ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ রাজধানীসহ সারাদেশে ১৪ দলের মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৯ জুন ২০১৬

আজ রাজধানীসহ সারাদেশে ১৪ দলের মানববন্ধন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাজধানীসহ সারাদেশে আজ রবিবার এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। বিএনপি-জামায়াত জোটের অব্যাহত গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জঙ্গীবাদী তৎপরতা এবং দেশের শান্তি, গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন বিরোধী অপতৎপরতা ও চক্রান্তের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগরসহ দেশের সকল বিভাগীয়, জেলা-উপজেলা সদরে একযোগে বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত মানববন্ধনে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামিয়ে মানবপ্রাচীর সৃষ্টি করার টার্গেট করেছে কেন্দ্রীয় ১৪ দল। মানববন্ধনের মাধ্যমে সারাদেশে গণজাগরণ সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে আদর্শিক এ জোটটির। সংগঠনগুলোর প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ নিয়ে মিছিলসহ রাজপথে দাঁড়াতে। কর্মসূচীতে পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার ছাড়াও বাদ্য-বাজনা থাকবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম মানববন্ধনে যথাসময়ে ও যথাস্থানে ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তি, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, পেশাজীবী, সংস্কৃতিসেবী, শ্রমিক, কৃষক, নারী, ছাত্র, যুবক, তরুণ সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ব্যাপকভাবে শামিল হবার আহ্বান জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রত্যক্ষ মদদে জঙ্গী-সন্ত্রাসী এবং রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী অশুভ শক্তিগুলো দেশব্যাপী গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপতৎপতা চালাচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, পাবনা, নাটোর, ঝিনাইদহ, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছুসংখ্যক শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী নিরীহ মানুষ, ধর্মীয় যাজক ও পুরোহিতকে কাপুরুষের ন্যায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করা, সর্বোপরি একটি নির্বাচিত বৈধ সরকারকে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতাচ্যুত করার হীন ষড়যন্ত্রে বিএনপি-জামায়াত জোট ও তাদের ছত্রছায়া, পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গী-সন্ত্রাসীরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। দেশ বিরোধী এই চিহ্নিত গোষ্ঠী বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রয়াসকে বানচাল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধকে ধূলিসাত, গণতন্ত্র, সামাজিক সুস্থিতি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংস করে সারাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। ১৪ দলের বিবৃতিতে বলা হয়, অতীতেও বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানো এবং ২০১৫ সালে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ-হরতালের নামে সারাদেশে অগণিত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল। লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পদ ধ্বংসের ন্যায় মনুষ্যবিবর্জিত বর্বরোচিত কর্মকা- চালিয়েছে। কিন্তু তাদের সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে। এখন তারা কৌশল বদলিয়ে গুপ্তহত্যা ও চোরাগুপ্তা আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী গর্বিত বাঙালী জাতি এই হত্যা, সন্ত্রাস, চক্রান্ত অতীতের ন্যায় এবারও পরাভূত করবে। ঢাকায় যেসব স্পটে মানববন্ধন ॥ এক ঘণ্টার এ মানববন্ধনকালে রাজধানীর গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা পর্যন্ত ১৪টি স্পটে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এসব স্পট হচ্ছে গাবতলী-টেকনিক্যাল-শ্যামলী, শ্যামলী-আসাদ গেট-ধানম-ি ২৭ নম্বর সড়ক, ২৭ নম্বর সড়ক-রাসেল স্কোয়ার, রাসেল স্কোয়ার-পান্থপথ- বসুন্ধরা মার্কেট-সোনারগাঁও হোটেল, সোনারগাঁও হোটেল-বাংলামোটর, বাংলামোটর-শিশু পার্ক, শিশু পার্ক-মৎস্য ভবন, মৎস্যভবন-জাতীয় প্রেসক্লাব, জাতীয় প্রেসক্লাব-পল্টন মোড়, পল্টন মোড় -শহীদ নূর হোসেন স্কোয়ার, শহীদ নূর হোসেন স্কোয়ার- বঙ্গবন্ধুর এ্যাভিনিউ- ইত্তেফাক মোড়, ইত্তেফাক মোড়-সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এবং সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড-যাত্রাবাড়ী মোড়। গাবতলী থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত এই ১৪টি স্পটেই আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন। মানববন্ধন সফল করে দেখিয়ে দিতে হবে জনগণ ১৪ দলের সঙ্গে আছে- ১৪ দল নেতারা ॥ এদিকে আজকের মানববন্ধন সফল করতে শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয় কমিটির প্রস্তুতি সভায় মানববন্ধন কমসূচী সর্বাত্মক সফল করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১৪ দল নেতারা বলেছেন, এ কর্মসূচীতে দলে দলে অংশ নিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে জনগণ ১৪ দলের সঙ্গে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে। এ সময় গুপ্তহত্যা নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, এসব ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতা বিএনপি-জামায়াত। আর জামায়াত-বিএনপির ছাত্র সংগঠন এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এসব ঘটনায় যারাই গ্রেফতার হচ্ছে, দেখা যাচ্ছে তারা এক সময় জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। কারা কারা এর পেছনে প্রত্যক্ষ মদদদাতা, কোন্ কোন্ নেতা অর্থের যোগানদাতা- সে তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে আছে। শীঘ্রই তা উদ্ঘাটন হবে। তিনি বলেন, রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধানের ওপর যখন একটা হুমকি এসেছে তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অর্থাৎ হামলাকারী ও গুপ্তহত্যাকারীরা এটিই চাচ্ছিল যেন বন্ধুরাষ্ট্র ভারত মনে করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপদ নয়। পশ্চিমা বিশ্বেও প্রচার চলছে- সবদিক থেকে উন্নয়ন করা হলেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়। এ উদ্দেশ্যেই হামলা করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দিপু মনি, ডাঃ শাহাদাৎ হোসেন, মীর হোসাইন আখতার, হাজেরা সুলতানা, এস এম কামাল হোসেন ও সাদেক খান।
×