ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

টাইব্রেকারে জামালকে হারিয়ে শেষ চারে আরামবাগ

প্রকাশিত: ০৭:০২, ১৮ জুন ২০১৬

টাইব্রেকারে জামালকে হারিয়ে শেষ চারে আরামবাগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত আসর তো বটেই, টানা দুই আসরের চ্যাম্পিয়নদের হারানো চাট্টিখানি কথা নয়। আর এই অসম্ভব কাজটি করে দেখালো আন্ডারডগ একটি দল। শুক্রবার ‘ওয়ালটন ফেডারেশন কাপ’ ফুটবল আসরের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডকে হারিয়েছে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও পরে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে স্কোরলাইন ২-২ হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেও ৪-৪ গোলের সমতা হলে টাইব্রেকারের দ্বিতীয় পর্ব সাডেন ডেথে গিয়ে খেলার ফলের নিষ্পত্তি হয়। তাতে ৫-৪ গোলে জিতে উল্লাসে ফেটে পড়ে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। টাইব্রেকারে গোল করেন আরামবাগের ইসা ইউসুফ, সাজ্জাদুজ্জামান পলাশ, আব্দুল হামিদ, কেস্টার এ্যাকন এবং মনসুর আমিন। গোল মিস করেন ইয়োকো স্যামনিক। পক্ষান্তরে জামালের হয়ে গোল করেন এমেকা ডার্লিংটন, ওয়েডসন এ্যানসেলমে, ইয়াসিন খান এবং ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে। গোল মিস করেন এনামুল হক এবং কেষ্ট কুমার বোস। গ্রুপ পর্বে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালের শুরুটা হয়েছিল ৬-২ গোলে বারিধারাকে হারিয়ে। অপরদিকে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ গ্রুপে ১-০ গোলে ঐতিহ্যবাহী আবাহনীকে হারিয়ে দিয়ে চমক দেখিয়েছিল। সেই চমক তারা অব্যাহত রাখলো বর্তমান শিরোপাধারী জামালকে হারিয়েও। ম্যাচের শুরু থেকেই জামালকে চেপে ধরে ‘রাইজিং স্ট্রেন্থ’ খ্যাত আরামবাগ। কোনমতে সেগুলো সামাল দিয়ে পাল্টা আক্রমণে যায় ‘বেঙ্গল ইয়োলোস’ খ্যাত জামাল। ম্যাচের প্রথম গোলও আদায় করে নেয় তারা। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট দল শেখ জামাল। অন্য দলগুলোর চেয়ে গোল স্কোরিংয়ে জামালই এগিয়ে। কারণ তাদের ওয়েডসন, এমেকা আর ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে। জামালের এই বিদেশী ফুটবলাররাই যে কোন ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। ২৩ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে দলীয় অধিনায়ক হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমের পাস বক্সে রিসিভ করে উঁচু শটে লক্ষ্যভেদ করে জামালকে এগিয়ে দেন ডিফেন্ডার মোহাম্মদ লিংকন (১-০)। ইনজুরি টাইমে (প্রেসবক্সে এক সাংবাদিক একে মজা করে অভিহিত করেছেন ‘আহত সময়’ নামে!) আরও একবার আরামবাগের জালে বল পাঠায় শফিকুল ইসলাম মানিকের শিষ্যরা। ওয়েডসন মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে ছুটে যান পোস্টের দিকে। তাকে থামাতে পেছনে ছিলেন আরামবাগের ঘানাইয়ান ডিফেন্ডার ইসাহ ইউসুফ। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করেও ইসা থামাতে পারেননি ওয়েডসনকে। আগুয়ান গোলরক্ষক-অধিনায়ক মিতুল হাসানের পাশ দিয়ে জোরালো শটে বল জড়িয়ে দেন জালে (২-০)। ৪৬ মিনিটে জামালের বক্সে ঢুকে শট নেন আরামবাগের ফরোয়ার্ড আবু সুফিয়ান। কিন্তু জামালের গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেলের গায়ে লেগে বল পোস্টে না ঢুকে চলে যায় মাঠের বাইরে। তারপরই হঠাৎ বৃষ্টি এবং সেই সঙ্গে হঠাৎ গোলও! ম্যাচের তখন ৬১ মিনিট। বাঁ প্রান্ত থেকে আবু সুফিয়ান সুফিলের ক্রসে দর্শনীয় হেডে বল জালে পাঠান ক্যামেরুনের মিডফিল্ডার ইয়োকো স্যামনিক (১-২)। মজার ব্যাপারÑ গোলের সঙ্গে সঙ্গেই বৃষ্টি উধাও! ৬৯ মিনিটে আবারও গোল করে আরামবাগ। তবে এবার বৃষ্টি হয়নি! প্রায় মাঝ মাঠ থেকে সতীর্থ কেস্টার এ্যাকনকে বল দেন ইয়োকো স্যামনিক। বল জালে পাঠিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি করে গোল উদ্যাপন করেন কেস্টার এ্যাকন (২-২)। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচের ফলাফল ২-২ গোলে ড্র থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
×