যায়, ঈদ আসে, বেতন বোনাস কিছুই পায় না যশোর এসএম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা। সারাবছরই তাদের হতাশা, আর ঈদ পূজাসহ বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান এলে পরিবার পরিজনের কাছে হাস্যকর বস্তুতে পরিণত হয় তারা। বিশ্ববরেণ্য চিত্র শিল্পী এসএম সুলতানের নামে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠান নানা ঘাত প্রতিঘাত চড়াইউৎরাই প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১৪ বছর পার হলেও এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি। যশোর উপ-শহর পার্কের উত্তর প্রান্তে লেক আর সবুজ বেষ্টনীর মাঝে নান্দনিক করলেও পরিবেশে ২০০২ সালে এক একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয় যশোর এসএম সুলতান ফাইন আর্ট কলেজ। শিক্ষানুরাগী আর শিল্পকলার প্রতি আকৃষ্ট শহরের সৃষ্টিশীল মানুষের আন্তরিকতায় গড়ে ওঠে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রথম অবস্থায় টিনের ছাউনি আর ইটের গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত হয় শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর মতো একটি বিল্ডিং। সবার আশা ছিল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যেহেতু কোনও আর্ট কলেজ নেই, তাই অল্প দিনেই সরকারের সুদৃষ্টি মিলবে। এ আশায় অনেক শিক্ষক-কর্মচারীও যোগ দেন এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ভর্তি হতে থাকেন শিক্ষার্থীরাও। কিন্তু প্রতিষ্ঠার একযুগ পার হয়ে গেলেও তাদের সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ কলেজে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। সে জন্যে কলেজটি ফলাফলেও সাফল্য দেখায়। ইতিমধ্যে এটি জাতীয় বিশ্বদ্যিালয়ের অধিভুক্ত হয়েছে। ৫ বছর মেয়াদি স্নাতক কোর্স সম্পন করে চারটি ব্যাচও বেরিয়েছে। প্রতিবছরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে বোর্ডের প্রথম স্থানসহ শীর্ষ ১০-এ স্থান দখল করার নজির রয়েছে। তাদের অনেকে এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে উপার্জনও করছেন। কিন্তু তাদের শিক্ষক-কর্মচারীরা থাকছেন অর্থকষ্টে। মানবেতর দিনাতিপাত চলছে তাদের। বর্তমানে এ কলেজে ১০ শিক্ষক, কর্মচারী আর শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন হিসাবে মাসে মাত্র দেড়শ’ টাকা করে নেয়া হয়। তা থেকে পনেরো হাজার টাকার মতো ওঠে। ওই অর্থ দিয়ে চালানো হয় কলেজের নানা খরচ। তাই শিক্ষক-কর্মচারীরা অনেকটা বিনা বেতনে দায়িত্ব পালন করছেন ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষক অন্যত্র চলে গেছেন। রয়েছে বিল্ডিংসহ নানা সমস্যা। সারাবছর যেভাবেই চলুক না কেন ঈদ আসলে শিক্ষকরা পড়েন চরম বিপাকে। ঈদে তারা বেতন বোনাস পান না।
×