ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আফগান পুলিশের বিরুদ্ধে তালেবানের মধুফাঁদ বালক যৌনদাস

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২০ জুন ২০১৬

আফগান পুলিশের বিরুদ্ধে তালেবানের মধুফাঁদ বালক যৌনদাস

আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে পুলিশের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় যৌনদাসদের ব্যবহার করছে তালেবান। উরুজগানের সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা গুলাম সাখি রোঘ লিওয়ানি বলেন, তালেবান আফগান পুলিশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গাটি খুঁজে পেয়েছে। আর তা হচ্ছে বাচা বাজি আসক্তি। সুন্দর ছেলেদের বিভিন্ন তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের কাছে বিনোদনের জন্য পাঠাচ্ছে টোপ হিসেবে। এসব বালকই পুলিশ সদস্যদের হত্যা করছে। ২১ বছর বয়সী পুলিশ মতিউল্লাহ বলেছেন, তালেবান পুলিশের বিরুদ্ধে বাচাদের ‘মধুফাঁদ’ হিসেবে ব্যবহার করছে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এবং ওই ধরনের হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকেই বিষয়টি সম্বন্ধে জানিয়েছেন। খবর এএফপির। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে ‘বাচা বাজি’ নামের একধরনের প্রথা রয়েছে। সেখানে ছোট ছোট বালককে মেয়ের সাজে সাজিয়ে নাচগান করিয়ে বিনোদন লোটে পুরুষেরা। এসব শিশুর সঙ্গে যৌনাচারও করে থাকে তারা। ‘বাচা বাজি’ নামে যৌনদাসত্বের এই প্রথার মাধ্যমে শিশুদের ওপর চলছে ভয়াবহ যৌন নিপীড়ন। বাচা বাজির শিশুদের বলা হয় ‘বাচা’। আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্যের বাচা বাজির আসক্তি রয়েছে। এই সুযোগটাকে কাজে লাগাচ্ছে তালেবান। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে এসব শিশুকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ওপর কমপক্ষে ছয়টি হামলা চালায় তালেবান। এসব ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে শতাধিক পুলিশ। আফগানিস্তান স্বাধীন মানবাধিকার কমিশনের (এআইএইচআরসি) প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সাধারণত ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছেলেদের বাচা বলা হয়। এরা কখনও অপহরণের শিকার হয়ে এ কাজে ব্যবহৃত হয়, আবার কখনও দারিদ্র্যের কারণে পরিবার তাদের বাচা হিসেবে বিক্রি করে দেয়। আর এই বাচাদের নিজেদের সুবিধামতো ব্যবহার করে বিভিন্ন পক্ষ। জানা যায়, দেশটিতে শতবর্ষ ধরে ছেলে শিশুদের ব্যক্তিগত আনন্দের জন্য যৌনদাস হিসেবে রাখার চর্চা চলে আসছে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান শাসনামলে বাচা বাজি নামের এই প্রথা নিষিদ্ধ করা হলেও সম্প্রতি সেই কুৎসিত চর্চা দেশটিতে ফিরে এসেছে। পশতুন এবং উত্তরাঞ্চলে তাজিক নামের একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে এর চর্চা বেশি ছিল। প্রভাবশালী যোদ্ধা, যুদ্ধবাজ নেতা, রাজনীতিবিদ ও সমাজের বিত্তশালীদের মধ্যে বাচা রাখার বিষয়টি ছিল বিত্তবৈভবের প্রতীক। মেয়েদের পোশাক পরিয়ে সাজিয়ে-গুজিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাচাদের দিয়ে নাচগান করানো হতো।
×