ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফেরদৌসি খানম লাকী

‘নারী স্বাধীনতা এবং সনাতন মানসিকতা’

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ১৭ জুন ২০১৬

‘নারী স্বাধীনতা এবং সনাতন মানসিকতা’

আজ আমরা মুখে নারী স্বাধীনতার কথা বলি। কিন্তু মূলত নারী স্বাধীনতা কি তা আজও আমাদের কাছে স্পষ্ট? স্বাধীনতা মানেই মুক্তভাবে যা কিছু করার অধিকার কি? নাকি যা ভাল সুস্থ চেতনার কার্যক্রম তা লক্ষ্য করে এগিয়ে যাওয়া? এটাকে অনেকে গুলিয়ে ফেলেন। অনেকে মনে করেন স্বাধীনতা মানেই তো স্বাধীনতা। যা খুশি করার অধিকার। কিংবা যেমন খুশি তেমনভাবে চলা। সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় বোধের নিয়মনীতিগুলো আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। উপেক্ষা করলে বরং নিজেরই ক্ষতি। যা কিছু ভাল তা আমাদের গ্রহণ করতে হবে আর তার অন্তরায় তা অবশ্যই বর্জনীয়। আজ অনেকেই ‘নারী স্বাধীনতার’ সঙ্গে ‘সনাতন’ অনেক অনেক নিয়মনীতি বা চলার বিষয়কে গুলিয়ে ফেলেন। অথচ বুঝেন না যে, সনাতন যে নিয়মগুলো আমাদের শিকড়ে প্রোথিত তা কখনও উপেক্ষা করার নয়। নারী স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচারিতা নয়। নিজের চরিত্রে, পোশাক পরিচ্ছদ, কথাবার্তা সনাতনের ছাপ থাকা অন্যায় নয়। বরং উগ্র আধুনিকতা, যা আমাদের সমাজ সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যহীন তেমনভাবে চলাই নারী স্বাধীনতার অপব্যবহার বলে মনে করি। একজন নারীকে বুঝতে হবে আমি কে? আমার লক্ষ্য কি? কি করে একজন পুরুষের পাশাপাশি সসম্মানে কাজ করে নিজের দক্ষতা অর্জন এবং নিজের যোগ্যতায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় তা ঠিক করা। অনেক সনাতন মানসিকতা লালন করা নারীও ছিলেন এ সমাজে মাথা উঁচু করে। কিন্তু উগ্র আধুনিকতা তথা নারী স্বাধীনতায় অপব্যবহারকারীগণ আজও তাদের আসন স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারেননি। আজও তাই প্রথমত নারীকে বুঝতে হবে স্বাধীনতা কি? সেটা সনাতন মানসিকতাসম্পন্ন নারীই হোন কিংবা উগ্র আধুনিকতাসম্পন্ন নারীই হোন। আমি বুঝি নারী স্বাধীনতা অর্থ হলো নারীর নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকা। নিজেকে শালীনভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে সমাজের সকলের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া। আর এই দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজে সনাতন কিংবা আধুনিক এ দুটো যুগ হতেই কল্যাণমূলক, অর্থবহ নীতিকে গ্রহণ করে সমানতালে এগিয়ে যাওয়াই নারী স্বাধীনতার তথা নারী অধিকারের মূলমন্ত্র নিহিত। আমি চাই প্রতিটি নারীই সময় নয় কিংবা যুগ নয় নিজের স্বাধীনতা কিংবা অধিকার যাই বলেন সেটা সম্বন্ধে সচেতন হবেন তবেই না আমাদের ‘স্বাধীনতা’ অর্থবহ হবে।
×