ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা

অর্থ লুট ও পাচারের বিরুদ্ধে সংসদে কঠোর ব্যবস্থা দাবি

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৯ জুন ২০১৬

অর্থ লুট ও পাচারের বিরুদ্ধে সংসদে কঠোর ব্যবস্থা দাবি

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা, ব্যাংক থেকে অর্থ লুণ্ঠন বন্ধ এবং অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। অর্থ লুণ্ঠনকারী ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, এসব বন্ধ করা না গেলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে না। তাঁরা জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের কোমর ভেঙ্গে দেয়া না পর্যন্ত সারাদেশে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রাখারও দাবি জানান। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সরকারী দলের সাবেক পানি সম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, আফছারুল আমীন, সাধন চন্দ্র মজুমদার, আবদুল মজিদ খান, ডাঃ এনামুর রহমান, তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস, আবদুর রৌফ, আবুল কালাম, সেলিনা জাহান রিটা, বেগম কামরুন লায়লা জলি, সেলিনা বেগম, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী, জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার ও শাহনারা বেগম। আলোচনা শেষে সংসদ অধিবেশন আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মুলতবী করা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোট। তারা এখন উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তারা আবারও ব্যর্থ হবে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। জাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ আবার ফণা তুলেছে। জঙ্গীদের অভয়াশ্রম হচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত। মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গীবাদ নির্মূলে ধারাবাহিক আন্দোলনে নামতে হবে। জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের কোমর ভেঙ্গে দেয়া না পর্যন্ত সারাদেশে পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশৃঙ্খলা রয়েছে। অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন ব্যাংক থেকে সাগর চুরি হয়েছে। এসব বন্ধ করা না গেলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে না। বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি না করলে অর্থ পাচার হতেই থাকবে। কঠোরহস্তে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধ করতে হবে। জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, এ বাজেট একপেশে। দেশের একটি অংশকে অন্ধকারে রেখে অন্য অংশকে আলোকিত করার বাজেট দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী পূর্বাঞ্চল নিয়ে ব্যস্ত, উত্তরাঞ্চলের দিকে তাঁর কোনই নজর নেই। বাজেটেও এই বৈষম্য প্রকট। অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পুকুর নয়, সাগর চুরি হয়েছে। তবে চোরদের ধরেন না কেন? চোর ধরতে কেন এত দ্বিধা-দ্বন্দ্ব জাতি তা জানতে চায়। ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দের অপ্রতুলতার সমালোচনা করে বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। সমস্ত সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুণ্ঠন হলো। ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়ে দেশে বিনিয়োগ না করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন ঘুষ-দুর্নীতি চলছে। এসব কঠোরহস্তে বন্ধ করতে হবে। তালুকদার মোঃ ইউনুস বলেন, পরিকল্পিত হত্যাকা- ঘটিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ করার দাবি জানান। সরকারী দলের আবদুল মজিদ খান হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের সমালোচনা করে বলেন, পাকিস্তান যেভাবে কথা বলে, সেই ভাষায় কেন রানা দাশগুপ্ত কথা বলছেন? গত রবিবার ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা (এবিপি) গ্রুপের মালিকানাধীন এবিপি আনন্দ লাইভের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সংগঠনের সচিব তথা বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, মৌলবাদীরা এবং জামায়াত বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের অস্তিত্ব মুছে দিতে চাইছে। তাই তাঁরা ভারতের সাহায্য চাইছেন। ভারতের অধিকাংশ মানুষ হিন্দু। তাই তাঁরা আশা করেন, ভারত তাঁদের সাহায্য করবে।
×