ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

তিন রমণীর ক্বাসিদা- কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্মরণানুষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১৭ জুন ২০১৬

তিন রমণীর ক্বাসিদা- কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্মরণানুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত শতকের আশির দশকে তিন রমণীর ক্বাসিদা শীর্ষক কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন খোন্দকার আশরাফ হোসেন। পরবর্তীতে আরও পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন এই কবি। কবি পরিচয়ের বাইরে তাঁর আরেক পরিচয় হচ্ছে শিক্ষাবিদ। পালন করেছেন জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব। মুক্তিযোদ্ধা এই কবি প্রাবন্ধিক, গবেষক ও অনুবাদক হিসেবেও রেখেছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর। লেখালেখি ও শিক্ষকতার পাশাপাশি সম্পাদনা করেছেন সাহিত্য পত্রিকা ‘একবিংশ’। মাত্র ৬৩ বছরের জীবনপ্রাপ্ত এই কবির তৃতীয় প্রয়াণবার্ষিকী ছিল বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষে বিকেলে অনুষ্ঠিত হলো ‘কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্মরণ অনুষ্ঠান-২০১৬’। কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ মিলনায়তনে এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্মরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করেন তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রশীদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজালুল বাসার। সভাপতিত্ব করেন কবি নাসির আহমেদ। এর আগে এ উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতায় কবি আশরাফ হোসেনের স্মরণে পরিবেশিত হয় সঙ্গীত। হাজারাবী রিপনের লেখা এবং দিলীপ বিশ্বাস ও মনা সেনের সুরারোপিত সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্বরুপা সুন্দর, সারথী সুন্দর, ফাতেমা আনিস মিতা, লায়লা ফেরদৌস, নওরীন সাজ্জাদ, সৈয়দ মোঃ জুবায়ের আতিকুল ইসলাম ও সামিয়া হাবিব তৃষা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। কবির জীবনী পাঠ করেন নার্গিস জাহান বানু। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতার পরেই শুরু হয় কবিকে নিয়ে স্মৃতিচারণ পর্ব। এ পর্বে স্মৃতিচারণ করেন কবি খলিল মজিদ, কবি কামরুল হাসান ও কবি কন্যা দীপিতা শাহরুখ । এরপরে শুরু হয় সেমিনার পর্ব। এ সেমিনার পর্বের শুরুতেই ‘খোন্দকার আশরাফ হোসেনের কবিতায় ঐতিহ্য চেতনা ও মুক্তিযুদ্ধ’ শীরোনামের প্রবন্ধ পাঠ করেন তেজগাঁও কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মাহবুব মোমতাজ। কবি ড. মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিতে এতে আলোচনায় অংশ নেন-লেখক ও বাংলা নাট্যবিষয়ক গবেষক আবু সাঈদ তুলু, আহমদ ফারুক প্রমুখ। অফিসার্স ক্লাবে রকমারি পোশাকের ঈদ মেলা ॥ চলছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। মাসব্যাপী আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধি শেষে আসবে খুশির ঈদ। আর এই আনন্দ উদ্্যাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে নতুন পোশাক। ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে ১০টি রোজা। সেই সুবাদে রাজধানীজুড়ে চোখে পড়ছে নগরবাসীর পোশাক সংগ্রহের বিপুল তৎপরতা। শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণি বিতাণগুলোয় এখন দৃশ্যমান ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। তবে অভিজাত শপিং কমপ্লেক্স, মার্কেট বা বিপণির বাইরেও ঈদ উপলক্ষে থাকে পোশাককেন্দ্রিক নানা আয়োজন। তেমনই একটি আয়োজন হচ্ছে রমনার বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত ঈদ মেলা। ক্লাবের মহিলা কমিটির আয়োজনে বৃহস্পতিবার থেকে এখানে শুরু হলো তিন দিনের এই মেলা। রকমারি পোশাকের সমাহার ঘটেছে এই মেলায়। বিশেষ করে তরুণী কিংবা নারীদের জন্য দেশী ও বিদেশী বাহারি নকশা ও বুননের কাপড়ে সেজেছে মেলাটি। আছে সালোয়ার-কামিজ, লেহেঙ্গা, স্কার্ট থেকে শুরু করে শাড়ি-গহনাসহ নারীদের ব্যবহার্য নানা পণ্য। সেই সঙ্গে মিলছে বিছানার চাদর, পর্দাসহ গৃহসজ্জার নানা পণ্য। শুধুমাত্র নারীদের পোশাক কিংবা গৃহস্থালি পণ্যই নয়, আছে পুরুষেরও পোশাক। পাঞ্জাবি-পায়জামা, শার্টের পাশাপাশি ছেলেদের মানিব্যাগ কিংবা বেল্টও বিক্রি হচ্ছে এই মেলায়। বৃহস্পতিবার সকালে তিন দিনব্যাপী এই ঈদ মেলার উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও অফিসার্স ক্লাবের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শফিউল আলম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অফিসার্স ক্লাব মহিলা কমিটির নেতৃবৃন্দ। মূলত দেশী বুটিক হাউস ও বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক ফ্যাশন হাউস অংশ নিয়েছে এ মেলায়। ক্লাব মিলনায়তনের একতলা ও দ্বিতীয় তলাজুড়ে চলছে মেলা। ৯০টির বেশি অনলাইননির্ভর পোশাক প্রতিষ্ঠান ও বুটিক হাউস অংশ নিয়েছে এ আয়োজনে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেরই স্বত্বাধিকারী হচ্ছেন নানা বয়সের নারী। প্রথম দিনেই বেশ ক্রেতার সমাগম দেখা গেছে মেলায়। সুতার কারুকাজে সৃজিত রকমারি নকশার নজরকাড়া জামদানি শাড়ি মিলছে এখানে। এছাড়াও আছে কাতান, মসলিন, শিফন, জর্জেটসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি। আর শাড়ির সঙ্গে মেলায় বৈচিত্র্য যোগ করেছে মেয়েদের নানা গড়নের সালোয়ার-কামিজ, স্কার্ট-টপস ইত্যাদি। নারীর পরিপূর্ণ সজ্জায় পোশাকের সঙ্গে চাই মানানসই গহনা। সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঈদ আনন্দের সঙ্গী এ আয়োজনে শামিল হয়েছে শুধুমাত্র গহনা বিকিকিনি করে এমন নানা প্রতিষ্ঠান। মেলা ঘুরে কথা হয় কালারস বাজার নামের একটি অনলাইন বুটিক শপের কর্ণধার সেলিনা আফরোজের সঙ্গে। এই নারী উদ্যোক্তা বলেন, নানা ধরনের থ্রি-পিসের সঙ্গে শিফন, সিল্ক, কাতান, মসলিন শাড়ি ঠাঁই পেয়েছে আমার স্টলে। তাই মেলা শুরুর দিন থেকেই ক্রেতাদের বেশ সাড়া পাচ্ছি। আর এখানে দোকানের ভাড়া লাগছে না তাই সহনীয় মূল্যে ক্রেতার কাছে তাঁর পছন্দের পোশাকটি তুলে দিতে পারছি। এছাড়া মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমার প্রতিষ্ঠানের পরিচিতিটাও বাড়ছে। ব্র্যান্ডটা সম্পর্কে সবাই জানতে পারছে। জুয়েলস কালেকশন নামে আরেকটি অনলাইন পোশাক প্রতিষ্ঠানের নারী উদ্যোক্তা ও ফ্যাশন ডিজাইনার আফ্রিনা আজিজ বলেন, মূলত সুতার কাজকে প্রাধান্য দিয়েছি পোশাকে। সেই সঙ্গে খেয়াল রেখেছি পোশাকটি যেন পরতে আরামদায়ক হয় এবং নকশার ক্ষেত্রে মেটাতে পারে যুগের চাহিদা। মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেও ক্রেতার নাগালে রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছি। টাচ অব ট্র্যাডিশন নামের একটি স্টলে মেয়েদের থ্রি-পিসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জুতা ও গহনা। এখানে ভারতের লখনৌ ও জয়পুরের সুতার কারুকার্যময় তরুণীদের সালোয়ার-কামিজ বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে সাত হাজার টাকায়। এ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আসমা আখতার বলেন, এ মেলায় জন্য নয় মূলত কেনার জন্যই আসেন ক্রেতারা। পোশাক ও গহনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে আমি রুচির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছি। এ কারণে কেউ একবার এখান থেকে পণ্য কিনলে পরবর্তীতে তাঁর স্থায়ী ক্রেতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিজওয়েল্ড নামের স্টলটি সেজেছে মেয়েদের ব্যাগ ও গহনা দিয়ে। যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিকৃত রকমারি নকশার ব্যাগ ও গহনা রয়েছে এখানে। ব্রেসলেট, ঝুমকা, কানের দুল, বালা, নেকলেসসহ নানা গহনার সমন্বয় ঘটেছে স্টলে। কথা হয় মেলায় আসা ধানম-ির বাসিন্দা ফারহানা রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন মার্কেটগুলোতে ব্যাপক ভিড়। ব্যাপক ক্রেতা সমাগম হওয়ায় শরীরের সঙ্গে শরীর লেগে যায় অবস্থা। সেক্ষেত্রে এই মেলাটি হচ্ছে বেশ প্রশস্ত জায়গায়। ভাল করে দেখার সুযোগ আছে। স্বস্তি নিয়ে ঘোরা যায়। এছাড়া রকমারি কাপড় ও গহনার সমন্বয় থাকায় পছন্দসই পণ্যটি পাওয়া যাচ্ছে। কাল শনিবার পর্যন্ত চলবে তিন দিনের এই মেলা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
×