ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থী ছিলেন জ্যোতি বসু, স্যার যদুনাথ সরকার, অক্ষয় কুমার মৈত্র

১৪৩ বছর ॥ রাজশাহী কলেজ

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৮ জুন ২০১৬

১৪৩ বছর ॥ রাজশাহী কলেজ

উত্তরাঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ রাজশাহী কলেজ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৪৩ বছরে হাজারো জ্ঞানী-গুণী এ বিদ্যাপীঠের আলোয় আলোকিত হয়ে এখন জোছনা ছড়াচ্ছেন দেশ-বিদেশে। আজ থেকে ১৪৩ বছর আগে ১৮৭৩ সালের ১ এপ্রিল মাত্র ৬ শিক্ষার্থী নিয়ে রাজশাহী শহরের প্রাণকেন্দ্রে যে বৃক্ষের বীজ বপন হয়েছিল, তা এখন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, কলেজটি শিক্ষা-দীক্ষায় ও প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিকতায় এ বছর জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিয়ে ‘দেশসেরা’ নির্বাচিত হয়েছে। প্রমত্তা পদ্মা নদীর তীরে ৩৫ একর জমির ওপর দাঁড়িয়ে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে যাচ্ছে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা-দীক্ষায়, শিল্প-সাহিত্যে, মননে-সৃজনে, বিজ্ঞানে-প্রযুক্তিতে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি অবাক করে দিয়েছে সবাইকে। বর্তমানে কলেজের এইচএসসিসহ ২৪টি বিভাগে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডিগ্রী পাস কোর্সে পড়ানো হয়। অধ্যয়ন করছে ২৭ হাজার শিক্ষার্থী। আর কর্মরত আছেন ২৪৮ শিক্ষক। রাজশাহী শহরে কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নওগাঁর দুবলহাটির রাজা হরনাথ রায় চৌধুরী ১৮৭২ সালে তাঁর জমিদারির একটি অংশ রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলকে দান করেন। তাঁরই অর্থানুকূল্যে ১৮৭৩ সালের পহেলা এপ্রিল এক মুসলিম ছাত্রসহ মোট ছয় ছাত্র নিয়ে কলেজিয়েট স্কুলের সঙ্গে রাজশাহী কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর সমমানের কোর্স চালু হয়। ১৮৭৮ সালে বিএ এবং মাস্টার্স কোর্স খোলার অনুমতি প্রদান করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিখ্যাত রাজনীতিবিদ জ্যোতি বসু, উপমহাদেশের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি স্যার যদুনাথ সরকার, বৈজ্ঞানিক প্রথায় ইতিহাসচর্চার পথিকৃৎ অন্যতম সাহিত্যিক অক্ষয় কুমার মৈত্র, সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান, জননেতা ও শিক্ষানুরাগী মাদার বখশ, বাংলাদেশের চার জাতীয় নেতার একজন এএইচএম কামারুজ্জামানের মতো বরেণ্য ব্যক্তিত্ব এ কলেজের ছাত্র ছিলেন। এ কলেজের সবুজ চত্বরে ছিল তাদের পদচারণা। একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজশাহী কলেজ ডিজিটাল করে নিয়েছে নিজেকে। কলেজের নিরাপত্তা বিধান করতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে সকল শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যে ওয়াই ফাই সুবিধা দেয়া হয়েছে। ৮৮টি শ্রেণীকক্ষকে মাল্টিমিডিয়ায় রূপান্তর করা হয়েছে। তার জন্য শিক্ষকদের দেয়া হয়েছে ৪৫০টি ল্যাপটপ। প্রত্যেক বিভাগে রয়েছে ব্রডব্যান্ডের ইন্টারনেট সংযোগ। কলেজের যাবতীয় তথ্য প্রদর্শনের জন্য প্রশাসন ভবনে লাগানো রয়েছে এলইডি সাইনবোর্ড। কলেজকে আধুনিকীকরণ ও শিক্ষাক্ষেত্রে আধুনিক এবং ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য বর্তমান অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বিভাগীয় ‘ইনোভেশন এ্যাওয়ার্ড-২০১৬’ লাভ করেছেন। Ñমামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী থেকে
×