ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দুরন্ত জয়ে শেষ ষোলোতে ইতালি-স্পেন

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১৯ জুন ২০১৬

দুরন্ত জয়ে শেষ ষোলোতে ইতালি-স্পেন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন স্পেন। শিরোপা নিজেদের করে রাখার লক্ষ্যে এবারও দুর্দান্ত ভিসেন্তে দেল বস্কের দল। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে জয় দিয়েই শুরু করে তারা। দ্বিতীয় ম্যাচেও বড় জয় পেয়েছে স্পেন। শুক্রবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরোজয়ীরা ৩-০ গোলে হারিয়েছে তুরস্ককে। সেইসঙ্গে টুর্নামেন্টের শেষ ষোলোতেও জায়গা করে নিয়েছে স্পেন। এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে শেষ মুহূর্তের গোলে ইতালি ১-০ ব্যবধানে হারায় শক্তিশালী সুইডেনকে। সেইসঙ্গে এক ম্যাচ আগেই কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করে আজ্জুরিরা। এছাড়া ক্রোয়েশিয়া এবং চেকপ্রজাতন্ত্রের ম্যাচটি এদিন ২-২ গোলে ড্রয়ে শেষ হয়। তবে ম্যাচের ৮৬ মিনিটে মাঠে দর্শকরা কয়েকটি আগুনের লেলিহান শিখা ছুঁড়লে ম্যাচের দায়িত্বে থাকা রেফারি মার্ক ক্লাটেনবার্গ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ রাখেন। এ সময়ে ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়রাও তাদের সমর্থকদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। ‘ডি’ গ্রুপের প্রত্যেক দলের দুটি করে ম্যাচ শেষে ছয় পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে স্পেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্রোয়েশিয়ার সংগ্রহ চার পয়েন্ট। চেকপ্রজাতন্ত্র ১ আর কোন পয়েন্ট সংগ্রহ করতে না পারায় শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিশ্চিত তুরস্কের। শুক্রবার নিসের এ্যালিয়াঞ্জ রিভিয়েরায় ম্যাচের শুরু থেকে প্রাধান্য দেখিয়ে বল দখলের লড়াইয়ে অনেক এগিয়ে থাকলেও গোল করার তেমন ভাল সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। অবশেষে অপেক্ষার অবসান হয় ৩৪ মিনিটে। নোলিতোর চমৎকার ক্রস থেকে আলভারো মোরাতোর নিখুঁত হেডে প্রথমে এগিয়ে যায় স্পেন। প্রথম গোলের রেশ কাটতে না কাটতে আবারও স্প্যানিয়ার্ডদের উল্লাস। তার তিন মিনিট পর নোলিতো নিজেই গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আবারও প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ায় স্পেন। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও জর্দি আলবার মধ্যে গড়ে ওঠা দুর্দান্ত আক্রমণকে নিজের দ্বিতীয় গোলে পরিণত করে তুর্কিদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন মোরাতা। এরপর আর গোলের তেমন চেষ্টা করেনি স্পেন। আর তুরস্ক অনেক চেষ্টা করেও স্প্যানিশ রক্ষণদুর্গে ফাটল ধরাতে পারেনি। এর আগে ‘ডি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া দুই গোলে এগিয়েও হারাতে পারেনি চেকপ্রজাতন্ত্রকে। ৩৭ মিনিটে ইভান পেরিসিচ ও ৫৯ মিনিটে ইভান রাকিটিচের লক্ষ্যভেদ জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল ক্রোয়াটদের। কিন্তু ৭৫ মিনিটে মিলান শেকাডা ও একেবারে শেষ মুহূর্তে তমাস নেসিদের পেনাল্টি গোল মূল্যবান একটি পয়েন্ট এনে দেয় চেকদের। তবে এবারের ইউরোতে ম্যাচের শেষ দিকে গোল করাটা যেন নিয়মেই পরিণত হয়ে গেছে। সুইডেন ইতালির গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এডারের ৮৮ মিনিটের করা গোলেই সুইডেনকে হারিয়ে ফ্রান্সের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোর টিকেট নিশ্চিত করে ইতালি। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়া মুহূর্তটা বোধহয় আটকে গেছে বারবার একটি ফ্রেমে। পুরো ম্যাচজুড়ে সুইডেনের বল নিয়ে ছোটাছুটির উল্টো দিকে ইতালি কিছুটা গতিহীন। জ¬াতান ইব্রাহিমোভিচকে প্রাণ ভোমরা ধরে আক্রমণ সাজানো সুইডিশদের কপাল বোধহয় পুড়েছে ৭৩ মিনিটের এক মিসে। পুরো ম্যাচজুড়েই হয়েছে বিক্ষিপ্ত ফুটবল। ইতালি এক পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোতে যেতেই মনোযোগী ছিল বেশি। সুইডেন তুলনায় উদ্যমী হলেও গোলে শট নিতে পারেনি। যাতে করে জন্ম নিল ১৯৮০ সালের পর নতুন রেকর্ড। ইউরোতে কোন ম্যাচে মাত্র ১২ শট সেবার শেষ দেখেছিল দুনিয়া। ইতালি সেখান থেকে জেগে উঠল। পারলোর হেড পারেনি জালের ঠিকানা খুঁজে পেতে। কিন্তু পেরেছে ইতালি। তাও ম্যাচের শেষ মুহূর্তে। ৮৮ মিনিটে এডারের বলতে গেলে একক প্রচেষ্টাতেই গোল। যা এবারের আসরের অন্যতম সেরা গোল বললেও ভুল হবে না। বিশ্বকাপ ও ইউরো মিলে গ্রুপ পর্যায়ে এর আগে টানা দুই ম্যাচ জেতেনি ইতালি। এবার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন করে গড়ল আজ্জুরিরা। এবারের ইউরোতে অনেক অবাক করা ঘটনা ঘটছে। ৮৫ থেকে ৯০ মিনিটের মধ্যে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। ৯৩ মিনিটে সুইডেনের এই পেনাল্টি আবেদন রেফারি ফিরিয়ে না দিলে সুইডেনও হয়তো এক পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের শেষ ষোলোর পথটাকে সুগম করে রাখতে পারতো। তবে এখন ‘ই’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোতে যাওয়ার দৌড়ে সুইডেনের চয়ে চেকপ্রজাতন্ত্রই অনেকটা এগিয়ে!
×