নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, ১৫ জুন ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দায়ী চিকিৎসকদের বিচার দাবি করেছেন কুমিল্লার প্রতিবাদী ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। বুধবার দুপুরে ‘জাস্টিস ফর তনু’ ব্যানারে স্থানীয় লোকজন কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করে।
মানববন্ধনে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে বক্তব্য রাখেন গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক খায়রুল আনাম রায়হান এবং তনুর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন রুবেল। তনুর ভাই বলেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান ডাঃ কামদা প্রসাদ সাহা পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর কারণ গোপন রেখে উল্টো তনুর চরিত্র হননের ঘৃণ্য চেষ্টার কৌশল হিসেবে ধর্ষণের বিষয় এড়িয়ে গিয়ে ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্সে’র তথ্য উল্লেখ করেন। তিনি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান।
গণজাগরণ মঞ্চের খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, যে চিকিৎসকরা তনুর মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর কারণ খুঁজে পাননি এমন চিকিৎসকদের এখনই কুমেকের ফরেনসিক বিভাগ থেকে প্রত্যাহারসহ তদন্ত করে তাদের আসল মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। মানববন্ধনে বক্তারা আরও জানান, সেনানিবাসের মতো একটি সুরক্ষিত এলকায় এমন নৃশংস হত্যাকা-ের বিচার না হলে দেশের আইনের প্রতি মানুষের কোন আস্থা থাকবে না। বক্তারা অবিলম্বে তনুর ঘাতকদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার এবং বিচাররের আওতায় আনার জন্য সিআইডির প্রতি আহ্বান জানান। আগামী ২০ জুন তনু হত্যার ৯০ দিন অতিবাহিত হবে, এ সময়ের মধ্যে ঘাতকরা গ্রেফতার না হলে কুমিল্লা পূবালী চত্বরে সমাবেশ থেকে আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলে মানববন্ধনে কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।
গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতর একটি ঝোপে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। গত ৪ এপ্রিল ফরেনসিক বিভাগ থেকে পাওয়া প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তার মৃত্যুর কারণ নির্ণয় না করেই প্রতিবেদন দেয়া হয়। এছাড়াও গত ৩০ মার্চ কবর থেকে তনুর মরদেহ উত্তোলনের পর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গত ১১ জুন মৃত্যুর কারণ নির্ণয় ছাড়াই দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে ধর্ষণের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তনুর মৃত্যুর আগে তার সঙ্গে ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স’ করার তথ্য প্রতিবেদন উল্লেখ করায় এ নিয়ে দেশব্যাপী নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তনুর বাবা-মাও দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে এর সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকদের বিচার দাবি করেছেন।