ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২০ ওষুধ কোম্পানির উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ আপীলে বহাল

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৬ জুন ২০১৬

২০ ওষুধ কোম্পানির উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ আপীলে বহাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানসম্মত ওষুধ প্রস্তুত না করায় ২০ দেশী ওষুধ কোম্পানির উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। একই সঙ্গে ১৮ আগস্টের মধ্যে হাইকোর্টের জারি করা রুল নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে তিনটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির করা আবেদন খারিজ করে বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপীল বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। আদালত এ সময় বলেন, ওরস্যালাইন প্রোপার না হলে মানুষ মারা যাবে। শুনানিতে ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের আইনজীবী সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, হাইকোর্ট উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। অথচ সরকার কোম্পানিগুলোকে একটি শোকজ দিয়েছে। এটা একটা প্রসেসের মধ্যে আছে। ওখানে লাইসেন্স ক্যানসেলের কথা উল্লেখ আছে। এ সময় আদালত বলে, লাইসেন্স ক্যানসেল আর উৎপাদন বন্ধের মধ্যে তফাৎ কি? জবাবে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, লেট আস সি। সরকার কোম্পানিগুলোকে একটি শোকজ দিয়েছে। এটা একটা প্রসেসের মধ্যে আছে। আদালত বলে, এটা (ওষুধ) এমন একটা জিনিস। যেটা মানুষের ... জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা শুধু ওরস্যালাইন উৎপাদন করি। জবাবে আদালত বলে, এটা তো আরও বেশি সমস্যা। ওরস্যালাইন প্রোপার না হলে মানুষ মারা যাবে। শুনানির এক পর্যায়ে সর্বোচ্চ আদালত বলে, ওরস্যালাইন প্রোপার না হলে মানুষ মারা যাবে। এখন আপনারা হাইকোর্টে যান পার্টি হয়ে শুনানি করেন। আপনাদের শোকজ করার আগে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া উচিত ছিল। ওষুধ কোম্পানি তো অনেক। শুধু আপনারা আসছেন, আর কেউ তো আসেনি। জবাবে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আরও অনেকে এসেছেন। আদালত বলে, যান, হাইকোর্টে যান। ওখানে রুল শুনানি করেন। এরপর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগ ১৮ আগস্টের মধ্যে হাইকোর্টে এ মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। আদালতে বুধবার আবেদনকারী ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের পক্ষে সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ আলী ও নূরুল ইসলাম সুজন এবং এমএসটি ফার্মার পক্ষে সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল শুনানি করেন। রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আজমালুল হোসেন কিউসি ও মনজিল মোরসেদ। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, এর ফলে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রয়েছে। একই সঙ্গে হাইকোর্টের জারি করা রুল আগামী ১৮ আগস্টের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। উল্লেখ্য, গত ৭ জুন হাইকোর্ট এক আদেশে জিএমপি নীতিমালা অনুসরণ করে ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ হওয়ায় ২০ কোম্পানিকে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেয়। এছাড়া আরও ১৪ কোম্পানির সব ধরনের এন্টিবায়োটিক উৎপাদনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডে ও এমএসটি ফার্মা। শুনানি শেষে আপীল বিভাগ উপরোক্ত আদেশ দেন। সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি এসব ওষুধ কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন ও লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করে। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেনি সরকার। এ পরিস্থিতিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন ‘হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের’ পে এ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রিটে বলা হয়, বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি দেশের ৮৪টি ওষুধ কারখানা পরিদর্শন করেন। এর মধ্যে ছিল নতুন ১৫ এবং পুরনো ৬৯ প্রতিষ্ঠান। প্রতিবেদনে ২০ কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন ও লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
×