ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিজেই রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করছে ॥ খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৭ জুন ২০১৬

সরকার নিজেই রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করছে ॥ খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার নিজেই রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সরকার বিদেশীদের সঙ্গে গোপন চুক্তি করে দেশের স্বার্থবিরোধী কাজে লিপ্ত। কিন্তু জনগণ এ ব্যাপারে কিছুই জানে না। তারা আবার অন্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে রাজনীতিবিদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব অভিযোগ করেন। খালেদা জিয়া বলেন, এ সরকার সবক্ষেত্রে ব্যর্থ, অযোগ্য, অথর্ব ও খুনী। তারা দেশের কোন সমস্যা সমাধান করতে পারছে না। দেশের প্রতি সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। কাজেই এ সরকার দিয়ে দেশ চলতে পারে না। আজ সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশটাকে বাঁচাতে হবে। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এদিকে, এলডিপির ইফতার মাহফিলে বিনা আমন্ত্রণে এসে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে দলটির দু’জন নেতাকে বেদম প্রহার করেছে ছাত্রদলের ক’জন কর্মী। ছাত্রদলকর্মীদের প্রহারে আহতরা হলেনÑ এলডিপির যুব সংগঠন গণতান্ত্রিক যুবদলের সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির এবং তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক সোহাগ হাসান। ছাত্রদলকর্মীদের মারধরে তাদের দু’জনেরই শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে গেছে। মনিরুজ্জামান মনির সাংবাদিকদের জানান, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল নিজেদের ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা পরিচয় দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে চায়। তাদের আমন্ত্রণপত্র দেখাতে বলা হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় মনিরের আরেক সহকর্মী সোহাগ এগিয়ে এলে ছাত্রদলকর্মীরা তার ওপরও চড়াও হয়। এতে দু’জনেরই শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে এলডিপির সিনিয়র নেতারা সেখানে গেলে ছাত্রদলের ওই কর্মীরা দ্রুত সরে পড়ে। এ ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করে এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদৎ হোসেন সেলিম মঞ্চে উঠে মাইকে বিষয়টির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ছোট্ট পরিসরে আমরা যাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি তারাই এসেছেন। কিন্তু আমন্ত্রিত অতিথির বাইরে এসে অন্য দলের নেতাকর্মী আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর করবেন, এটি মেনে নেয়া যায় না। এতে আমরা লজ্জিত এবং একই সঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা এটি আশা করিনি। খালেদা জিয়া বলেন, গুপ্তহত্যার সঙ্গে সরকারের লোকজন জড়িত। তাই কেউ ধরা পড়ছে না। আমরা সন্ত্রাস ও সহিংসতা চাই না। আমরা দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা চাচ্ছি। সন্ধ্যা ছয়টার পর খালেদা জিয়া ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে পৌঁছলে এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব) অলি আহমদের নেতৃত্বে দলের নেতারা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় খালেদা জিয়া এলডিপি নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ইফতার মাহফিলে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবদুল হালিম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এলডিপি মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ, ডেমোক্র্যাটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈফুদ্দিন আহমেদ মণি, জাতীয় পার্টির নেতা আহসান হাবীব লিংকন, মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান এএইচএম কামরুজ্জামান খান, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, জাগপার মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহদাৎ হোসেন সেলিম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আমমেদ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মজিবুর রহমান পেশওয়ারী প্রমুখ। ইফতার মাহফিলে বিএনপির অন্য নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের কেন্দ্রীয় নেতা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সেলিমা রহমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল হালিম, আবদুল্লাহ আল নোমান, ডাঃ জাহিদ হোসেন, এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ। আগামীকাল শনিবার মতিঝিলের পূর্বাণী হোটেলে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জাগপার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
×