ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মিউচুয়াল ফান্ডে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ১৯ জুন ২০১৬

মিউচুয়াল ফান্ডে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের পুঁজিবাজারে মন্দাবস্থায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দর হারাতে থাকার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগে ঝুঁকছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে তালিকাভুক্ত ৩৩ মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ৬০ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানির শেয়ার কিনে লোকসানের চেয়ে স্থিতিশীল বিনিয়োগ হিসেবে মিউচুয়াল ফান্ডকেই বেছে নিচ্ছেন তারা। এমনকি মিউচুয়াল ফান্ডগুলো নিজেও অন্য মিউচুয়াল ফান্ড কিনে রাখছে। আইসিবি সিরিজের মিউচুয়াল ফান্ড এবং সদ্য অবসায়িত এইমস প্রথম ও গ্রামীণ ওয়ান স্কিম-১ মিউচুয়াল ফান্ড বাদে বাকি ৩৩টিতে গত বছরের জুন শেষে অভিহিত মূল্যে বিনিয়োগ ছিল ১ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। বর্তমানে তা ৬০ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ১৩৬ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ডে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল গত বছরের জুনে ২৯ শতাংশ। এখন তা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৪৬ শতাংশ। দুই স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই ও সিএসই) থেকে তালিকাভুক্ত মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর মাসিক শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্যগুলোতে বাড়লেও আইসিবি তৃতীয় এনআরবি, আইএফআইএল ইসলামিক, ফিনিক্স ফাইন্যান্স প্রথম, প্রাইম ব্যাংক আইসিবি প্রথম এবং প্রথম প্রাইম ফাইন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ডে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ফান্ডগুলোর আকারের তুলনায় পৌনে ৩ শতাংশ থেকে পৌনে ২৩ শতাংশ কমেছে। বাকি ফান্ডগুলোতে বিনিয়োগ বেড়েছে ফান্ডগুলোর আকারের তুলনায় ১ শতাংশ থেকে সাড়ে ৪৭ শতাংশ। ফান্ডের আকার বিবেচনায় এ সময় সর্বাধিক সাড়ে ৪৭ শতাংশ বিনিয়োগ বেড়েছে এলআর গ্লোবাল প্রথম মিউচুয়াল ফান্ডে। গত বছরের জুনে ৩১১ কোটি টাকা আকারের এ ফান্ডটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল সোয়া ৩০ শতাংশ। বর্তমানে তা প্রায় ৭৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এসইএমএল লেকচার ইক্যুয়িটি ম্যানেজমেন্ট নামক মিউচুয়াল ফান্ডের প্রায় ৯০ শতাংশ ইউনিট এখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দখলে। এক বছর আগে ৫০ কোটি টাকা আকারে এ ফান্ডটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৪৯ শতাংশ। বর্তমানে ফান্ড আকারের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ইউনিট প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ধারণ করছে, এমন ফান্ড হলো- ভিএএমএল প্রথম এলআর গ্লোবাল প্রথম, এক্সিম ব্যাংক প্রথম, ইবিএল এনআরবি, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক প্রথম এবং এনসিসি ব্যাংক প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড। ফান্ড আকারের ৫০ শতাংশের বেশি ইউনিট প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ধারণ করছেন এমন ফান্ড হলো- মার্কেন্টাইল ব্যাংক প্রথম, এবি ব্যাংক প্রথম, গ্রিনডেল্টা, সাউথইস্ট ব্যাংক প্রথম এবং এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড। এছাড়া আইসিবি প্রথম এনআরবি, আইসিবি এএমসিএল প্রথম এবং ইবিএল প্রথম মিউচুয়াল ফান্ডে গত বছরের জুনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল শূন্য। এখন তা যথাক্রমে সোয়া ২৮ শতাংশ, প্রায় ২২ শতাংশ এবং সাড়ে ২৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্চেন্ট ব্যাংকের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, বিনিয়োগকারীরা গত কিছুদিন ধরেই লোকসানে রয়েছেন। তাই স্থিতিশীল বিনিয়োগ হিসেবে তারা এখন মিউচুয়াল ফান্ডের দিকে ঝুঁকছেন। কারণ বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডের দরই এখন ৫-৬ টাকায় রয়েছে। বছর শেষে প্রতিষ্ঠানগুলো নগদ লভ্যাংশ দিবে। এছাড়া আগামীতে অবসায়ন হলেও এখনকার দরের চেয়ে দুই- থেকে তিনগুণ অর্থ পাবেন। তাই অনেকেই এখন মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি আলাদাভাবে আকৃষ্ট হচ্ছেন।
×