ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একযুগ পর সেমিফাইনালে কলম্বিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ১৯ জুন ২০১৬

একযুগ পর সেমিফাইনালে কলম্বিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উঠল কলম্বিয়া। দীর্ঘ একযুগের অপেক্ষার পর টুর্নামেন্টের শেষচারে জায়গা করে নিল তারা। শনিবার আর্সেনাল গোলরক্ষক ডেভিড ওসপিনার দুর্দান্ত নৈপুণ্যে পেরুকে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে ২০০৪ সালের পর এবারই প্রথমবারের মতো কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে উঠার স্বাদ পেল কলম্বিয়া। ইস্ট রাদারফোর্ডের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য ড্র থাকার পরে অতিরিক্ত সময়েও দুই দল ডেডলক ভাঙ্গতে পারেনি। এর আগে ইনজুরি টাইমে ওসপিনা দারুণ দক্ষতায় পেরুকে হতাশ করার পরে শূট-আউটে ডিফেন্ডার মিগুয়েল ট্রকোর শট আটকে দেন। প্রথম তিনটি শূট-আউট থেকে কলম্বিয়া গোল করার পরে যখন ফলাফল অনেকটাই নিজেদের দিকে নিয়ে গিয়েছিল ঠিক তখনই ট্রকোর শট আটকে দিয়ে ওসপিনা কলম্বিয়াকে জয়ের স্বপ্ন দেখান। এরপর সেবাস্তিন পেরেজ গোল করে কলম্বিয়াকে ৪-২ গোলে এগিয়ে দেন। ক্রিস্টিয়ান কুয়েভার স্পট কিকটি বারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে কলম্বিয়ানরা উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভাসে। গতবছর কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল কলম্বিয়াকে। যে কারণে এবার শেষ আটের বাধা পেরিয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত কলম্বিয়া শিবির। বুধবার শিকাগোতে সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ মেক্সিকো অথবা টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলি। কোয়ার্টার ফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ শুরুর ১৮ মিনিটের মধ্যেই কার্যত ধারণা করা হয়েছিল দুই দলের লড়াইয়ের থেকে শক্তির প্রমাণই মাঠে বেশি দেখা যাবে। কেননা এই সময়ের মধ্যেই যে উভয় দল মিলিয়ে ১১টি ফাউল করে বসে। যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিল পেরুর। আর বারবার খেলা বন্ধ হওয়ার ফলে কলম্বিয়া নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারছিল না। সে কারণে দলের মধ্যে হতাশাও দেখা গেছে বেশি। এসি মিলানের তারকা ফরোয়ার্ড কার্লোস বাক্কা পেরুর জন্য প্রথম হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছিলেন। কিন্তু সাত মিনিটে করা তার সেই শট অল্পের জন্য গোলের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। তবে ম্যাচের সবচেয়ে সুবর্ণ সুযোগটি আসে ২২ মিনিটে। রিয়াল মাদ্রিদের কলম্বিয়ান তারকা জেমস রড্রিগুয়েজ মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে ২০ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শট করেন। কিন্তু তার সেই কার্লিং শট অসাধারণ দক্ষতায় রুখে দেন পেরুরু গোলরক্ষক পেড্রো গালেস। ফিরতি বলে বাক্কা শট নিলেও তা আর কাজে আসেনি। ম্যাচের বাকি সময়টা শুধু দুই দলের শারীরিক দক্ষতা প্রমাণেই কেটেছে। যে কারণে আর্জেন্টাইন রেফারি প্যাট্রিসিও লুস্তাওকে বাধ্য হয়ে ম্যাচ বন্ধ করতে হয়েছে। এতে করে ম্যাচের স্বাভাবিক সৌন্দর্যও কিছুটা নষ্ট হয়েছে। কুয়েভার কর্নার থেকে ক্রিস্টিয়ান রামোসের শক্তিশালী হেডে ইনজুরি টাইমে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল পেরু। কিন্তু সেখানেও বাধা হয়ে দাঁড়ান ওসপিনা। তার সেই প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকে গড়ায় ম্যাচটি। আর দলকে সেমিফাইনালে তুলতে অবদান রাখতে পেরে দারুণ রোমাঞ্চিত কলম্বিয়ান গোলরক্ষক ওসপিনা। এখন ফাইনালেও খেলার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মলনে কলম্বিয়ান গোলরক্ষক বলেন, ‘দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। পারফর্মেন্সের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। আমার বিশ্বাস ফাইনালে যাওয়ারও যোগ্যতা রয়েছে আমাদের। তবে সেমিফাইনালের বাধা পেরুনোটাও হবে খুব কঠিন কাজ।’ সেমিফাইনালে উঠে এখন শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছেন দলের সেরা তারকা রড্রিগুয়েজ। এ প্রসঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার বলেন, ‘কোন সময় আপনি জিতবেন আর কখনও আপনি হেরে যাবেন তবে পেনাল্টিতে আজ ভাগ্য আমাদের পক্ষেই ছিল। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠাই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। সেটা আমরা করেছি। এখন আমরা শিরোপা জিততে চাই।’
×