ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে বাজেট আলোচনা

বিএনপি নেত্রী এখন সংসদে নেই রাজপথেও নেই

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ১৬ জুন ২০১৬

বিএনপি নেত্রী এখন সংসদে নেই রাজপথেও নেই

সংসদ রিপোর্টার ॥ সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরা প্রস্তাবিত বাজেটকে যুগোপযোগী বললেও পরোক্ষ কর আরোপের ফলে দেশের গরিব মানুষরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে উল্লেখ করেছেন। গুপ্তহত্যা বন্ধে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাঁরা বলেন, নির্বাচন বর্জনের ভুল রাজনীতির কারণে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এখন সংসদেও নেই, রাজপথেও নেই। সংসদ-রাজপথের পরিবর্তে এখন বিদেশীদের কাছে ধর্না দিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছেন, দেশে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছেন। কিন্তু তাঁর এই ষড়যন্ত্রও ব্যর্থ হবে। হত্যা-সন্ত্রাস ও ইসরাইলের সঙ্গে হাত মেলানো খালেদা জিয়া ও তাদের দোসরদের দেশের জনগণ আর কোনদিনই মেনে নেবে না। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বুধবার সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন সরকারী দলের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, আবদুল হাই, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, উম্মে রাজিয়া কাজল, তানভীর ইমাম, ফাতেমা তুজ জোহরা, ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, ইয়াছিন আলী, মমতাজ বেগম, ফরিদুল হক খান, জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, মুনিম চৌধুরী ও মামুনুর রশীদ। আলোচনা শেষে সংসদ অধিবেশন আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, এ দেশ ক্রমাগতভাবে আঞ্চলিক বৈষম্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজস্ব করের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতি গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, বছরে ৭৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। এটা বন্ধ না করতে পারলে বাজেটের লক্ষ্য পূরণ হবে না। যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে তা দিয়ে দুটি বাজটে দেয়া যায়। আর বর্তমান বাজটে আরোপিত পরোক্ষ কর বরং গরিব মানুষকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে। অভিজাত এলাকায় বাসাবাড়ির বদলে শিল্পাঞ্চলে গ্যাস দিলে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সরকারী দলের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর নামকরণ ‘শেখ হাসিনা’র নামে করার দাবি জানিয়ে বলেন, আশা করি জাতি এটা মেনে নেবে। কারণ পদ্মা সেতু নিয়ে যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী তা মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু করছেন। যাতে শেখ হাসিনার নাম দেশের মানুষ হাজার বছর মনে রাখে সেজন্য সেতুটির নামকরণ তাঁর নামেই করা হোক। সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের গুপ্তহত্যার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক সংসদ সদস্যরা যাতে নিজ নিজ এলাকায় যোগাযোগ বৃদ্ধি করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেন তা হলে এসব গুপ্তহত্যা বন্ধ হবেই হবে। জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম রাষ্ট্রীয় লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিসংখ্যানের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এখানে অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা যদি ফিরিয়ে আনা না যায়, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি কোনদিন অগ্রসর হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৩৭ হাজার কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে। এভাবে যদি দিয়েই দিয়ে থাকেন তাহলে তো হবে না। তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনা এবং অর্থমন্ত্রণলয়Ñ এই দুই মন্ত্রণালয় একজন মন্ত্রী চালালে ভাল হয়, না হলে ঝগড়াঝাটি হয়। জাতীয় নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ সাহেবের সময়ও এই দুই মন্ত্রণালয় একজনের হাতে ছিল। সাবেক অর্থমন্ত্রী এস এম কিবরিয়া সাহেবের সময়ও একজনের হাতে ছিল। এখন দরকার ১৯৭২ সালের আদলে একটি শক্তিশালী পরিকল্পনা কমিশন। সরকারী দলের আবদুল হাই বলেন, নির্বাচনে না এসে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এখন সংসদেও নেই, রাজপথেও নেই। দেশে কিছু করতে না পেরে জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি নেত্রী এখন বিদেশের কুচক্রীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছেন, সরকার উৎখাতের স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু তাঁর এই স্বপ্ন কোনদিন সফল হবে না। বরং সেদিন আর বেশি দূরে নয়, রাজনীতি ছেড়ে এসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিদেশেই চলে যেতে হবে।
×