ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পলের গোলে সেমিতে শেখ রাসেল

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ১৯ জুন ২০১৬

পলের গোলে সেমিতে শেখ রাসেল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরামবাগ হতে পারলো না রহমতগঞ্জ। আগেরদিন শেখ জামালকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়ে সেমিতে নাম লিখিয়েছিল আরামবাগ। পরদিন শেখ রাসেলকেও যথেষ্ট চাপের মুখে রেখেছিল রহমতগঞ্জ। কিন্তু জায়ান্টদের আর বধ করতে পারলো না পুরনো ঢাকার ঐহিত্যবাহী এই ক্লাবটি। তাদের ১-০ গোলে হারিয়ে ‘ওয়ালটন ফেডারেশন কাপ’ ফুটবল আসরের সেমিফাইনালে নাম লেখালো শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। শনিবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে পড়ন্ত বিকেলের অতিরিক্ত সময়ে পল এমিলের ঝলকেই এ যাত্রা উৎরে যায় ফেডারেশন কাপের ২০১২ সালের শিরোপাধারী রাসেল। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে গোল করে শেখ রাসেল। জামাল ভুঁইয়ার কাছ থেকে লম্বা থ্রু পাস পেয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন ক্যামেরুন ফরোয়ার্ড পল এমিল। আগুয়ান গোলরক্ষক সামিউল ইসলাম মাসুমের পাশ দিয়ে প্লেসিং শটে পল বল জড়িয়ে দেন জালে (১-০)। কিন্তু রহমতগঞ্জের খেলোয়াড়-কোচ-কর্মকর্তা সবাই গোলটি অফসাইড হয়েছে বলে রেফারি জালাল উদ্দিনের কাছে তীব্র আপত্তি জানান। ঘিরে ধরেন তাকে। করতে থাকেন বাদানুবাদ। কিন্তু রেফারি এটি গোল বলে তার সিদ্ধান্তে অটল থাকলে রহমতগঞ্জ খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। এ জন্য মিনিট সাতেকের মতো খেলা বন্ধ থাকে। বাকি সময়টায় রহমতগঞ্জ আপ্রাণ চেষ্টা করেও সেই গোল আর শোধ করতে পারেনি। শেষ চারে চলে যায় শেখ রাসেল। এবারের আসরে গ্রুপ পর্বে শেখ রাসেল নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে চট্টগ্রাম আবাহনীর সঙ্গে। পরের ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। পক্ষান্তরে নিজেদের গ্রুপে রহমতগঞ্জ তাদের প্রথম ম্যাচে ২-২ গোলে মোহামেডানের সঙ্গে ড্র করে। দ্বিতীয় ম্যাচেও ড্র করে টিম বিজেএমসির সঙ্গে (১-১)। ‘ডি’ গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে নাম লেখায় শেষ আটে। হারলেও রহমতগঞ্জ শনিবারের ম্যাচে যথেষ্ট ভাল খেলেছে। তাদের পরিকল্পিত, সাহসী ও আক্রমণাত্মক খেলা প্রশংসিত হয় গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের কাছে। কিন্তু ভাগ্য সহায় না হওয়াতে এবং গোলের একাধিক সুযোগ নষ্ট করায় কাক্সিক্ষত জয়ের দেখা পায়নি তারা। ২৫ মিনিটে বক্সে রাসেলের ফিকরুর ক্রস পল এমিল বল করেন। কিন্তু রহমতগঞ্জের রক্ষণের বাধায় আবার ফিকরুকে ফেরত দেন পল। ফিকরু প্রতিপক্ষ রক্ষণ ভেঙ্গে পোস্টে ঢুকে পড়েন। গোলরক্ষককে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে পেয়ে শট নেন। কিন্তু সেই বল গোলরক্ষকের পায়ে লেগে প্রতিহত হয়। নিশ্চিত গোলবঞ্চিত হয় রাসেল। ২৬ মিনিটে রহমতগঞ্জের বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে রাসেলের মোনায়েম খান রাজু গড়ানো ক্রস দেন ফিকরুকে । কিন্তু ফিকরু পা লাগানোর আগেই গড়িয়ে পড়ে পা দিয়ে কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করেন রহমতগঞ্জের অধিনায়ক সাখাওয়াত হোসেন। তবে এটা আত্মঘাতী গোল হতে পারতো। ৫৯ মিনিটে রাসেলের মিডফিল্ডার জামাল ভুঁইয়ার পাসে বক্সে বল পেয়ে দুর্দান্ত শট নেন ফিকরু। কিন্তু দুই ডিফেন্ডারের কল্যাণে এবারও গোল হজমের হাত থেকে বেঁচে যায় রহমতগঞ্জ। ৬০ মিনিটে রহমতগঞ্জের মিডফিল্ডার সোহেল মিয়ার শট রাসেলের পোস্টে লেগে বাইরে চলে যায়। ৮৫ মিনিটে বক্সের খুব কাছ থেকেই সতীর্থকে পাস দেন রহমতগঞ্জের ফরোয়ার্ড সৈয়দ রাশেদ তূর্য। প্রায় ফাঁকা পোস্ট পেয়ে বল নিয়ে পোস্টের কাছে পৌঁছে গিয়েও বল বাইরে মারেন মিডফিল্ডার দিদারুল আলম। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কোন দলই গোলের দেখা যায়নি। ফলে নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেই পড়ন্ত প্রহরে পল ম্যাজিকে পার পায় রাসেল। ম্যাচের তখন ১০১ মিনিট।
×