ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গোপন প্রতিবেদনের তথ্য ॥ পেশাগত নৈতিকতা ভঙ্গের অভিযোগ

সিআইএ- মেডিক্যাল স্টাফদের নির্দেশনায় বন্দী নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৪:০২, ১৭ জুন ২০১৬

সিআইএ- মেডিক্যাল স্টাফদের নির্দেশনায় বন্দী নির্যাতন

যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ হামলার পরবর্তীতে আটক বন্দীদের ওপর নির্যাতন চালাতে সিআইএ মেডিক্যাল কর্মীরা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটির প্রকাশ করা ২০০৪ সালের একটি গোপন প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। খবর গার্ডিয়ান ও নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইনের। বন্দীদের নির্যাতন চালানোর জন্য সিআইএ মেডিকেল স্টাফরা যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তার মধ্যে ছিল বন্দীদের ঘুমাতে না দেয়া, ঠিকমতো খেতে না দেয়া, ওয়াটার বোর্ডিং বা পানিতে ডুবে যাওয়ার অনুভূতি তৈরি হয় এমন প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা এবং ছোট বাক্সে বন্দী অবস্থায় রাখা। অফিস অব মেডিক্যাল স্টাফরা (ওএমএস) বন্দী নির্যাতনের এসব নির্দেশনা তৈরি করেন। এগুলো ছাড়া বন্দীদের জোরপূর্বক খাওয়ানো ও যৌন নির্যাতনের ঘটনাও ঘটত বলে জানা গেছে। সিআইএ বন্দীদের ওপর যেসব নির্যাতনমূলক পদ্ধতি প্রয়োগ করছে ২০১৪ সালে সিনেটের একটি প্রতিবেদনে তা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গোয়েন্দা সংস্থাটির চিকিৎসকরা নির্মম নির্যাতনমূলক কৌশলগুলো উদ্ভাবন করেন। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর চিকিৎসকরা পেশাগত নৈতিকতা ভঙ্গ করছেন বলে মানবাধিকার গ্রুপগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। ফিজিশিয়ান ফর হিউম্যান রাইটসের চিকিৎসক ভিনসেন্ট লাকোপিনো বলেন, প্রতিবেদনে উল্লিখিত নির্দেশনাগুলো মেডিকেল ও মানসিক চিকিৎসা পেশার জন্য রীতিমতো অবমাননাকর এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতের পেশাদার যে কারও জন্য প্রতিবেদনটি লজ্জাজনক। ২০০৪ সালের ওই প্রতিবেদনে বন্দীদের ছোট বাক্সের মধ্যে বন্দী করে নির্যাতনের যে কৌশলের কথা বলা হয়েছে তার পরিকল্পনাকারী ছিলেন সিআইএর চুক্তিবদ্ধ সাইকোলজিস্ট জেমস মিচেল ও ব্রুস জেসন। ‘কনফাইনমেন্ট বক্স’ নামের ওই কৌশল তারা জিরো ডার্ক থার্টি নামের একটি চলচ্চিত্র থেকে পান বলে জানিয়েছিলেন। ছোট ছোট এসব বাক্সে একজন বন্দীকে ঢুকিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাখা হতো। সিআইএ পাইলট নির্যাতন প্রকল্পের প্রথম শিকার হয়েছিলেন আবু জুবায়দা নামে এক বন্দী। তাকে ২০০২ সালে আটক করা হয়েছিল। কফিন আকৃতির বাক্সে তাকে বিভিন্ন সময় মোট ২৬৬ ঘণ্টা বা ১১ দিন আটক রেখেছিল সিআইএ। জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যুদ্ধবন্দীদের ‘ক্লোজ কনফাইনমেন্টক’ বা বাক্সে বন্দী করে রাখা যায় না। বুশ প্রশাসন সবসময়ই বন্দীকে এভাবে আটক রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছে। পদ্ধতিটি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কার্যকর নয় বলেও সিনেট রিপোর্টে বলা হয়েছে। ওএমএস প্রস্তাবিত পদ্ধতিগুলো ছিল বন্দীদের যন্ত্রণাক্লিষ্ট করার কৌশল।
×