ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়া ভূমি দস্যুদের দাপট

নিঃস্ব হচ্ছে রাখাইনরা

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২০ জুন ২০১৬

নিঃস্ব হচ্ছে রাখাইনরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৯ জুন ॥ ১৯৯১ সালের আদম শুমারি কমিউনিটি সিরিজ পটুয়াখালী জেলার বইয়ের ৭৫ নম্বর পৃষ্ঠায় এখনও গ্রামটির নাম লেখা রয়েছে হুইচ্যানপাড়া। যার ভিলেজ কোড নম্বর-২৪। তখনকার তথ্যমতে গ্রামটিতে মোট ১০৫টি পরিবারের বসবাস ছিল। লোকসংখ্যা ছিল ৬০০ জন। অথচ এখন গ্রামটির নাম করা হয়েছে হোসেনপাড়া। কবে, কারা, কীভাবে এমনটি করেছে তা জানা যায়নি। আদিবাসিন্দা রাখাইনদের সৃজিত এই জনপদে তাদের পাড়ার মাদবরদের অর্থাৎ হেডম্যানদের নামানুসারে হয়েছে গ্রাম কিংবা এলাকার নামকরণ। কিন্তু এক শ্রেণীর ভূমিদস্যু গভীর চক্রান্ত করে সাগরপাড়ের এই জনপদের সঠিক ইতিহাস বিকৃত করে দিয়েছে। এই প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। এই গ্রামটির পূর্বদিকের গ্রামটির নাম এখনও মম্বিপাড়া রয়েছে। এটিও রাখাইনদের নামানুসারে। এই গ্রামের নাম পাল্টে দেয়া না হলেও রাখাইনপাড়ার দেবোত্তর সম্পত্তি জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল করে নেয়া হয়েছে। কলাপাড়ায় আদিবাসিন্দা রাখাইনদের এভাবেই শুধু বঞ্চনা করা হয়নি। নানাভাবে প্রতারিত করা হয়েছে। চরধুলাসার গ্রামে এখনও রাখাইনদের সমাধিস্থল এবং শ্মশান দৃশ্যমান। কীভাবে শ্মশান কিংবা পাড়ার সম্পত্তির মালিকানা বদলে গেল তা উদঘাটন করা বেশ কঠিন কাজ। তবে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে ভূমি অফিসের এক শ্রেণীর কর্মীর যোগসাজশে লুজ খতিয়ান খুলে এসব জমির মালিকানা পাল্টে দেয়া হয়েছে। লতাচাপলী ই্উনিয়নের কালাচান পাড়ার রাখাইনদের সবচেয়ে বড় শ্মশান রয়েছে। ওই শ্মশানের চারদিকে দখল করে তোলা হয়েছে বাড়ি-ঘরসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা। যতটুকু জায়গা অবশিষ্ট রয়েছে তা এখন পানিবন্দী হয়ে থাকে। এমনকি শ্মশান ঘেষে ল্যাট্রিন করা হয়েছে। রাখাইনদের কেউ প্রয়াত হলে যথাযথ মর্যাদায় সৎকার পর্যন্ত করা যায় না। বর্তমানে রাখাইনদের এমনসব স্পর্শকাতর বেদনার কথা কেউ শোনারও নেই। এসব নিয়ে বহুবার দেনদরবার করে এরা এখন কাহিল।
×